Rituporno Ghosh Birthday: ঋতুরাজের জন্মদিনে ফিরে দেখা তাঁর জীবনকথা
বেঁচে থাকলে বয়স হত ৫৮ বছর। ঋতুপর্ণ ঘোষের আকস্মিক চলে যাওয়াকে আজও মেনে নিতে পারেনি বাংলার চলচ্চিত্র জগত এবং তাঁর আপামর ভক্তকূল। আজ এই প্রবাদপ্রতিম পরিচালকের জন্মদিনে আরও একবার ফিরে দেখব তাঁর পথচলা।
কলকাতা: ১৯৬৩ সালে আজকের দিনেই কলকাতায় জন্ম হয় বাংলা সিনেমার অন্য়তম শ্রেষ্ঠ পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের। পরিচালকের বাবা-মা দুজনেই চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর বাবা সুনীল ঘোষ ছিলেন তথ্যচিত্র-নির্মাতা ও চিত্রকর। ছাত্র হিসেবে তিনি যথেষ্ট মেধাবী ছিলেন। তাঁর পড়াশোনা দক্ষিণ কলকাতায় সাউথ পয়েন্ট স্কুলে। এর পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
কর্মজীবনের শুরুতে কটি বিজ্ঞাপন সংস্থার ক্রিয়েটিভ আর্টিস্ট হিসেবে বেশকিছু সময় কাজ করেছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। ১৯৮০-র দশকে বাংলা বিজ্ঞাপনের দুনিয়ায় বেশ কিছু জনপ্রিয় শ্লোগান লেখেন তিনি। ১৯৯২ সালে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের একটি উপন্যাস অবলম্বনে ঋতুপর্ণ ঘোষ তৈরি করলেন তাঁর প্রথম ছবি 'হিরের আংটি'। তাঁর দ্বিতীয় ছবি 'উনিশে এপ্রিল' ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায়। ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা পাওয়ার পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও সফল হয়। ১৯৯৫ সালে ছবিটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পায়। এরপর 'দহন' মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে। ১৯৯৮ সালে এই ছবি শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পায়। এই ছবির জন্য় দুই অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও ইন্দ্রাণী হালদার একসঙ্গে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পান।
১৯৯৯ সালে মুক্তি পাওয়া 'অসুখ' ছবিতে এক অভিনেত্রী ও তার আয়ের উপর অনিচ্ছুকভাবে নির্ভরশীল বাবার সম্পর্ক দেখিয়েছেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। এরপর ২০০২ সালে মুক্তি পায় 'বাড়িওয়ালি'। এই ছবির জন্য কিরণ খের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পান।
২০০৪ সালে ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রথম হিন্দি ছবি 'রেনকোট' মুক্তি পায়। এই ছবিটি ও. হেনরির ছোটোগল্প "দ্য গিফট অফ দ্য ম্যাজাই" অবলম্বনে নির্মিত। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ঐশ্বর্যা রাই ও অজয় দেবগন। এই ছবির শ্যুটিং শেষ হয়েছিল ১৭ দিনে। ছবিটি শ্রেষ্ঠ হিন্দি ছবি বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পায়।
ঋতুপর্ণ ঘোষ ছিলেন ভারতের এলজিবিটি সম্প্রদায়ের এক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। জীবনের শেষ বছরগুলিতে তিনি রূপান্তরকামী জীবনযাত্রা নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করেন।
দুই দশকের কর্মজীবনে ঋতুপর্ণ ঘোষ বারোটি জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কারেও সম্মানিত হয়েছিলেন। ২০১৩ সালের ৩০ মে কলকাতার বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ঋতুরাজের।