WB Election 2021: বারুণী মেলায় ঐক্যের বার্তা গাইঘাটার মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে
মমতাবালা ঠাকুর ও শান্তনু ঠাকুর দুজনেই নিজেদের সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি দাবি করে আসছেন। হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোটের মুখে বারুণী মেলাকে ঘিরে কিন্তু অন্য ছবি।
সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: ভোটের মুখে ঐক্যের বার্তা গাইঘাটার মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে। রাজনৈতিক দূরত্ব সরিয়ে রেখে তাঁর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে একযোগে বারুণী মেলা আয়োজনের বার্তা দিলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর। তৃণমূল প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশের এক সপ্তাহের মাথায় মমতাবালার এই নৈকট্য বার্তাকে ঘিরে মতুয়া রাজনীতিতে নতুন জল্পনা তৈরি হয়েছে।
তৃণমূল বনাম বিজেপি, জেঠিমা বনাম ভাইপো। রাজনীতির সাঁড়াশি হানায় অনেক দিনই আড়াআড়ি দুভাগ হয়ে গিয়েছে গাইঘাটার ঠাকুরনগরের মতুয়া ঠাকুরবাড়ি ৷ বারুণী মেলা হোক বা বড় মা-র শেষকৃত্য, মতুয়া ঠাকুরবাড়ির প্রতিটি অনুষ্ঠানেই দুই পরিবারের বিভাজন প্রকট হয়েছে। গড়ে উঠেছে দুটি আলাদা কমিটি। মমতাবালা ঠাকুর ও শান্তনু ঠাকুর দুজনেই নিজেদের সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি দাবি করে আসছেন। হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোটের মুখে বারুণী মেলাকে ঘিরে কিন্তু অন্য ছবি।
আরও পড়ুন: WB Elections 2021: 'বহিরাগত' ওমপ্রকাশ মিশ্রকে নাপসন্দ, তৃণমূল ছাড়ার হিড়িক শিলিগুড়িতে
প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ ও সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতা বালা ঠাকুর জানান, ‘‘আমরা চাই দুটি পরিবার মতুয়াদের স্বার্থে এক হয়ে ঠাকুরবাড়িতে মিলমিশ করে ভাল পরিবেশ তৈরি করে মেলা হোক ৷’’ বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর জানান, ‘‘এবছরও মেলা একসাথে করতে হবে। সবারই দায়িত্ব থাকছে ৷’’
৮ এপ্রিল থেকে বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে গাইঘাটায়। বিধানসভা ভোটের আগে যুযুধান দুই পরিবারের একসঙ্গে মেলা করার ডাককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। গাইঘাটায় এবার নরোত্তম বিশ্বাসকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।
গত রবিবার তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। এই অসন্তোষ প্রকাশের এক সপ্তাহের মাথায় মমতাবালা ঠাকুরের মুখে শোনা গেল বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে ঐক্য বজায় রেখে চলার বার্তা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, গাইঘাটার মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ, শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে মমতাবালা ঠাকুরের দূরত্ব কি তাহলে কমছে? দুই সংঘাধিপতির একসঙ্গে মেলার আয়োজনে কোথাও যেন তারই ইঙ্গিত দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। যদিও যে দুই রাজনৈতিক দলের ছায়ায় দ্বিখণ্ডিত হয়েছে মতুয়া পরিবার, তারা প্রকাশ্যে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ। বিজেপি নেতা ধ্যানেশ নারায়ণ গপহ বলেন, মেলা বরাবর একসঙ্গেই হয়। এটা হোক ৷ উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল কোঅর্ডিনেটর গোপাল শেঠ জানান, ‘‘মেলা তো বরাবর একসঙ্গেই হয়। এটার সঙ্গে কোনও ব্যাপার নেই ৷’’
এরাজ্যে ৫৭টি বিধানসভা আসনে নির্ণায়ক শক্তি মতুয়ারা। একুশের যুদ্ধের আগে বারুণী মেলাকে কেন্দ্র করে মতুয়া রাজনীতিতে নতুন কোনও রসায়ন তৈরি হয় কি না, এখন সেটাই দেখার।