Ishaa Saha Interview: নিজেকে নিয়ে আমার কোনও হীনমন্যতা নেই
Ishaa Saha on Tollywood: 'চাইলেই তো বাইরে বেরনো সুযোগ হয় না। তেমন চিত্রনাট্যও আসা চাই। আমার মনে হয়, বিশেষ করে নায়িকাদের ক্ষেত্রে চরিত্র নিয়ে কাটাছেঁড়া খুব কম হয় এখন', বলছেন ইশা।
তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা: 'খুব সাজগোজ করে মেয়েটা গিয়েছিল এনকাউন্টার । পুলিশ আপত্তি জানাতেই সে বলে উঠল.. 'ঝাঁসির রানিকে দেখেছেন?' ... নিজের চরিত্রের কথা বলতে বলতে, এখানে এসে হেসে ফেললেন ইশা সাহা (Isha Saha)। আজই মুক্তি পেয়েছে তাঁর নতুন ওয়েব সিরিজ 'পাশবালিশ' (Paasbalish)। নিজের চরিত্র থেকে শুরু করে অভিনয় নিয়ে, নিজেকে নিয়ে ভাবনার কথা এবিপি লাইভকে (ABP Live) বললেন ইশা সাহা (Ishaa Saha)।
'পাশবালিশ'-এ ইশার চরিত্রের নাম আঁচল মল্লিক। ইশা বলছেন, 'আমার চরিত্রটা একজন বেশ সাহসী মেয়ে। যে বড় চাকরি ছেড়ে, নিজের চেষ্টায় একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেখানে সাংবাদিকতা করে। মোবাইল নিয়ে, কেবল সাহসে ভর করে বিভিন্ন বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছে যায় ছবি তুলতে। তবে একদিকে যেমন আঁচল খুব সাহসী, তার চরিত্রের একটা মজার দিকও রয়েছে। এমনই কাজ করতে গিয়ে, তার আলাপ হয় চাঁদুর সঙ্গে। এই চরিত্রতেই সুহোত্রকে দেখা যাবে।' কিন্তু থ্রিলার গল্পের নাম 'পাশবালিশ' কেন? ইশা বলছেন, 'আসলে এখানে মেটাফর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে নামটা। পাশবালিশ আমাদের কমফোর্ট জোন, সবসময় পাশে থাকে। আমাদের সব আবেগ, সব মনের কথা জানে। সেই অর্থটাকেই তুলে ধরা হয়েছে।'
কমফোর্ট জ়োনের কথা বলছেন ইশা। অভিনয়ের দিক থেকে তিনি কমফোর্ট জ়োনে থাকতে ভালবাসেন নাকি ছেড়ে বেরতে চান? অভিনেত্রী বলছেন, 'চাইলেই তো বাইরে বেরনো সুযোগ হয় না। তেমন চিত্রনাট্যও আসা চাই। আমার মনে হয়, বিশেষ করে নায়িকাদের ক্ষেত্রে চরিত্র নিয়ে কাটাছেঁড়া খুব কম হয় এখন। অভিনেতাদের কাজ, চিত্রনাট্যের চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলা। চরিত্রের গ্রাফ উঁচু-নীচু থাকলে, তবেই একজন অভিনেতা সেটা ফুটিয়ে তুলতে পারেন। খুব চেনা কয়েকটা জায়গা ছাড়া, খুব চ্যালেঞ্জিং কাজ কমই হয়।' পরিচালনায় এলে, ইশা কি মনের মতো চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেতে পারেন? অভিনেত্রী বললেন, 'একেবারেই না। আমি কখনও পরিচালনায় আসার কথা ভাবিনি। ওটা আমার কাজই নয়। আমি মনে করি, আমি একজন অভিনেতা আর চিত্রনাট্যের সাহায্যটা প্রয়োজন।'
ইশাকে যদি নিজের জন্য সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং কোনও চরিত্র পছন্দ করতে বলা হয়, সেটা কেমন হবে? একটু ভেবে ইশা বললেন, 'আরিয়া-র সুস্মিতা সেনের মতো একটা চরিত্রে অভিনয় করা আমার জন্য বোধহয় সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে। ওইরকম লম্বা-চওড়া অভিনেত্রীকে যে চরিত্রে মানুষ দেখেছেন, তেমন চরিত্রে আমায় ভাবাটা কঠিন। কিন্তু আমি জানি, আমি অভিনয়টা নিজের মতো করেই করব আর ভাল করব।'
নিজেকে নিয়ে কখনও হীনমন্যতা এসেছে ইশার? অভিনেত্রী বলছেন, 'আমার কোনও হীনমন্যতা নেই। মাঝে মাঝে মনে হয়, ভূতের রাজার বর পেলে বলতাম, আরও ২ ইঞ্চি লম্বা করে দাও। আমাদের হিরোরা এত লম্বা যে মাঝে মাঝে মনে হয় এক ফ্রেমে আঁটব না। তবে এটা নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগিনি কখনও।' আর ভয়? ইশা বলছেন, 'আমি ভূত, বন্য় প্রাণী সবেতেই ভয় পাই। তবে হ্যাঁ, আমার স্টেজ-ফিয়ার রয়েছে। অত জোড়া চোখ আমার দিকে তাকিয়ে এটা ভাবলেই ঘাবড়ে যাই।'
শ্যুটিংয়ে গিয়ে কখনও ভৌতিক অভিজ্ঞতা হয়েছে? ইশা হাসতে হাসতে বলছেন, 'ভূত আমি দেখিনি। কিন্তু এই 'পাশবালিশ'-এর শ্যুটিং করতে ডুয়ার্সে গিয়ে অদ্ভূত সব অভিজ্ঞতা হয়েছে। রিসর্টের বাইরে হঠাৎ গুলির আওয়াজ শুনতে পেতাম। পরে শুনতাম, হাতি তাড়ানো হচ্ছে। ওখানে শ্যুটিং করতে বেশ ভয় পেতাম আমি। আর মনে আছে, 'দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন'-এর সময়ে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল পুরনো রাজবাড়িতে। সেখানেও একদিন রাতে সামান্য বাথরুমের দরজা খোলার আওয়াজে ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। পরেরদিন ইউনিটে এসে সেটা বলায়, সান্তনা তো নয়ই, বরং ভূতের গল্প শুনিয়ে আরও বেশি করে ভয় দেখানো হয়েছিল আমায়'।
সৌরভ আর সুহোত্রর সঙ্গে অনেকগুলোই কাজ করে ফেললেন ইশা। সুহোত্র এবিপি লাইভকে বলেছিলেন, ইশা নাকি চঞ্চল? শুনেই হেসে ফেলে ইশা বললেন, 'সোয়েটার দেখেছেন? আপনি বিশ্বাস করেন ওই মেয়েটা চঞ্চল? তাহলে তো সুহোত্র বলতে চেয়েছে, আমি অভিনয় করার জন্য খুব খাটি। যাক আমি কমপ্লিমেন্ট হিসেবেই এটাকে নিলাম। তবে হ্যাঁ, ওদের দুজনের সঙ্গেই আমার খুব ভাল বন্ধুত্ব। যেহেতু বয়সটা কাছাকাছি, তাই অভিনয়ের ক্ষেত্রে একটা স্বস্তির জায়গা থাকে।'
সামনেই মাদার্স ডে (Mothers Day 2024), ইশার জীবন, কেরিয়ারের সঙ্গে কতটা জড়িয়ে মা? অভিনেত্রী বলছেন, 'মায়ের অবদান তো এক কথায় প্রকাশ করা যায় না। চিরকালই মায়ের সমর্থন পেয়ে এসেছি সব বিষয়ে। কাজের সূত্রে একা থাকতে শুরু করেছি সদ্য। মা দেখেছি সেই বিষয়টাকে খুব সুন্দরভাবে সামলে নেন বাড়িতে। আইনজীবী ছিলাম, সেখান থেকে অভিনয়ে এসেছিলাম। মধ্যবিত্ত বাড়িতে তো এই পেশাটা নিয়ে অনেকরকম ধারণা থাকে। প্রথমে মেনে নিতে চায়নি বাড়িতে। মা সেই সময়ে না থাকলে ইন্ডাস্ট্রিতেই থাকতে পারতাম না। মা হল সেই মানুষ, যে নিঃশর্তভাবে পাশে থাকে। তবে আমি একটাদিনকে মাদার্স ডে উদযাপন করায় বিশ্বাসী নই। আমার কাছে মাকে ভাল রাখাটা দায়িত্ব। রোজ।'
View this post on Instagram
আরও পড়ুন: Dona Ganguly : "সানাকে শুনতে হয়েছে, 'সৌরভের মেয়ে চাকরি করে কী হবে"
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।