'Dostojee' at New York: 'টাইমস স্কোয়্যার'-এ উজ্জ্বল 'দোস্তজী'র ট্রেলার, উচ্ছ্বাস প্রকাশ পরিচালক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের
Prasun Chatterjee: গত ১৭ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পেয়েছে 'দোস্তজী'। তবে এখানেই শেষ নয়, নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত 'টাইমস স্কোয়্যার'-এর বিলবোর্ডে জ্বলজ্বল করে উঠেছে 'দোস্তজী'র ট্রেলার।
কলকাতা: বিদেশের মাটিতে বাংলা ও বাঙালির জয়জয়কার। একের পর এক চলচ্চিত্র উৎসবের পর কলকাতায় ছবির মুক্তি। দর্শকের থেকে বিপুল সাড়া পাওয়া। বিভিন্ন তারকার প্রশংসা পাওয়ার পর এবার বিদেশের মাটিতে মুক্তি পেল বাংলা ছবি 'দোস্তজী' (Dostojee)। পশ্চিমবঙ্গের এক জেলায় বাঙালি পরিচালকের (Bengali Director) তৈরি দুই বন্ধুকে কেন্দ্র করে ছবিটি এখন জ্বলজ্বল করছে নিউ ইয়র্কের (New York) টাইমস স্কোয়্যারে (Times Square)। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন পরিচালক প্রসূন চট্টোপাধ্যায় (Prasun Chatterjee)।
'টাইমস স্কোয়্যার'-এ জ্বলজ্বলে 'দোস্তজী'
শহরে মুক্তির আগে 'দোস্তজী' বিশ্বজুড়ে বহু মানুষের মন জয় করে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনের সঙ্গে সঙ্গে ঝুলিতে ভরেছে একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কারও। 'লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল', 'ইউকে এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল', 'অলিম্পিয়া ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ফর চিলড্রেন অ্যান্ড ইয়ং পিপল', 'বুসান ইন্টারন্যাশনাল কিডস অ্যান্ড ইউথ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল', 'ডারবান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল', 'মালয়শিয়া গোল্ডেন গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ডস ২০২২', 'ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ কেরল' ইত্যাদি প্রায় ২০টিরও বেশি চলচ্চিত্র উৎসবে পৌঁছে যায় 'দোস্তজী'। এরপর গত বছর ১১ নভেম্বর কলকাতায় মুক্তি পায় প্রসূন চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত 'দোস্তজী'। মুক্তির পর থেকেই এই ছবির প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলে। খুদে দর্শক থেকে বয়স্ক, বাংলা ইন্ডাস্ট্রির তারকা অভিনেতা থেকে অন্যান্য পরিচালকেরা, কেউই প্রশংসা করতে কুণ্ঠা বোধ করেননি। বাঙালি দর্শক এই ছবিকে দুহাত উজাড় করে ভালবাসা দিয়েছে। এবার সেই ভালবাসাই পাথেয় করে বিদেশের মাটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি পেল 'দোস্তজী'। দুই বন্ধুর গল্প মন মাতাতে চলেছে এবারে বিদেশি দর্শকেরও।
গত ১৭ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পেয়েছে 'দোস্তজী'। তবে এখানেই শেষ নয়, নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত 'টাইমস স্কোয়্যার'-এর বিলবোর্ডে জ্বলজ্বল করে উঠেছে 'দোস্তজী'র ট্রেলার। এ কি কম গর্বের? আপাতত মার্কিন মুলুকেই আছেন পরিচালক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়। এবিপি লাইভের তরফে তাঁকে যোগাযোগ করা হয়। আনন্দে আত্মহারা পরিচালকের কথায়, 'এটা না একটা অদ্ভুত অনুভূতি। বলে বোঝানো সম্ভবই নয়। অদ্ভুত লাগছিল। সত্যি। যেখানে কলকাতায় মুক্তির সময় একটা বড় পোস্টার বা একটা হোর্ডিং পর্যন্ত দিতে পারিনি আমরা, কারণ টাকা ছিল না। সেই পরিস্থিতি থেকে এসে প্রথম এমন একটা বাংলা ছবি যার টিজার ট্রেলার চলছে নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কোয়্যারের বিলবোর্ডে। যা বলিউড ছবির ক্ষেত্রে খুবই বিরল ঘটনা।' হাসতে হাসতে প্রসূন বলে চলেন, 'পাশে হলিউডের তাবড় তাবড় সিনেমার ক্লিপিংস চলছে সেখানে টাইমস স্কোয়্যারের বিশালাকার বিলবোর্ডে দোস্তজী চলছে।'
তবে প্রসূন মনে করেন এটা শুধু 'দোস্তজী'র একার সাফল্য নয়। তাঁর কথায়, 'এটা শুধু দোস্তজীর জন্য নয়, সামগ্রিকভাবে বাংলা ছবির জন্য এটা খুব বড় ব্যাপার। আমাদের ছবি আমাদের তো ভাল লাগছে বটেই। খুব ভাল লাগছে, এটাই বলতে পারি, ভিতরে কী চলছে সেটা ভাষায় প্রকাশ করা খুবই কঠিন।'
তবে ১৭ মার্চ শুধু মার্কিন মুলুকেই নয়, একইসঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ডের একাধিক প্রেক্ষাগৃহেও মুক্তি পেয়েছে 'দোস্তজী'। ইতিমধ্যেই এই ছবি ৩২টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ঘুরে এসেছে, ২৬টি দেশে প্রিমিয়ার হয়েছে এবং ৯টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও ভরেছে নিজেদের ঝুলিতে।
আরও পড়ুন: Anirban Bhattacharyya Exclusive: ইউরোপের মাটিতে বাংলা বলার একমাত্র সঙ্গী ছিলেন রানি: অনির্বাণ
এক ঝলকে 'দোস্তজী'
মনের কোণে পড়ে থাকা ছোটবেলার একাংশকে পুনরায় জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে 'দোস্তজী'। পরিচালক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের এটিই প্রথম কাজ। ছবির প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে বাবরি মসজিদ ধ্বংস ও মুম্বই বিস্ফোরণের পরের সময়ে। 'দোস্তজী', সমস্ত ধর্মীয় বিভেদের বাধা টপকে দুই 'দোস্ত' অর্থাৎ বন্ধুর একসঙ্গে বেড়ে ওঠার গল্প শোনায়। এক বন্ধু হিন্দু ব্রাহ্মণ, নাম পলাশ। অপর জন তাঁর মুসলমান পড়শি, সফিকুল। বাংলাদেশ বর্ডারের (Bangladesh Border) কাছে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা এই দুই খুদের বন্ধুত্বই প্রাণ এই ছবির। তাঁদের বন্ধুত্ব, এক শব্দে বিশুদ্ধ। একে অপরের প্রতি অগাধ টান, তাঁদের সম্পর্কের উষ্ণতা দর্শককে হাসি-কান্নায় ভরিয়ে তোলার যাত্রা চালিয়ে যাচ্ছে।