এক্সপ্লোর
Advertisement
'সুশান্তের মতো কত মুখ হারিয়ে গেল, এবার বন্ধ হোক এসব', বলিউড-অভিজ্ঞতা নিয়ে বিস্ফোরক রূপা
'অনেক নবাগত অভিনেতা-অভিনেত্রী চোখের সামনে হারিয়ে গেল। আসলে বলিউডে এভাবে জীবন ধ্বংস করে দেওয়ার একটা সিস্টেমেটিক ওয়ে আছে।' এবিপি আনন্দকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
মুম্বই: 'ম্যাজিক? ম্যাল প্র্যাকটিস? নাকি ম্যাল ফাংশন?'
দুই দিন আগে ট্যুইটার থেকে একটি পোস্ট আপনা থেকেই ডিলিট হয়ে যায় অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে। চোখের সামনেই। সেটা ভিডিও-ও করে রেখেছেন তিনি। অবাক হয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কে তাঁর ট্যুইট ডিলিট করল?
Video taken after 1 Am
Tweet was in the process of vanishing. #Magic ?#Malfunction ? #Malpractice ?
@TwitterIndia ? pic.twitter.com/sghkj7VZkR
— Roopa Ganguly (@RoopaSpeaks) July 23, 2020
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভীষণভাবে সরব হয়েছেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। সারাদিনে মাঝে-মাঝে ৪-৫টাও ট্যুইট করেছেন তিনি। বারবার প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ট্যাগ করেছেন সুশান্ত মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত চেয়ে।
অভিনেতার মৃত্যুর পর থেকেই বলিউডে কয়েকটি গোষ্ঠীর দাপট নিয়ে মুখ খুলেছেন অনেকেই। স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে বলিউডের হেভিওয়েট পরিচালক-প্রযোজকদের আক্রমণ করেছেন কঙ্গনা রানাউত। তাঁকে বিভিন্ন সময় সমর্থনও জানিয়েছেন রূপা।
Talking about #computer and #coding and #progress ,instantly reminds me of the #brilliant and #futuristic #sushant who had his eyes into the future.#cbiforsushant #SushantSinghRajput pic.twitter.com/O8SO9rYItH
— Roopa Ganguly (@RoopaSpeaks) July 15, 2020
-কিন্তু, সুশান্তকে নিয়ে তিনি এত সরব কেন?
সুশান্তকে দেখে আমার ভীষণ চেনা কিছু মানুষকে মনে পড়ে যায়, যাঁদের চোখের সামনে দেখেছি হারিয়ে যেতে। আজ নয়, বরাবর। আমি যখন মুম্বইতে কাজ করছি, তখনও এইরকম কিছু গোষ্ঠীর একাধিপত্য ছিল। আমি দেখেছি অনেক নবাগত অভিনেতা-অভিনেত্রী চোখের সামনে হারিয়ে গেল। আসলে বলিউডে এভাবে জীবন ধ্বংস করে দেওয়ার একটা সিস্টেমেটিক ওয়ে আছে। আমাদের সময়ও কেউ কেউ নম্বর জোগাড় করে ফোন করে বলত, 'ম্যাডাম, আমাদের সঙ্গে বড়-বড় লোকেদের যোগাযোগ। দুবাইতে শো অ্যারেঞ্জ করি। '
আমার কোনওদিনই এই সবে আগ্রহ ছিল না। কিন্তু যাঁদের ছিল,তাঁরা অনেকেই অন্ধকারে তলিয়ে গেছে।
-তবু সুশান্তকে নিয়ে আপনি যেন একটু বেশিই সেন্সিটিভ...
হ্যাঁ..ওঁর সঙ্গে নিজের কিছ কিছু জায়গায় মিল পাই। আমিও টেকনোলজি ভালবাসি, ক্যামেরায় চোখ রাখতে ভালবাসি। আর্কিটেক্ট হতে চাইতাম। সুশান্তের মতোই ছবি ছাড়া অনেককিছু নিয়ে আগ্রহ ছিল। কিন্তু দলবাজির ফাঁদে পা দিতাম না। তাই হয়ত কাজ শেষ করেই কলকাতায় ফিরে আসতাম, বম্বের ঘিঞ্জি জায়গায় খুব কমই থাকতাম।
-এর পিছনে কি কোনও রাজনীতি আছে?
সুশান্তের মৃত্যুর ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছিল তো জানি না। তবে আমার কথা বলতে পারি। তখন মহাভারতে অভিনয়ের সূত্রে মুম্বইতে থাকি। একদিন মহেশ ভট্ট স্ক্রিপ্ট শোনাতে এলেন। গল্প-টল্প শুনিয়ে বললেন, আমাকে আমদাবাদে কংগ্রেসের মিছিলে হাঁটতে যেতে হবে। আমি বললাম, রাজনীতি তো আমি বুঝি না। তাতে উনি কাগজপত্র গুটিয়ে উঠে পড়লেন। স্পষ্টতই বলে দিলেন, আমি ওঁর কথা না শুনলে, উনিই বা আমাকে নিয়ে ছবি করার কথা ভাববেন কেন! সুশান্তের সঙ্গে যে এমন কিছুই ঘটেনি, তা কী করে বলতে পারি?
-আপনাকে মুম্বইতে অসুরক্ষিত পরিবেশে পড়তে হয়নি?
আমি তো তখন বি আর চোপড়ার ব্যানারে কাজ করছি। ওঁর বাড়ির কাছেই হোটেলে থাকি। দরকারে, ওঁর বাড়িতে গিয়ে খাওয়া-দাওয়াও করতাম। ওঁর বাড়ির লোকের মতোই ছিলাম। আর আমার তো তেমন অ্যাম্বিশন ছিলও না। কাজ শেষ করে ওই দিনই কলকাতা ফিরতাম। নিজের শহরে ফিরতে পারলে বাঁচতাম। আর আমার বাড়িতেও কোনও পার্টি করা বা সকলকে ডেকে জমায়েত করতাম না। এরজন্য কত কথাই না শুনতে হয়েছে। তবুও বাড়িতে কাউকে ডেকে সময় কাটানোর দলে আমি নই। সুশান্তও হয়ত এই শক্তিশালী গোষ্ঠীদের সঙ্গে মেলামেশা করে, তাদের খুশি করার চেষ্টা করেনি পাল্লা দিয়ে। তাই হয়ত রেসে পিছিয়ে পড়েছে।
-তাহলে নিশ্চয়ই আপনার কাছে কোনও কুপ্রস্তাব আসেনি?
সেই সময় মুম্বইয়ের নামি-দামি পরিবারের একজন আমার সঙ্গে দেখা করতে এলেন। হাতে ঝকঝকে হীরের আংটি। অনেক টাকার প্রলোভন দেখিয়ে বললেন, তাঁর কাছের লোকেদের খুশি করতে পারলে টাকার অভাব হবে না। আমি বলেছিলাম, কারও কাছে ৭ টাকাই যথেষ্ট, কারও কাছে ৭০ আবার কেউ ৭ হাজারেও খুশি নয়। আমি ওই ৭-এই খুশি।
-কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে তো এমনটা ঘটে না...
অন্য কত কী ঘটে। পার্টিতে যেতে হবে । তাঁদের সঙ্গে নেশা করতে হবে। তোষামোদ করতে হবে। না হতে ওই যে বললাম, কায়দা করে একা করে দেওয়া হবে। পার্টিতে ডাকবে, কথা বলবে না। ঠাট্টা-তামাশা করবে। কর্ণ জোহরের শোগুলি দেখলেই তো বোঝা যায়, সুশান্তকে কতটা তাচ্ছিল্য করতেন উনি। আর বলিউডে কনট্র্যাক্ট করিয়ে কাজ করানোটা তো একটা খারাপ খেলা। কত মানুষের কেরিয়ার নষ্ট হয়ে যায়। আর এগুলো তো ফিল্ম-পরিবার থেকে আসা ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে করা সম্ভব নয়। তাই সুশান্তকে কোণঠাসা হয়ে যেতে হয়েছে।
-বাংলায় চলে এমনটা?
বাংলায় অন্য জিনিস হয়। আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগে তো এমনটা হত না। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে রাজনীতির চাপ ছিল না। এখন বিজেপি করলে কাজ পাওয়া যায় না। মনে আছে, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর, শতরূপা স্যান্যালের একটি ছবিতে কাজ করছিলাম। সেই সময় ফেডারেশন থেকে সেটে এসে কী গণ্ডগোল! পরিচালককে কী বিপদে পড়তে হয়েছিল। বিজেপি করা লোকজনদের এখন কাজে নিলে পরিচালক-প্রযোজকদের দুর্গতির শেষ থাকবে না।
৩০ বছর আগে নিজের সব তিক্ত স্মৃতি ফিরে আসছে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের । মুম্বই শহরে প্রথম পা রাখা বাঙালি এক তরুণীর বিচিত্র অভিজ্ঞতা দিয়ে সুশান্তের অবস্থা বিচার করছেন তিনি। তিনি মনে করছেন একজন বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন ছেলে এভাবে কী করে হারিয়ে যেতে পারে!
বিনোদনের (Entertainment) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
আজ ফোকাস-এ
জেলার
জেলার
জেলার
Advertisement