Buddhadeb Dasgupta Death: 'তোমার খ্যাতির জন্য শ্যুটিং করতে সমস্য়া হচ্ছে ঋতুপর্ণা'
'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান'-এর শ্যুটিং চলছে পুরুলিয়ায়। জনপ্রিয় নায়িকা শ্যুটিং করতে আসছেন শুনে ভিড় জমেছে উৎসাহী মানুষের। তাতে একটু বিরক্তই হলেন পরিচালক। অভিনেত্রীকে ডেকে বললেন, 'তুমি এত ফেমাস জানতাম না তো! তোমায় দেখতে এত লোকে ভিড় জমাচ্ছে। তোমার খ্যাতির জন্য আমার শ্যুটিং করতেই অসুবিধা হচ্ছে।' সেই পরিচালক ছিলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, আর নায়িকা ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আজ বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের প্রয়াণের খবর পেয়ে মন খারাপ 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান'-এর নায়িকার।
কলকাতা: 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান'-এর শ্যুটিং চলছে পুরুলিয়ায়। জনপ্রিয় নায়িকা শ্যুটিং করতে আসছেন শুনে ভিড় জমেছে উৎসাহী মানুষের। তাতে একটু বিরক্তই হলেন পরিচালক। অভিনেত্রীকে ডেকে বললেন, 'তুমি এত ফেমাস জানতাম না তো! তোমায় দেখতে এত লোকে ভিড় জমাচ্ছে। তোমার খ্যাতির জন্য আমার শ্যুটিং করতেই অসুবিধা হচ্ছে।' সেই পরিচালক ছিলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, আর নায়িকা ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আজ বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের প্রয়াণের খবর পেয়ে মন খারাপ 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান'-এর নায়িকার।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত চেয়েছিলেন 'উত্তরা' ছবিতে অভিনয় করুক ঋতুপর্ণা। অভিনেত্রী বলছেন, 'উত্তরায় কার না করতে পারা আমার জীবনের একটা অন্যতম বড় আফশোস। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত আমার বাবাকে পর্যন্ত চিঠি লিখে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সেইসময় আমি এতগুলো ছবির কাজে ব্যস্ত ছিলাম, সময় করে উঠতে পারিনি। পরবর্তীকালে উনি নিজে ফোন করে আমার সঙ্গে অনেকবার কথা বলছেন। মুক্তধারা আর অলীক সুখ দেখে নিজে আমায় ফোন করেছিলেন। বলেছিলেন, 'তোমার অভিনয় ভালো হয়েছে'। ওনার সঙ্গে আমার কেবল 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান'-ই স্মৃতি হয়ে রয়ে গেল।'
'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান'-এ অভিনয় করার সময় নাকি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের প্রচুর বকুনি খেতেন ঋতুপর্ণা। অভিনেত্রী বলছেন, 'ওনার খুব প্রিয় ছিল ভোরের দিকে শ্যুটিং, অথবা বিকেলে। একটু আলোর এদিক ওদিক হলেই সেই দিনের জন্য শ্যুটিং বাতিল করে দিতেন। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ছিলেন টাফ মাস্টার। সেইসময় 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান'-এ ওইরকম একটা গভীর চরিত্রে অভিনয় করতে হবে জেনে একটু ভয়ই পেয়েছিলাম। বুদ্ধি বা বয়স কোনোটাই ছিল না ওই চরিত্রটাকে তুলে ধরার জন্য। শ্যুটিং সেটে প্রচুর বকুনিও খেয়েছি। মাঝে মাঝে এত খারাপ লাগত, মেন হত কেন আমি এই ছবিটা করতে এলাম। কিন্তু পরে বুঝেছি উনি ওই একটা ছবিতেই আমায় কত কিছু শিখিয়ে দিয়েছেন। তবে শ্যুটিং-এর ফাঁকে অনেক গল্পও করতেন উনি। কিছু প্রশ্ন করলে শিখিয়ে দিতেন। 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান' সেইবছর গোটা ভারতে সেরা ছবির পুরস্কার পায়। আমার কেরিয়ারের অন্যতম শিক্ষণীয় একটা অধ্যায় ছিল 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান।'
'ওনার মেয়ে আর আমি একই স্কুলে পড়তাম। আমায় মেয়ের মতই স্নেহ করতেন উনি। তবে মনে আছে, কখনও ঋতু বলে ডাকেননি। সবসময় ডাকতেন ঋতুপর্ণা...। একটা একটা করে নক্ষত্রপতন হচ্ছে যেন। আলো নিভে যাচ্ছে। এই সময়টা আর ভালো লাগছে না। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত শুধু ছবি বানাতেন না, গৃহযুদ্ধের মত ছবির মধ্যে দিয়ে উনি সমাজের সত্যিটাকে পর্দায় তুলে ধরতেন নির্ভীকভাবে।' মনখারাপ মেশানো গলায় বললেন বুদ্ধদেবের 'রজনী'।