Pratul Mukhopadhyay: প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়, 'আমি বাংলায় গান গাই', আজও ফেরে মুখে মুখে
Kolkata News: মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

কলকাতা: সঙ্গীতশিল্পী তথা গীতিকার প্রতুল মুখোপাধ্যায় প্রয়াত। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। অসুস্থ শিল্পী ভর্তি ছিলেন কলকাতার SSKM হাসপাতালে। কয়েকদিন আগে হাসপাতালে গিয়ে শিল্পীর সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৮৩ বছর বয়সে মারা গেলেন কিংবদন্তি শিল্পী। শনিবার সকালে SSKM হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। (Pratul Mukhopadhyay)
বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার জেরে বেশ কিছু দিন ধরেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে গিয়েছিলেন। এসএসকেম হাসপাতালের মেন ব্লকে ভর্তি ছিলেন তিনি। চিকিৎসকদের মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয় তাঁর জন্য। সেখানে তাঁর সঙ্গে সম্প্রতি দেখাও করেন মমতা। শনিবার সকালে জানা যায়, শিল্পী আর নেই। শেষ মুহূর্তে আর সাড়া দেননি চিকিৎসায়। (Kolkata News)
বাংলার সঙ্গীত জগতের অন্যতম উজ্জ্বল তারকা শিল্পী ছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। অবিভক্ত পূর্ববঙ্গে জন্ম, পরবর্তীতে এপার বাংলায় চলে আসেন। কিন্তু বাঙালিয়ানা আদ্যোপান্ত জড়িয়েছিল তাঁর সঙ্গে। তাঁর কণ্ঠে 'আমি বাংলায় গান গাই' আজও মুখে মুখে ফেরে। পাশাপাশি, 'ডিঙা ভাসাও সাগরে'ও অত্যন্ত পছন্দ অনুরাগীদের। গান গাওয়া, লেখা, সবেতেই নিজের প্রতিভার জাত চিনিয়েছেন। (Pratul Mukhopadhyay Demise)
শিল্পীর প্রয়াণে এদিন শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লেখেন, 'কয়েকদিন আগেই হাসপাতালে গিয়ে দেখা করে এসেছিলাম। প্রতুলদার মৃত্যু বাংলা গানের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি। যতদিন বাংলা গান থাকবে, ‘আমি বাংলায় গান গাই’ মুখে মুখে ফিরবে। প্রতুল মুখোপাধ্য়য়কে ‘বঙ্গবিভূষণ’, ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’, ‘নজরুল স্মৃতি পুরস্কারে’ সম্মানিত করার কথাও তুলে ধরেন তিনি'।
সঙ্গীত জগতে, বিশেষ করে বাংলার শিল্পজগতের অত্যন্ত পরিচিত নাম প্রতুল মুখোপাধ্যায়। 'গোঁসাইবাগানের ভূত' ছবিতে নেপথ্য শিল্পী হিসেবেও কাজ করেন। একাকীত্ব বরাবর পছন্দ ছিল শিল্পীর। তাঁর প্রয়াণের খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সঙ্গীত জগতে। বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে কলকাতার এসএসকেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন মমতা।
শিল্পীকে হাসপাতালে দেখে বেরিয়ে মমতা বলেছিলেন, "আমি ওঁকে প্রশ্ন করলাম, 'প্রতুলদা কেমন আছেন। তাকালেন, দুই হাত তুললেন। আমি আঙুলগুলি টিপে দিলাম। দেখে মনে হচ্ছিল, ভিতরে ভিতরে খুব কষ্ট পাচ্ছেন। অক্সিজেন স্যাচুরেশন হঠাৎ ৯৩-এ নেমে এসেছিল। শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল ওঁর। আমি একটু কথা বলায় ৯৫ হল। খুব ওঠানামা করছে।" হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার আগেও ফোনে বার বার শিল্পীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন মমতা। এর আগে, জানুয়ারি মাসেও একবার হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে। সেই সময় স্নায়ুজনিত সমস্যা ছিল। নাক ও কান দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল তাঁর। সেবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও, এবার আর ফিরতে পারলেন না শিল্পী।
'আমি গিয়ে ওঁকে প্রশ্ন করলাম। প্রতুলদা কেমন আছেন? উনি তাকালেন। দু হাত তুললেন। আমি আঙুলগুলো একটু টিপে দিলাম। কিন্তু ওঁকে দেখে মনে হচ্ছিল ওঁর ভিতরে কোনও একটা কষ্ট হচ্ছে খুব। আমি দেখলাম অক্সিজেন স্যাচুরেশনটা হঠাৎ ৯৩-তে নেমে গিয়েছিল। ওঁর শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল। আমি একটু কথা বলাতে যেটা আবার আস্তে আস্তে ৯৫ হল। পরিস্থিতি খুব ওঠানামা করছে।'
১৯৪২ সালে অধুনা বাংলাদেশের বরিশালে জন্ম প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। ছোট থেকেই নিজের লেখা এবং সুরে গান গাইতেন তিনি। একাধারে গায়ক এবং গীতিকার হিসেবেই পরে অবতীর্ণ হন। তাঁর কণ্ঠে 'আমি বাংলায় গান গাই' আর 'ডিঙা ভাসাও সাগরে', এই দুটি গানের আবেদন চিরন্তন।






















