ভারতে ৯৯ শতাংশ মানুষের হার্ট অ্যাটাকের পিছনে এই ৪ কারণ ! সতর্ক না হলেই শেষ
চারটি বিষয়কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে, হৃদয়ের যত্ন নেওয়া যায় সহজেই। জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে দরকারি কিছু পরিবর্তন আনতে পারলেই হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে।

হৃদরোগ। ভারতে নীরব মহামারী। হৃদরোগের চিকিৎসাতেও এসেছে নানা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। এতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু কিছুটা ঠেকানো গেলেও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া আটকানো যাচ্ছেই না। এতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। বরং মারাত্মক।
হৃদরোগের পিছনে নানা কারণ রয়েছে। তবে কয়েকটি কারণ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তার মধ্যে সবথেকে সাধারণ কারণ - উচ্চ রক্তচাপ, খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি, মানসিক চাপ। এই সমস্যাগুলি হৃদরোগের জন্য সবচেয়ে বড় কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চারটি বিষয়কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে, হৃদয়ের যত্ন নেওয়া যায় সহজেই। জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে দরকারি কিছু পরিবর্তন আনতে পারলেই হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
চিকিৎসকদের মতে, যাঁরা এখন কম বয়স থেকেই খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন না, তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যা হতে পারে একদম কম বয়সেই। সময় থাকতে শরীর যে ইঙ্গিত দেয় , তা চিনে নেওয়া দরকার। সেইসঙ্গে ২০ পেরোলেই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি। তা থেকে হার্ট অ্যাটাকের বিপদ থেকে বাঁচা যায়।
ভারতে কেন বাড়ছে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা?
ভারতে হৃদরোগ এখন মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে দেশে হৃদরোগে আক্রান্তের ঘটনা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। নগরায়ন, পরিবর্তনশীল জীবনযাত্রা, খারাপ খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ, ধূমপান এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ হার্টের রোগের প্রধান কারণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই সমস্যার প্রভাব সুদূরপ্রসারী।
হৃদরোগ কেন হয়?
হৃদরোগের মূল কারণগুলির মধ্যে একটি রক্ত সরবরাহকারী ধমনীতে বাধা তৈরি হওয়া বা ব্লকেজ। এর ফলে রক্তের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। হৃদপিণ্ডের পেশীগুলিতে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না । সময়মত চিকিৎসা না হলে এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। বিজয়ওয়াড়ার শ্রীমাতা হার্ট ক্লিনিকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ টি. সুমন কুমারের মতে, "বেশিরভাগ হৃদরোগ বা স্ট্রোক হঠাৎ করে হয় না, বরং এর ঝুঁকির কারণগুলি আগে থেকেই আমাদের শরীরে বিদ্যমান থাকে, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, স্থূলতা এবং ধূমপান।"
শরীরে লুকিয়ে থাকা চারটি বড় বিপদ
ডাক্তারদের মতে, বেশিরভাগ মানুষের প্রথম হৃদরোগ হঠাৎ করে হয় না, বরং এর পিছনে কিছু নীরব ঝুঁকির কারণ লুকিয়ে থাকে, যেমন
উচ্চ রক্তচাপ – দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।
কোলেস্টেরল – রক্তে উচ্চ LDL কোলেস্টেরল ধমনীতে ফ্যাট জমা করে, যা রক্ত প্রবাহে বাধা দেয়।
ব্লাড সুগার বা ডায়াবেটিস– রক্তে উচ্চ শর্করার মাত্রা হৃদরোগের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে।
ধূমপান – তামাকজাতীয় জিনিসও হৃদপিণ্ড এবং ধমনী উভয়েরই ক্ষতি করে।
এই সমস্ত কারণ ধীরে ধীরে সারা শরীরের উপর প্রভাব ফেলে। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা জরুরি।
কীভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাবেন?
সময় থাকতে সতর্ক হলে হৃদরোগের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যেতে পারে। এর জন্য খাদ্যতালিকায় কিছু পরিবর্তন করতে হবে, যেমন রোজকার খাবারে ফল, সবুজ শাকসবজি, গোটা শস্য এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রাখা আবশ্যক।
বসে বসে কাজ হলেও রোজ ব্যায়াম করুন, যার মধ্যে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিটের হাঁটা বা যোগা থাকা উচিত। ধূমপান ত্যাগ করুন। তামাক সেবন বন্ধ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি তাৎক্ষণিকভাবে কমে যায়। সময়মতো পরীক্ষা করা হলে, ডাক্তাররা প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসা শুরু করতে পারেন। বিশেষ করে ৩০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি বা যাদের পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস আছে, তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত।
দাবিত্যাগ: এই তথ্য গবেষণা এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এটিকে চিকিৎসা পরামর্শ হিসাবে বিবেচনা করবেন না। কোনো নতুন কার্যকলাপ বা ব্যায়াম শুরু করার আগে আপনার ডাক্তারের বা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।






















