![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
পুজোয় অতিমারী উদ্বেগ ভোলাতে তৈরি কাকাবাবু, বলছেন সৃজিত, হল খুলবে তো? থাকছে প্রশ্ন
এবার পুজোয় কাকাবাবুকে বড় পর্দায় আনার বড় সিদ্ধান্ত নিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। এবার পুজোয় এসভিএফের ব্যানারে হলে মুক্তি পাচ্ছে কাকাবাবু ট্রিলজির শেষ ছবি ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’। সেই সঙ্গে থাকছে কাকাবাবুর চরিত্রে ফের প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে দেখার অমোঘ আকর্ষণ।
![পুজোয় অতিমারী উদ্বেগ ভোলাতে তৈরি কাকাবাবু, বলছেন সৃজিত, হল খুলবে তো? থাকছে প্রশ্ন Srijit Mukherjee next movie Kakababur Pratyaborton planned release cinema halls during Durga Puja uncertainty amidst corona situation পুজোয় অতিমারী উদ্বেগ ভোলাতে তৈরি কাকাবাবু, বলছেন সৃজিত, হল খুলবে তো? থাকছে প্রশ্ন](https://static.abplive.com/wp-content/uploads/sites/3/2020/07/09173417/WhatsApp-Image-2020-07-09-at-12.03.26-PM.jpeg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: নতুন জামা বোধহয় আলমারি বন্দি হয়েই থাকবে এবার দুর্গাপুজোয়! মণ্ডপে মণ্ডপে হয়তো দেখা যাবে না চেনা ভিড়। হয়তো কোপ পড়বে সারারাতের প্যান্ডেল হপিং, ঠান্ডা চাউমিন, এগরোল, ফুচকাতেও। বাঙালির সবচেয়ে বড় আনন্দোৎসবের ওপরেই একটা বিরাট প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে করোনা।
এই অনিশ্চয়তা আর মনখারাপের হদিশ মনে হয় পেয়েছিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। তাই অতিমারীর আবহে যাঁরা পুজোয় ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন, তাঁদের দুঃখ ভোলাতে বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করলেন পরিচালক! গন্তব্য? সুদূর মাসাইমারা, কিনিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা!
বেড়াতে যাওয়ার সঙ্গী মনের মতো হলে, আনন্দ দ্বিগুণ হয়। সৃজিত ভোলেননি সেই কথাও। তাই পুজোয় বিদেশ ভ্রমণে বাঙালির সফরসঙ্গী করলেন প্রয়াত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি - কাকাবাবুকে। মণ্ডপ ছেড়ে যাবেন নাকি ‘জঙ্গলের মধ্যে এক হোটেল’-এ? প্রশ্ন করছেন সৃজিত।
যদিও করোনা পরিস্থিতিতে এখনও বন্ধ রয়েছে সমস্ত সিনেমা হল ও মাল্টিপ্লেক্স। অন্যদিকে ক্রমশ বেড়েই চলেছে সংক্রমণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা করছে, জুলাইয়ের শেষের দিকে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রসাশন। সিনেমাহল, মাল্টিপ্লেক্স ও থিয়েটার খোলার ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি।
এই পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে একের পর এক ছবি মুক্তি পাচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। কিন্তু সেই মাটিতে দাঁড়িয়েই প্রযোজকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে পুজোয় কাকাবাবুকে বড় পর্দায় আনার বড় সিদ্ধান্ত নিলেন সৃজিত। এবার পুজোয় এসভিএফের ব্যানারে হলে মুক্তি পাচ্ছে কাকাবাবু ট্রিলজির শেষ ছবি ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’। সেই সঙ্গে থাকছে কাকাবাবুর চরিত্রে ফের প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে দেখার অমোঘ আকর্ষণ।
কিন্তু কেন এই সাহসী পদক্ষেপ? যেখানে ভারতে সেপ্টেম্বর নাগাদ আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড সংখ্যক হওয়ার আশঙ্কা,সেখানে এই সিদ্ধান্ত ঝুঁকিপুর্ণ নয়? এবিপি আনন্দকে মোবাইল ফোনে সৃজিত বললেন, ‘কাকাবাবু কোনও ছোট বাজেটের ছবি নয়। তাই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাকাবাবু মুক্তির কথা কখনওই ভাবিনি। বড় পর্দাকে মাথায় রেখেই ছবির শ্যুটিং করা। করোনাভাইরাসের প্রকোপে ভেবেছিলাম হয়তো ছবির মুক্তি পিছিয়ে যাবে। আগামী গরমের ছুটিতে হয়তো দর্শক দেখতে পেতেন কাকাবাবুকে। পুজোর সময় ছবি মুক্তির সিদ্ধান্ত একটা বড় ঝুঁকি তো বটেই। আমি তো আমার কাজ শেষ করে ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ছবি রিলিজের সিদ্ধান্ত প্রযোজকের। এই সাহসিকতার জন্য প্রযোজককে সাধুবাদ।’
অন্যদিকে এই একই প্রশ্নের উত্তরে এসভিএফ প্রযোজনা সংস্থার মুখপাত্র বললেন, ‘বড় পর্দায় ছবি মুক্তির সিদ্ধান্ত কিছুটা ঝুঁকি তো বটেই। তবে আমরা আশা করছি পুজোর মধ্যে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হবে। আর বড় পর্দায় মুক্তি ছাড়া ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’-এর কাছে আর কোনও বিকল্প নেই। এই বিগ বাজেটের ছবি ওটিটিতে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। পরিস্থিতি যদি খারাপের দিকে যায় তাহলে ছবি মুক্তি পিছিয়ে দিতে হবে।‘
সামাজিক দূরত্ব মেনে কী করে পুজোয় ঠাকুর দেখবে বাঙালি! এই প্রশ্ন যখন ঘোরাফেরা করছে বড়, মেজো, সেজো, ছোট সমস্ত পুজো কমিটির মাথায়, তখন কাকাবাবুর দর্শক নিয়ে আত্মবিশ্বাসী সৃজিত। বললেন, ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন ট্রিলজির শেষ গল্প। এর আগে মরুভূমি, পাহাড়ে গিয়েছেন কাকাবাবু। এবার পালা জঙ্গলের। এতদিন ধরে কাকাবাবু চলেছে। কাজেই শেষ ছবিতে কাজ করবে দর্শকদের নস্টালজিয়া।‘ পরিচালক আরও বললেন, ‘লকডাউনে সকলে অনেকদিন থেকে বাড়িতে বন্দি। তারপর বাড়ির বাইরে বেরোনোই একটা ইমোশানাল ব্যাপার। মানুষকে নর্মালসিতে ফেরার আনন্দ দেবে কাকাবাবু। সেটাও জুড়ে যাবে ছবির সঙ্গে।’ পরিচালকের সঙ্গে সহমত প্রযোজনা সংস্থাও। পুজোয় এই একটি ছবি মুক্তির ঘোষণাই করেছে এসভিএভ। তাদের মুখপাত্র বললেন, ‘কাকাবাবুর নস্টালজিয়াই ইউএসপি। আমরা আশা করছি মানুষ কাকাবাবুর হাত ধরেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইবেন। তাই পুজোর মরসুমে দর্শকদের হলমুখী করতে কাকাবাবুই ছিল আমাদের কাছে বেস্ট অপশন।’
বিনোদন থাকবেই, তবে সেইসঙ্গে মাথায় রাখতে হবে সুরক্ষাকেও। সৃজিত বলছেন, ‘আশা করব মাল্টিপ্লেক্স সহ অন্যান্য হলগুলি সুরক্ষাবিধি মেনেই খোলা হবে। আমরা যদি থ্রিডি চশমা পরে ছবি দেখতে পারি তেমন করেই অভ্যাস করে নিতে হবে মাস্ক, স্যানিটাইজারের ব্যবহার। হলের বাইরে বাধ্যতামূলকভাবে রাখতে হবে স্যানিটাইজার। যাঁরা মাস্ক পরে আসবেন না তাঁদের দেওয়া হবে।‘ দীপাবলি ও শীতেও মুক্তি পাওয়ার কথা সৃজিতের আরও ২টি ছবি। ততদিনে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা পরিচালকের। তবে ছবি মুক্তির পথে কাঁটা হবে না তো কোভিড? কিছুটা হলেও দোলাচলে রয়েছেন পরিচালক, প্রযোজক থেকে শুরু করে কাকাবাবু অনুরাগীরাও।
কাকাবাবুতে এবার নতুন চরিত্র হিসাবে যোগ দিয়েছেন ‘একেনবাবু’ অনির্বাণ চক্রবর্তী। সেই সঙ্গেই রয়েছেন কয়েকজন বিদেশি অভিনেতাও। কিন্তু ট্রিলজির শেষভাগেও ঘুচছে না সন্তু-রিনির দূরত্ব।
লকডাউন ভৌগলিক দূরত্ব তৈরি করে দিয়েছে সৃজিতের প্রেমেও। আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ থাকার জেরে ঢাকায় আটকে রয়েছেন স্ত্রী মিথিলা ও কন্যা আইরা। আর কলকাতায় বসে সৃজিত বলছেন, ‘জুলাইয়ের পরের দিকে বা অগাস্টে চালু হতে পারে আন্তর্জাতিক বিমান। এখন কেবল ফিঙ্গার ক্রসড রেখে অপেক্ষা করছি। কাকাবাবু রিলিজের আগে ওরা অবশ্যই চলে আসবে।‘ সেইসঙ্গে সৃজিত জানান, কাকাবাবু নিয়ে বিশেষ উৎসাহী আইরা। সেও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে কবে বড় পর্দায় আসবে কাকাবাবু।
এই ছবির পর আপাতত কাকাবাবু সিরিজ থেকে একটু ব্রেক নেবেন সৃজিত। বললেন, ‘ফেলুদা করছি। একই সময় দুটো গোয়েন্দা গল্প বানানো অসুবিধা। আবার পরে সুযোগ হলে কাকাবাবু নিয়ে ভাবব।‘ অপেক্ষা কেবল মাল্টিপ্লেক্স ও সিনেমাহল খোলার সবুজ সংকেতের। সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক এগোলে পুজোয় আম বাঙালির মন ভালো করার অপেক্ষায় কাকাবাবু।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)