WB Election 2021: বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতা চূড়ান্ত, জোটে সামিল হতে পারে ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টও
Left-Congress Alliance: জোটে আগ্রহী ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টকে ক’টি আসন ছাড়া হবে, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই সূত্রের খবর।
উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: এবার ভোটে ত্রিমুখী লড়াই হবে। আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করার পর আলিমুদ্দিনে পাশাপাশি বসে এই বার্তা দিল বাম-কংগ্রেস। তবে জোটে আগ্রহী ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টকে ক’টি আসন ছাড়া হবে, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই সূত্রের খবর। অন্যদিকে, ডিওয়াইএফআই নেতার মৃত্যুর প্রতিবাদে আজ নানা জায়গায় যৌথভাবে পথে নামে বাম ও কংগ্রেস।
এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘অপপ্রচার ব্যর্থ করে দিয়ে আমাদের মধ্যে আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছি।’
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘বাম কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ এবং আইএসএফ কে নিয়ে হবে জোট।’
২০১৬-এর নির্বাচনে দু’দল একসঙ্গে লড়লেও, আলিমুদ্দিনে অধীর কিংবা প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে বিমান বসুকে কখনও দেখা যায়নি। অথবা বিমান বসুর চেয়ার টেনে দিচ্ছেন অধীর, এই ছবিও দেখা যায়নি। বরং যখন অধীর ভাষণ দিচ্ছেন, তখন চায়ের দোকানে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল সীতারাম ইয়েচুরি, বৃন্দা কারাতদের, এবার ছবিটা কিন্তু বদলেছে।
চূড়ান্ত আসন সমঝোতা, জোটের বৈঠকে হৃদ্যতার ছবি। মঙ্গলবার দুপুর একটা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক হয় আলিমুদ্দিনে। বামেদের পক্ষে ছিলেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম। কংগ্রেসের তরফে অধীর চৌধুরী ছাড়াও ছিলেন আব্দুল মান্নান, নেপাল মাহাত, মনোজ চক্রবর্তীরা।
সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ১১০টিতে লড়বে। বাকি ১৮৪টি বামেদের জন্য। এছাড়াও, বৃহত্তর ফ্রন্টে থাকা পিডিএস, সিপিআইএমএল লিবারেশন, আরজেডি, এনসিপি-র মতো ছোটদলগুলিকে আসন দেওয়া নিয়েও ভাবনা চিন্তা চলছে।
সূত্রের দাবি, আব্বাস সিদ্দিকির দল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট বাম-কংগ্রেস জোটে থাকতে আগ্রহী। তবে ৭০টির বেশি আসনে তারা লড়তে চায়। সূত্রের দাবি, কংগ্রেস কোনওভাবেই মুর্শিদাবাদ, মালদা আর উত্তর দিনাজপুরে আইএসএফ-কে আসন ছাড়তে চায় না। ঠিক হয়েছে, আইএসএফ নেতৃত্বের সঙ্গে আরও আলোচনা করবেন বিমান বসু, আব্দুল মান্নানরা। এই প্রেক্ষাপটেই আইএসএফ-কে একটি শর্ত দিয়েছেন বাম-কংগ্রেস নেতারা। অধীর বলেছেন, ‘এখানে ঘোষণা করতে হবে ধর্মনিরপেক্ষ। এটা ঘোষণার পরেই সমঝোতায় যাব।’
বাম-কংগ্রেস, দু’পক্ষেরই দাবি, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল আর বিজেপি-দু’পক্ষকেই কড়া টক্কর দিতে তারা তৈরি। অর্থাৎ লড়াই হবে ত্রিমুখী। যদিও জোটকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না তৃণমূল কিংবা বিজেপি।
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, ‘আমাদের কিছু আসে যায় না, ওরা দু’জনেই দুর্বল, একে অপরকে ধরে বাঁচবার চেষ্টা করছে, তৃণমূল জিতবে, দ্বিতীয় হবে বিজেপি, তৃতীয় ওরা, দ্বিমুখী লড়াই।’
রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ‘প্রমাণ হল শেষে আব্বাস সিদ্দিকির দল, যার পিছনে আছে মিম, সেই ওয়েইসির দলের মদতে ওরা লড়ছে এখানে। এরা এক হাতে তৃণমূলকে ধরে রাখবে, আরেক হাতে আব্বাসকে ধরে রাখবে, সবার একই উদ্দেশ্যে, বিজেপির বিরোধিতা করা।’
জোটকে সুংসহত করার বার্তা দিয়ে এদিন সল্টলেক-সহ বিভিন্ন জায়গায় ডিওয়াইএফআই নেতা মইদুল ইসলাম মিদ্যার মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রতিবাদে একসঙ্গে রাস্তায় নামে বাম-কংগ্রেস। সল্টলেকে মশাল মিছিল করে তারা। এ মাসের শেষে বাম-কংগ্রেসের ব্রিগেড সমাবেশও রয়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি দুই দলের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে জোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বড় কোনও ঘোষণা হতে পারে বলে জল্পনা চলছে।