Yoga Day 2022 Exclusive: মনের যোগে অবসাদ বিয়োগ
Yoga Benefits: মনের সঙ্গেও সুনির্দিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে যোগাসনের। নাহ, কোনও ফাঁকা তত্ত্ব নয়। সম্পর্কের একেবারে হাতেকলম প্রমাণ রয়েছে। গবেষণা একাধিক।
পায়েল মজুমদার, কলকাতা: টিভি হোক বা ফেসবুক, টুইটার। দিনভর যে দিকেই তাকিয়েছেন, সে দিকেই বিশ্ব যোগ দিবস উদযাপন। ঘুরেফিরে একটাই কথা। শরীর চাঙ্গা রাখতে যোগাভ্যাসের তুলনা নেই। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, শুধু শরীর নয়। মনের সঙ্গেও সুনির্দিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে যোগাসনের। নাহ, কোনও ফাঁকা তত্ত্ব নয়। সম্পর্কের একেবারে হাতেকলম প্রমাণ রয়েছে। গবেষণা একাধিক। তবে আপাতত একটি সমীক্ষার কথা আলোচনা করা যাক। বছর পাঁচেক আগেকার কথা।সারাহ শালিট নামে সান ফ্রান্সিসকোর অ্যালায়েন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্নাতকোত্তরের পড়ুয়ার সমীক্ষা- রিপোর্ট তোলপাড় ফেলে দেয়। ২৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে বয়স এমন ৫২ জন মহিলার উপর একটি সমীক্ষা করেছিলেন সারাহ।
কী ভাবে সমীক্ষা?
প্রথমেই অংশগ্রহণকারীদের ‘ডিপ্রেশন লেভেল’ বা অবসাদের মাত্রা মেপে নেন সারাহ। এজন্য সুনির্দিষ্ট ‘মেজারিং স্কেল’ ব্যবহার করেছিলেন তিনি। তার পর অংশগ্রহণকারীদের দুটি আলাদা গ্রুপে ভেঙে দেন। এবার পরের ধাপ। একটি গ্রুপকে প্রতি সপ্তাহে দুদিন করে যোগাভ্যাস করানো হয়। টানা আট সপ্তাহ এই নিয়ম মেনে প্রশিক্ষণ চলে। দ্বিতীয় গ্রুপটিকে কিছু করতে দেওয়া হয় না। স্রেফ অপেক্ষা করতে বসিয়ে রাখা হয়। তৃতীয় ও শেষ ধাপে সমীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করেন সারাহ। দেখা যায়, যে গ্রুপটিকে নিয়মিত যোগাভ্যাস করানো হয়েছিল তাদের ডিপ্রেশনের উপসর্গ দ্বিতীয় গ্রুপটির তুলনায় অনেকটাই কমে
গিয়েছে। এমন একাধিক গবেষণা এর মধ্যেই আকৃষ্ট করেছে বিশেষজ্ঞদের। ঠিক কী ভাবে যোগাভ্যাস অবসাদের উপসর্গ কমায়, সেটা জানতে আরও গবেষণা চলছে। মনোচিকিৎসার ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপির
পাশাপাশি যোগাভ্যাসের প্রতিও অনেকে ভরসা করছেন। তবে এ রাজ্যে এখনও এই ধারা অতটা প্রচলিত নয়। ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রির অধ্যাপক ও মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেল জানালেন, সুনির্দিষ্ট ভাবে যোগাভ্যাস না হলেও অল্প বা মাঝারি অবসাদের চিকিৎসায় যে কোনও ধরনের ফিজিক্যাল এক্সারসাইজে জোর দেন। তবে নতুন গবেষণায় আশার আলো দেখছেন তিনি। বললেন, ‘অবসাদ ও উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে যোগের ইতিবাচক ভূমিকা একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত। শুধু তাই নয়। অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার বা ওসিডি নিয়ন্ত্রণেও মাইন্ডফুলনেসের মতো বিষয় অত্যন্ত উপযোগী হতে পারে।’ আর
ইতিহাসগতভাবে বৌদ্ধধর্ম ও হিন্দুধর্মের পাশাপাশি যোগাসনের সঙ্গেও যে মাইন্ডফুলনেসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, সেটা এর মধ্যেই মনে করিয়েছেন মনোবিদদের একাংশ।
কী বলছেন মনোবিদরা:
‘মাইন্ডফুলনেস’-এর ভূমিকা একবাক্যে মানছেন মনোবিদ প্রশান্ত কুমার রায়। বললেন, ‘এই ধরনের ডিপ ব্রিথিং এক্সারসাইজ যে উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে, সেটা তো প্রতিষ্ঠিত। তা ছাড়া শরীরে এন্ডরফিনের মতো রাসায়নিক ক্ষরণের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ধরনের যোগাসনের ব্যবহার বাড়ছে। তবে এ ধরনের ব্যবহার সত্যিই কতটা লাভজনক, সেটা নিয়ে গবেষণা জরুরি। পাশাপাশি দেখতে হবে, কোনও কিছুই যেন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধান ছাড়া না হয়।’ ইঙ্গিতটি স্পষ্ট। মনোচিকিৎসার ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপির চেনাশোনা পদ্ধতির সঙ্গে যোগাভ্যাসের ব্যবহার বাড়ছে ঠিকই। তবে দুটি বিষয় মনে রাখা দরকার। প্রথমত, মন ও যোগের যোগাযোগ বুঝতে আরও গবেষণা জরুরি। দুই, যোগাভ্যাসকে আপাতত সাইকোথেরাপির বিকল্প নয়, দোসর হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। অতএব সাবধান! যোগের ভরসায় হঠাৎ করে সাইকোথেরাপি বন্ধ করবেন না। ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে এগোন। তবে টুকিটাকি যোগাভ্যাসে অসুবিধা নয়, বরং ফয়দা হলেও হতে পারে।
আরও পড়ুন: 'আত্মমুক্তির সাধনাই হল যোগ', স্বামীজীর দেখানো পথে কীভাবে হাঁটবে সাধারণ মানুষ?
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )