রিল দেখার নেশা? অজান্তেই হাইজ্যাক ব্রেন! বুদ্ধিলোপ, স্মৃতিনাশ...আরও ভয়ঙ্কর ভবিষ্যৎ! মারাত্মক দাবি রিসার্চে
গবেষণা বলছে, টানা রিল বা শর্টস দেখার অভ্যেস অ্যালকোহলের মতো প্রভাব ফেলতে পারে মস্তিষ্কে। খারাপ প্রভাব পড়তে পারে স্নায়ুর উপর. মনোযোগ , এমনকী স্মৃতিশক্তিতেও।

কলকাতা : রিল দেখে সময় কাটানোর অভ্যেস এখন আমাদের অনেকেরই । শিশু থেকে বৃদ্ধ, রিলে আসক্ত সিংহভাগ । ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুকে রিল, ইউটিউব শর্টস স্ক্রোল করা অনেকের কাছে নেশার মতোই। মনটাকে ফুরফুরে রাখার উপায় বলে ভুল করেন অনেকেই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অভ্যেস মস্তিষ্কের পক্ষে চূড়ান্ত ক্ষতিকর। গবেষণায় উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিঃসন্দেহে যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চিকিৎসকদের। গবেষণা বলছে, টানা রিল বা শর্টস দেখার অভ্যেস অ্যালকোহলের মতো প্রভাব ফেলতে পারে মস্তিষ্কে। খারাপ প্রভাব পড়তে পারে স্নায়ুর উপর. মনোযোগ , এমনকী স্মৃতিশক্তিতেও।
তিয়ানজিন নরমাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কিয়াং ওয়াং-এর নেতৃত্বে নিউরোইমেজে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় দাবি, টানা রিল দেখার অভ্যেস মস্তিষ্কের সার্কিটগুলিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। মদ্যপান বা জুয়ার আসক্তির থেকে এই সমস্যা কম কিছু নয় ! গবেষক ওয়াংয়ের দাবি, এই সব স্বল্প-দৈর্ঘ্যের ভিডিও জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে হুমকির মতো ! চিনে মানুষ প্রতিদিন গড়ে ১৫১ মিনিট করে রিল দেখেন। পরিসংখ্যাং বলছে, সে-দেশে ৯৫.৫ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রিলে মগ্ন থাকতে ভালবাসেন। এতে সাময়িক ভাবে মন খুব ভাল হয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে তা মনোযোগ, ঘুম এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। সেই সঙ্গে মানসিক চাপ ও স্ট্রেসের কারণ হয়। কমতে পারে বুদ্ধির বিকাশ ও মনে রাখার ক্ষমতা।
ডোপামিন হরমোন হল গুরুত্বপূর্ণ নিউরোট্রান্সমিটার। আমরা যখন মন-ভাল করা কোনও কাজ করি, ভাল খাবার খাই বা প্রিয়জনদের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটাই, তখন এই ডোপামিনই আনন্দ বা তৃপ্তির অনুভূতি তৈরি করে। এবার কোনও কিছু ভাল লাগা থেকে যখন আসক্তির পর্যায়ে চলে যায়, তখন ডোপামিন বেশি ক্ষরণ হয় আর মানসিক উন্মাদনা তৈরি করে। গবেষকদের মনে, যখনই কেউ অ্যালকোহলে আসক্ত হন বা গেমিং বা রিলে মজে যান তখই ডোপামিনের মাত্রা বেড়ে যায়। যত বেশি ডোপামিন নিঃসৃত হয়, তত বেশি নিউরো-সংযোগ তৈরি হয়। আসক্তির মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডোপামিন শরীরের সিস্টেমকে হাইজ্যাক করতে থাকে। ক্রমাগত রিল দেখে গেলে ক্ষতিগ্রস্থ হল মস্তিষঅকের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সের কার্যকলাপ। মস্তিষ্কের এই অংশটি মনোযোগ, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। এছাড়া রাতের বেলা স্ক্রলিং ঘুমের মান এবং স্মৃতিশক্তির ক্ষতি করে। ব্যাঘাত ঘটায় মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাসের কার্যকারিতায়। এতে যে কারও শেখার ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। এই কারণেই যারা রিল বেশি দেখেন তাঁদের মনোযোগ কমতে থাকে। স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়।
গবেষকরা রিলের প্রতি আসক্তিকে মদ্যপানের মতোই ক্ষতিকর হিসেবে দেখছেন। কারণ,অতিরিক্ত রিল দেখলে আচরণ বেশ আবেগতাড়িত হয়ে যায়। বুদ্ধি প্রয়োগের ক্ষমতা হ্রাস পায়। আচরণে নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তাই যাঁদেরই রিল দেখার অভ্যেস আছে, তারা সতর্ক হোন, সন্তানদেরও সতর্ক করুন।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )






















