Acchut-The Untouchable: এবার তথ্যচিত্রে 'নাচনি' সম্প্রদায়ের জীবনের গল্প বলবেন রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
Rajaditya Banerjee: পুরুলিয়ার 'নাচনি' সম্প্রদায়ের মানুষ, পস্তুবালা দেবী, জ্যোৎস্না দেবী, চারুবালা দেবীদের জীবনের কথাই তুলে ধরবে এই ছবি। ঠিক কেমন হয় নাচনিদের জীবন?
কলকাতা: টলিউডে রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছেন তাঁর প্রথম ছবি 'ডেথ সার্টিফিকেট' (Death Certificate)-এর হাত ধরে। এই ছবি জিতে নিয়েছে জাতীয় পুরস্কারও। আর এবার তিনি একটি তথ্যচিত্র তৈরি করছেন 'নাচনি' সম্প্রদায়ের ওপর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করার জন্য। তাঁর নতুন তথ্যচিত্র 'অচ্ছুত-দ্য আনটাচেবল' (Acchut-The Untouchable)-এর গল্প তৈরি হয়েছে নাচনি সম্প্রদায়ের মানুষকে নিয়ে, যাঁদের কথা তথাকথিতভাবে রয়ে গিয়েছে অন্ধকারেই।
পুরুলিয়ার 'নাচনি' সম্প্রদায়ের মানুষ, পস্তুবালা দেবী, জ্যোৎস্না দেবী, চারুবালা দেবীদের জীবনের কথাই তুলে ধরবে এই ছবি। ঠিক কেমন হয় নাচনিদের জীবন? পরিচালকের মনে হয়েছিল, একবিংশ শতাব্দীতে এসেও, নিজেদের অস্তিত্ব, সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য লড়াই করছে এই সমস্ত মানুষেরা। এখনও ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়ার রাঢ় এলাকায় নাচনিদের দেখা পাওয়া যায়। বর্তমানে নাচনি প্রথায় আর আসতে চাইছেন না নতুন প্রজন্মের মানুষেরা। আর তাই কার্যত বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গিয়েছে এই সংস্কৃতি। বর্তমানে নাচনিদের বয়স চল্লিশ থেকে শুরু করে ৮০-র মধ্যে। এই পেশার খারাপ অবস্থার কথাই তথ্যচিত্রে তুলে ধরতে চেয়েছেন পরিচালক।
পশ্চিমবঙ্গের বাইরে, ঝাড়খণ্ড এলাকাতেও এখনও রয়েছে নাচনি প্রথা। আর পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের আবাস সাধরণত পুরুলিয়ার। কিন্তু তেন নাচনিদের পেশার এই দুর্দশা? উত্তরটা ভীষণ সোজা। নাচনিরা জানাচ্ছেন, তাঁদের কখনও প্রাপ্য সম্মান দেয়নি সমাজ, দেখেনি ভাল চোখে। একজন নারী যে নাচ ও গান করে উপার্জন করতে পারে, সেটাই মেনে নিতে পারেনি সমাজ। হয়তো সেই কারণেই 'নাচনি' রা রয়ে গিয়েছে অচ্ছুত হিসেবে। সেই পরিস্থিতিকেই পর্দায় তুলে ধরার চেষ্টা করবেন পরিচালক।
পৃথিবীর কাছে 'নাচনি' অর্থাৎ একজন মহিলা যিনি নাচ করেন। একসময় উত্তর ভারতে বাঈজিপ্রথার চল ছিল। জমিদারদের মনোরঞ্জনের জন্য জমিদার বাড়িতেই থাকতেন তাঁরা। নাচনিরা সাধারণত নাচ করতেন ঝুমুর গানের সঙ্গে। বিভিন্ন কাব্য, মহাকাব্যকে নাচ ও গানের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতেন তাঁরা।
এই নাচনিদের সঙ্গে থাকতেন একজন করে রসিক। সাধরণত নাচনির সঙ্গে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক হত। তবে নাচনিদের উপার্জন করা টাকা পয়সার যাবতীয় হিসেব রাখতেন তাঁরাই। নাচনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হত এই রসিকদের মাধ্যমেই। নাচনিরা বাধ্য থাকত বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে নাচের শো করতে। ঘরে কার্যত ফিরতে পারতেন না তাঁরা।
প্রসঙ্গত, এই তথ্যচিত্রের কথা লিখতে গিয়ে মনে পড়ে যায়, নান্দীকারের কিংবদন্তি নাটক 'নাচনি'-র কথা। রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, সোহিনী সেনগুপ্ত ও দেবশঙ্কর হালদার অভিনীত এই নাটকে তুলে ধরা হয়েছিল দুই প্রজন্মের দুই নাচনির জীবন।