'যা গেছে তা যাক', দীর্ঘদিনের সম্পর্কে ইতি? কীভাবে সামলাবেন নিজেকে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কঠিন সময়টায় কয়েকটা দিক একটু মাথায় রাখলেই সহজ হবে মুভ অন। কীভাবে? চলুন না, একবার চেষ্টা করা যাক।
দুরত্ব বাড়ি যোগাযোগ নিভে যায়... দীর্ঘদিনের প্রেম-সফর। সেখান থেকে সম্পর্কে হঠাৎ বিচ্ছেদ। অনেক সময়েই মেনে নেওয়া কঠিন হয়। এক পক্ষ স্বাভাবিক ছন্দে এগিয়ে গেলেও, দেখা যায় অন্য পক্ষের কাছে তা পাহাড়প্রমাণ বোঝা হয় দাঁড়াল। মন খারাপ, রাগ, অভিমানে ছন্দপতন হয় জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতেও, অস্বাভাবিক নয়, তবে স্বাভাবিক ছন্দেও তো ফিরতে হবে, নাকি? কোনও যুক্তিই যেন এই সময় খাটে না। তবুও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কঠিন সময়টায় কয়েকটা দিক একটু মাথায় রাখলেই সহজ হবে মুভ অন। কীভাবে? চলুন না, একবার চেষ্টা করা যাক।
মেনে নিন: প্রথমেই মেনে নিন সম্পর্কটা শেষ। নিজেকে বোঝান, যেমন পুরনো জামা নষ্ট হয়ে যায়, ক্রিমের টিউব ফুরিয়ে যায়, তেমনই সম্পর্কও শেষ হয়। কিছুই চিরস্থায়ী নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদল যে স্বাভাবিক। অপেক্ষা করবেন না। প্রাক্তন যে আর ফিরবে না, সেটা সবার আগে মেনে নিন।
যোগাযোগে ইতি টানুন: প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগে ইতি টানুন। স্যোশাল মিডিয়া বা কমন ফ্রেন্ড সার্কেলেও তাঁর খবরাখবরে উঁকি মারবেন না। যা গেছে তা যাক।
নিজেকে সময় দিন: সময় নিন। জোর করে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করা বোকামি। দীর্ঘদিনের স্মৃতি হঠাৎ একদিন সকালে উঠে ফর্ম্য়াট মেরে দেওয়া সম্ভব নয়। জোর করে কিছু করতে গেলেই তা দ্বিগুণ প্রতিক্রিয়া নিয়ে ফিরে আসতে পারে। তাই নিজেকে সময় দিন।
বন্ধু, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান: কথা বলুন, যে চলে গিয়েছে তারজন্য যা রয়েছে তা উপেক্ষা করবেন না। বন্ধু, পরিবার নিয়ে সময় কাটান। পরামর্শ নিন। আপনি যেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সেখান থেকে আপনার ঘুরে দাঁড়ানোতে সাহায্য করতে পারে আপনার কাছের মানুষরাই। সাহায্য চাইতেই পারেন। কথা বলুন। যাঁরা আপনার খারাপ সময়ে থাকতে চাইছে তাঁদের ফেরাবেন না।
'নিজেকে ভালবাসো, তুমি এবার' মনে রাখবেন আপনার সঙ্গীর থেকেও বেশি সঙ্গীর সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলোয় বেশি মন খারাপ হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতি ম্লান হয়ে যাবে ঠিক। নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। কাজে মন দিন। অবসরে সিনেমা দেখুন, বই পড়ুন। আপনার যে শখগুলো চাপা পড়তে বসেছিল সেগুলো আরেকবার ঝালিয়ে নিন দেখি এবার। কিন্তু খবরদার মাদকের নেশায় ডুব দেবেন না।
কারও সঙ্গে নিজের তুলনা নয়: তুলনা টানবেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বিচ্ছেদের পর হীনমন্যতায় ভুগতে থাকেন অনেকেই। বারবার খামতিগুলো প্রকট হয় সামনে। মনে রাখবেন আপনার চরিত্রে আপনিই সেরা। এই জায়গায় আপনার প্রতিযোগী কেউ নেই।
অকারণ দোষারোপ নয়: বিচ্ছেদ মানেই আপনার সঙ্গী বা আপনার কোনও বড় দোষ ছিল এমনটা নাও হতে পারে। দুটো ভিন্ন মানুষ সারাজীবন পাশাপাশি তালে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে এমন কোনও কথাই নেই। তাই আর পাঁচটা পরিণতির মতো এটাও সহজভাবে নিন।
মন নয়, এবার মস্তিষ্ক দিয়ে ভাবুন: যুক্তিগুলো এড়িয়ে যাবেন না। যেই সমস্যাগুলোর জন্য আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সেই সমস্যা জীবনভর বইতে পারতেন তো? তারচেয়ে বরং এই বিচ্ছেদ থেকে যে শিক্ষা পেলেন তা দিয়ে অভিজ্ঞতার ঝুলি পূর্ণ করুন।
হটকারি সিদ্ধান্ত নেবেন না: হতেই পারে বিচ্ছেদের পরপরেই আপনার পার্টনার অন্য আরেকটি সম্পর্কে গিয়েছে। প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবণতায় আপনিও চটজলদি একটা সম্পর্কে জড়াতে গেলে ভুব করবেন। তাই যেখান থেকে শুরু হয়েছিল সেখানে ফিরেই বলি, সময় দিন।