WB Election 2021: মালদা জেলা তৃণমূলে ভাঙন, বিজেপিতে যোগ ১৪ জনের
মালদায় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পরই তাঁর হাতযশে ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেসের থেকে জেলা পরিষদের দখল নেয় তৃণমূল সেই শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই এবার তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদে ধাক্কা দিল বিজেপি ৷ সোমবার মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ ১৪ জন সদস্য যোগ দিলেন বিজেপিতে।
![WB Election 2021: মালদা জেলা তৃণমূলে ভাঙন, বিজেপিতে যোগ ১৪ জনের West Bengal Election 2021: TMC party broken in Malda and joining BJP ahead of elections WB Election 2021: মালদা জেলা তৃণমূলে ভাঙন, বিজেপিতে যোগ ১৪ জনের](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2021/03/09/9fb0ebee17f9dbd861ab5903c7a5a567_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
করুণাময় সিংহ, মালদা: মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ ১৪ তৃণমূল সদস্য যোগ দিলেন বিজেপিতে। গেরুয়া শিবিরের দাবি, জেলা পরিষদ এখন তাদের হাতে। জেলার আরও দুই পঞ্চায়েত সমিতির দখলের দাবি করেছে বিজেপি। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে, দলের কোনও ক্ষতি হবে না বলে দাবি মৌসম নুরের।
মালদায় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পরই তাঁর হাতযশে ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেসের থেকে জেলা পরিষদের দখল নেয় তৃণমূল সেই শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই এবার তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদে ধাক্কা দিল বিজেপি ৷ সোমবার মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ ১৪ জন সদস্য যোগ দিলেন বিজেপিতে। এদিনই একাধিক বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক প্রার্থী হতে না পেরে বিজেপিতে যোগ দেন ৷ সেই ধাক্কা কাটতে না কাটতেই বিধানসভা ভোটের মুখে মালদা জেলা পরিষদ হারাল তৃণমূল। শুভেন্দু অধিকারী জানান, ‘‘মালদা জেলা পরিষদের আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলাম, এই প্রথম আমাদের দখলে জেলা পরিষদ ৷’’ মালদা জেলা পরিষদে সদস্য সংখ্যা ৩৮। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৭টি আসনে ভোট হয়। তৃণমূল জেতে ৩০টি আসনে ৷
বিজেপি ৬ ও কংগ্রেসের দখলে যায় একটি আসনে ৷ গত শুক্রবার জেলা পরিষদের এক বিজেপি সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় শাসক দলের সদস্য সংখ্যা বেড়ে হয় ৩১ ৷ বিজেপির কমে হয় ৫ ৷ কংগ্রেসের হাতে রয়েছে এক সদস্য ৷ সোমবার দলবদলের পর বর্তমানে জেলা পরিষদের সমীকরণটা দাঁড়াল এই রকম ৷ ১৪ জনের যোগ দেওয়ায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা ৫ থেকে বেড়ে হল ১৯ ৷ অন্যদিকে ৩১ থেকে কমে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা হল ১৭ ৷ এক সদস্য রয়েছেন কংগ্রেসে ৷ বিজেপি এদিন যে ১৪ জন জেলা পরিষদ সদস্যের দলবদলের দাবি করে তাঁদেরই অন্যতম দীনেশ টুডু। এই তৃণমূল নেতার দাবি তিন দলবদল করেননি। তাঁর সই জাল করেছে বিজেপি।
মালদা জেলা পরিষদের তৃণমূল নেতা ও সদস্য দীনেশ টুডু জানান, ‘‘আমি বিজেপিতে যোগ দিইনি, জাল সই করা হয়েছে, প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেব ৷’’ দলে ভাঙন আটকাতে এদিন মালদা তৃণমূলের জেলা অফিসে বৈঠক ডাকেন জেলা সভানেত্রী মৌসম বেনজির নুর। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, জেলা পরিষদের তৃণমূলের ১৭ সদস্যের মধ্যে তিনজন বৈঠকে যাননি। সূত্রের দাবি, বৈঠকে কয়েকজন নেতৃত্বের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এক জেলা পরিষদ সদস্য মৌসমের বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। মালদার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুর জানান, ‘‘অর্থ ও পদের লোভে কেউ কেউ দল ছেড়েছে, এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না, সাধারণ মানুষ, কর্মী তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন ৷’’
জেলা পরিষদ হাতছাড়া হওয়ার পাশাপাশি এদিন মালদার হবিবপুরের তৃণমূলের প্রার্থী সরলা মুর্মুকে নিয়ে তৈরি হয় নাটকীয়তা। সরলা বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন, এমন ইঙ্গিতে পেয়ে সোমবারই হবিবপুরে প্রদীপ বাস্কেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে তৃণমূল। জল্পনা সত্যি করে বিকেলে সরলা মুর্মু যোগ দেন বিজেপিতে। জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর অম্লান ভাদুড়িও এদিন বিজেপির পতাকা তুলে নেন। বিজেপিতে যোগদানকারী নেত্রী সরলা মুর্মু জানান, ‘‘আমার শরীর খারা আমি প্রার্থী হতে চাইনি, তবু করা হয়েছিল, সবাই বিজেপিতে যাচ্ছে, তাই বিজেপিতে যোগ দিলাম, তৃণমূলে কাজ করা যায় না ৷’’ ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘যে যাচ্ছে যাক, আমাদের কাছে মা আছে ৷’’
বিজেপির দাবি, রতুয়া এক ও ওল্ডমালদা পঞ্চায়েত সমিতির সিংহভাগ তৃণমূল সদস্য তাদের দলে যোগ দিয়েছেন। দুই পঞ্চায়েত সমিতিতে তারা এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে দাবি করেছে বিজেপি। মালদার তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘এবার সব শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ নেতা, এরা দল ছেড়ে গেলে তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হবে না ৷’’ পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, জেলা পরিষদ গঠনের আড়াই বছরের আগে অনাস্থা আনা যায় না। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের পর আড়াই বছর অতিক্রান্ত। মালদা জেলা পরিষদে কবে অনাস্থা আনে বিজেপি তা নিয়ে বাড়ছে জল্পনা।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)