Adenovirus : করোনার মতোই ভয়ঙ্কর হচ্ছে শ্বাসকষ্ট, শিশুদের স্থান হচ্ছে ভেন্টিলেশনে, কীভাবে এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগ ? ABP Live Exclusive
Adenoviruses Treatment : করোনার মতোই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাস। সবথেকে বেশি ঘায়েল মাস কয়েকের শিশুরা। ভরে যাচ্ছে ICU
কলকাতা : করোনার ( Coronavirus ) তৃতীয় ঢেউ ছাড়েনি শিশুদের । ঘরে ঘরে ওমিক্রন ( Omicron ) ঘায়েল করেছিল একরত্তিদের। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই বাচ্চারা আক্রান্ত হয়েছিলেন জ্বর কাশি, শ্বাসকষ্টয়। অনেক শিশু হাসপাতালেও ভর্তি হয়। সেই দুঃস্বপ্ন ভোলার নয়। আবারও এক অসুখ মহামারীর আকার নিয়েছে। আবার জ্বর , সর্দির সঙ্গে প্রকট শ্বাসকষ্ট। এবার ভিলেন অ্যাডিনোভাইরাস ( Adenovirus )। এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাস প্রসূন গিরি।
খুব পরিচিত নাম নয় অ্যাডিনোভাইরাস। যদিও এই ভাইরাসের আক্রমণ নতুন কিছুও নয়। এটি একটি ডিএনএ ভাইরাস। সর্দি কাশি হাঁচির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে। কোভিডের মতোই হাঁচি, কাশি, লালারসের মাধ্যমে ছড়ায়। তাই আক্রান্ত ব্যক্তির সামনাসামনি থাকলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছেই।
অ্যাডিনোভাইরাস কীভাবে ঘায়েল করছে শিশুদের
ডা. প্রভাস প্রসূন গিরি জানালেন, অ্যাডিনোভাইরাস থেকে পেটের অসুখ করে। সংক্রমণ হতে পারে চোখেও। যাকে আমরা কঞ্জাঙ্কটিভাইটিস বা জয়বাংলা বলে থাকি। আক্রান্ত কেউ যদি সুইমিং পুলে স্নান করেন, তাহলে ওই পুলে স্নান করা অন্যদেরও একই হাল হতে পারে। অ্যাডিনোভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার ধরন তাই করোনার মতোই।
আমারদের রাজ্য ও কলকাতা শহরে চলছে অ্যাডিনোভাইরাসের এপিডেমিক। এর আগে ২০১৮-১৯ সালেও একবার বড় আকার নিয়েছিল এই ভাইরাসের সংক্রমণ । কিন্তু তা এতটা বৃহদাকার ধারণ করেনি।
কারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে
এই ভাইরাস সব বয়সী বাচ্চাদেরই কাবু করছে। প্রভাস প্রসূন গিরি জানালেন, সবথেকে বেশি প্রকোপ একেবারে কয়েক মাসের শিশু থেকে বছর দুয়েকের শিশুদের মধ্যে। এঁদের উপর রোগের দাপট এতটাই যে, ভর্তি করতে হচ্ছে আইসিইউ-তে। রাখতে হচ্ছে ভেন্টিলেশন সাপোর্টেও। বরং একটু বড় বাচ্চাদের সামান্য জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টে রেখেই কয়েকদিনে রেহাই দিচ্ছে ভাইরাসটি।
উপসর্গ
- সর্দি
- কাশি
- জ্বর
- গলা ব্যথা
- চোখ লাল হওয়া
- ডায়ারিয়ার মতো উপসর্গ হচ্ছে।
অন্যান্য ভাইরাল ফিভারের মতো জ্বর তাড়াতাড়ি ছাড়ছে না। ডা. প্রভাস প্রসূন গিরি জানালেন, অ্যাডিনোভাইরাস থেকে হওয়া জ্বর ১৩-১৪ দিন পর্যন্তও স্থায়ী হচ্ছে। প্যারাসিটামল খেয়েও ছাড়ছে না। জ্বরটা খুবই কষ্টকর হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে চোখ লালও হচ্ছে। আর সবথেকে কষ্টকর যে বিষয়টি তা হল শ্বাসকষ্ট ও কাশি। কাশি থামতেই চায় না। কোনও কোনও সময় টানা এক মাস স্থায়ী হয় এই কাশি। ফুসফুসের উপর খুব খারাপ প্রভাব বিস্তার করে এই অসুখ। এই লক্ষণগুলি দেখলেই তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে । সোয়াব টেস্টেও ধরা পড়ে ভাইরাসের অস্তিত্ব। এছাড়া উপসর্গ দেখেও চিকিৎসা করা যায়।
কখন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে ?
বাচ্চা যদি একেবারে নেতিয়ে পড়ে, প্রস্রাব না হয়, জ্বর ছেড়ে গেলেও না উঠতে চায়, জোরে জোরে শ্বাস নেয়, তাহলে দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এক্ষেত্রে বাচ্চাকে জরুরি ভিত্তিতে ফ্লুইড দিতে হতে পারে।
অ্যাডিনোভাইরাস থেকে মৃত্যুভয় আছে, তবে ঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে। যেহেতু খুব ছোট বাচ্চারাই আক্রান্ত হচ্ছে, তাই এক্ষেত্রে আশঙ্কা একটু বেশ। নাইসেডে যে স্যাম্পলগুলি টেস্ট করা হয়েছে , তাতে দেখা গিয়েছে এবার অ্যাডিনোভাইরাসে স্ট্রেনগুলি খুবই ভয়ঙ্কর। তাই মৃত্যুভয় উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
কীভাবে সুরক্ষিত রাখবেন বাচ্চাদের?
চিকিৎসকরা মনে করছেন, বাচ্চারা মূলত স্কুল থেকেই এই ভাইরাস বয়ে আনছে। তাই কোনও শিশু আক্রান্ত হলে , তাকে স্কুলে না পাঠানোই শ্রেয়। ফের একবার মাস্ক, স্যানিটাইজারের অভ্যেসটা ঝালিয়ে নিন। বাড়ির বড়দের সর্দিকাশি , জ্বর হলে মাস্ক পরে থাকুন। সংক্রমণ এড়ান।
অ্যাডিনোভাইরাসের চিকিৎসা কোন ক্ষেত্রে কেমন এই নিয়ে সবিস্তারে বলেছেন ডা. প্রভাস প্রসূন গিরি। শুনুন সম্পূর্ণ ভিডিও।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )