Breast Milk : মায়ের দুধে ক্ষতিকারক মাত্রায় ইউরেনিয়াম? কিডনি, হাড়ের বড় ক্ষতির আশঙ্কা? গবেষণার ফলে চাঞ্চল্য
ইউরেনিয়াম প্রায় সর্বত্রই বিদ্যমান থাকতে পারে, তবুও এর উচ্চ মাত্রা গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। কিডনি এবং হাড়ের ক্ষতি, ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং বিকাশজনিত সমস্যা ঘটাতে পারে বলে গবেষকদের আশঙ্কা ।

মায়ের দুধ অমৃত সমান। এমন কথা বহু প্রচলিত। জন্মের পর থেকে ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে এক্সক্লুসিভলি মায়ের দুধ খাওয়ানোরও পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। মায়ের দুধ শিশুকে যেভাবে শক্তি দেয়, পুষ্টি দেয়, তার বিকল্প নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বিহারে স্তন্যদানকারী মায়েদের বুকের দুধে ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা বিশেষজ্ঞরা সমস্যা তুলে ধরেছেন।এইমস-নতুন দিল্লির ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের করা গবেষণায় একটি মারাত্মক তথ্য সামনে আসছে। গত শুক্রবার ওপেন-অ্যাক্সেস সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা। বিহারে স্তনদায়ী মায়েদের নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়। ৪০টি বুকের দুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাতে পাওয়া গিয়েছে ইউরেনিয়াম। এই মিনারেল এতটাই উচ্চ মাত্রায় রয়েছে যে ৭০% শিশুর ভয়ানক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গবেষণায় আশঙ্কা এই ইউরেনিয়াম শিশুর শরীরে গেলে নবজাতকের কিডনির ক্ষতি হতে পারে। হতে পারে হাড়ের ক্ষতিও । বিহারের গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে বসবাসকারী মায়েদের উপর এই গবেষণা করা হয়েছে। ভোজপুর, সমস্তিপুর, বেগুসরাই, খাগরিয়া, কাটিহার এবং নালন্দার মতো জেলায় গবেষণা করা হয়েছে। গবেষকদের আশঙ্কা, এই অঞ্চলের শিশুদের জন্য ইউরেনিয়ামের মাত্রা ঝুঁকির কারণ হতে পারে। ইউরেনিয়াম প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন তেজস্ক্রিয় উপাদান । ভূগর্ভস্থ জলকে দূষিত করতে পারে এই খনিজ। ইউরেনিয়াম প্রায় সর্বত্রই বিদ্যমান থাকতে পারে, তবুও এর উচ্চ মাত্রা গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। কিডনি এবং হাড়ের ক্ষতি, ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং বিকাশজনিত সমস্যা ঘটাতে পারে বলে গবেষকদের আশঙ্কা ।
গবেষণায় ৪০ জনের বুকের দুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাতে ইউরেনিয়াম পাওয়া গিয়েছে। মহাবীর ক্যান্সার সংস্থান অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার-পাটনা, লাভলি প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটি-ফাগওয়ারা এবং এইমস-নতুন দিল্লির গবেষকরা এই গবেষণাটি করেন। ৭০% শিশু ইউরেনিয়ামের এমন মাত্রার সংস্পর্শে এসেছে যা সঙ্কট তৈরি করতে পারে।
তবে এই নিয়ে অহেতুক উদ্বেগ করতে বারণ করছেন চিকিৎসকদের একাংশই। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ডঃ অরুণ গুপ্ত বলেন, এই নিয়ে অহেতুক ভয় তৈরি করা হচ্ছে । শিশুদের জন্য মায়ের দুইই সর্বোত্তম পুষ্টি। চিকিৎসকদের অনেকেই বলছেন, বছরের পর বছর ধরে মায়ের দুধ খাচ্ছে শিশুরা। কিন্তু স্বাস্থ্যের উপর কোনও প্রভাব পরিলক্ষিত হয়নি। গবেষকরা যে পদ্ধতি অনুসরণ করে এই ফল পেয়েছেন, সেটি একটি জায়গা ও নির্দিষ্ট কিছু স্যাম্পলের উপর ভিত্তি করে। তাই এটি থেকে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া উচিত হবে না।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেই ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের প্রাক্তন গ্রুপ ডিরেক্টর ডঃ দীনেশ কে আসওয়ালের বক্তব্যও সামনে রাখা হয়েছে, বুকের দুধ শিশুদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে এমন কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনও মেলেননি। চিকিৎসকরা বলছেন ইউরেনিয়াম একটি প্রাকৃতিক উপাদান। মানুষের শরীরে ইউরেনিয়াম তো থাকেই। যেমন, হাড়ে, লিভারে অন্যান্য টিস্যুতে। সেখানে মায়ের দুধে যদি ইউরেনিয়াম থেকেও থাকে, তাহলে তা নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই। কারণ তা মাত্রাতিরিক্ত কিনা, আদৌ তা কোনও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে কিনা তা দেখতে হবে।






















