এক্সপ্লোর
Advertisement
১৯৮৪-তে ২টি আসন জয় থেকে পরপর ২ বার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা- দেখে নিন, কেমন ছিল বিজেপির যাত্রাপথ
বর্তমান বিজেপির প্রকৃত প্রতিষ্ঠা দিবস ১৯৮০-র ৬ এপ্রিল। প্রথমবার লোকসভা ভোটে লড়ে তারা ১৯৮৪-তে, জেতে ২টি আসন। এরপরই তৎকালীন দলীয় সভাপতি লালকৃষ্ণ আডবাণী দলের মূল আদর্শ হিসেবে বেছে নেন হিন্দুত্ববাদকে।
নয়াদিল্লি: সেটা ১৯৮৪। তখনও দেশে দেখা দেয়নি রাম মন্দির ঝড়। উল্টে ইন্দিরা গাঁধীর হত্যার জেরে ব্যাপক সহানুভূতির হাওয়ায় ভর করে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। সে সময় ২টি আসন পেয়ে লোকসভায় খাতা খুলেছিল বিজেপি। আর তার ৩৫ বছর পর সম্পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আজ তারা দেশের সিংহাসনে। একবার নয়, পরপর দুবার। কেমন ছিল এই উত্তরণের পথ? চলুন, দেখে নিই।
ভারতীয় জনতা পার্টির জন্ম জন সঙ্ঘ থেকে। জন সঙ্ঘ ১৯৭৭-এ জনতা পার্টির সঙ্গে মিশে যায় কিন্তু ৩ বছর পর পৃথক হয়। বর্তমান বিজেপির প্রকৃত প্রতিষ্ঠা দিবস ১৯৮০-র ৬ এপ্রিল। প্রথমবার লোকসভা ভোটে লড়ে তারা ১৯৮৪-তে, জেতে ২টি আসন। এরপরই তৎকালীন দলীয় সভাপতি লালকৃষ্ণ আডবাণী দলের মূল আদর্শ হিসেবে বেছে নেন হিন্দুত্ববাদকে। তিনিই জনপ্রিয় করেন ছদ্ম ধর্ম নিরপেক্ষতা বা সিউডো সেকুলারিজম ও মুসলমান তোষণের মত শব্দ। গোটা দেশে বিজেপির গ্রহণযোগ্যতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
আদর্শগতভাবে বিজেপি অনুসরণ করে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘকে। ১৯৮৯-এ, দেশে রাম মন্দির আন্দোলন ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে, সেই হাওয়ায় ভর করে তারা জিতে নেয় ৮৫টি লোকসভা আসন। এর পরের বছরই আডবাণীর সেই ঐতিহাসিক রথযাত্রা। গোবলয়ের পার্টি বলে পরিচিত দলটির গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয় গোটা দেশে, ভিপি সিংহ সরকার পড়ে যাওয়ায় ১৯৯১-এ ফের হয় লোকসভা ভোট। বিজেপি এক লাফে ৮৫ থেকে পৌঁছে যায় ১২০-তে। একইভাবে বাড়ে ভোট শেয়ার, ১৯৮৪-র ৭.৪ শতাংশ তখন অতীত, ৭ বছরের মধ্যে তাদের ভোট শেয়ার ছুঁয়ে ফেলে ২০.১ শতাংশ।
এরপর ১৯৯৬। প্রথমবার একক বৃহত্তম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বিজেপি। ১৬১টি আসন জেতে তারা, সরকার গড়ার দাবি পেশ করে। প্রথমবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন অটলবিহারী বাজপেয়ী, সেই সরকার টিকেছিল মাত্র ১৩ দিন। এইচ ডি দেবেগৌড়া ও আই কে গুজরালের নেতৃত্বে কিছুদিন করে চলে দুটি মিলিজুলি সরকার। এরপর ফের ১৯৯৮-এ লোকসভা ভোট, ১৮২টি আসন জিতে ফের একক বৃহত্তম দল হয় বিজেপি। তৈরি হয় জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট বা ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স ওরফে এনডিএ। টেকে ১৩ মাস, মাত্র ১ ভোটে আস্থা ভোটে হেরে যায়।
১ বছর পর ফের হয় লোকসভা ভোট। এবার পুরো ৫ বছর টেকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। প্রধানমন্ত্রী হন বাজপেয়ী। কিন্তু ২০০৪-এ অপ্রত্যাশিত ভরাডুবি হয় তাদের, ক্ষমতা দখল করে ইউপিএ। ২০০৯-এও ক্ষমতায় ফেরে সনিয়া গাঁধী-মনমোহন সিংহ নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার। তখন বিজেপির অত্যন্ত দুরবস্থা, শরিকরা ছিটকে গিয়েছে এদিক ওদিক, কেউ কেউ হাত মিলিয়েছে এনডিএ-র সঙ্গে, রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছেন বাজপেয়ী, আডবাণীর মত এতদিনের পরিচিত প্রবীণ নেতাও দলকে এক রাখতে পারছেন না।
কিন্তু এই সময় ভারতীয় রাজনীতিতে উল্কার মত হয় নরেন্দ্র মোদীর উত্থান। ২০০২-এ গুজরাত দাঙ্গার জেরে গোটা দেশে বিতর্কিত এই রাজনীতিক হয়ে ওঠেন বিজেপির প্রধানতম মুখ। তাঁর নেতৃত্বে ২০১৪-য় একার জোরে ২৮২টি আসন জিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় ফেরে বিজেপি। দুর্দান্ত ফল করে জিতে নেয় গোবলয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তর প্রদেশ। এই সময় মোদী গুজরাত থেকে জাতীয় মঞ্চে নিয়ে আসেন তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহচর অমিত শাহকে। অমিত শাহ দলের জাতীয় সভাপতি হন, শুরু হয় মোদী-শাহ যুগ।
আর এখন এই মোদী-শাহ যুগল বিজেপিকে ফের আর একবার দেশের সিংহাসনে বসালেন। কংগ্রেসকে সরিয়ে এখন বিজেপিই ভারতীয় রাজনীতির ভরকেন্দ্র।
নির্বাচন ২০২8 (Elections) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
জেলার
জেলার
ব্যবসা-বাণিজ্যের
Advertisement