Karnataka Doctor on Covid19 : ২০ টাকায় ডাক্তারি ! রোগীর কাছে 'ভগবান' এই চিকিৎসক
আকাশছোঁয়া ভিজিটিং চার্জের রাস্তায় নামেননি তিনি। রোগীর স্বার্থে ন্যূনতম ডাক্তারি ফি রেখেছেন ২০ টাকা। কর্ণাটকের ৭৭ বছরের কে মলহার রাও মাল্লে এখন রোগীর কাছে 'ভগবান'।
কালাবুরাগি: আকাশছোঁয়া ভিজিটিং চার্জের রাস্তায় নামেননি তিনি। রোগীর স্বার্থে ন্যূনতম ডাক্তারি ফি রেখেছেন ২০ টাকা। কর্ণাটকের ৭৭ বছরের কে মলহার রাও মাল্লে এখন রোগীর কাছে 'ভগবান'।
১০ জনের বেশি রোগী দেখেন না। চেম্বারে ভিড় কমাতে ফি বাড়িয়েছেন হাজার টাকা। রোজনামচার জীবনে কিছুক্ষেত্রে এই ছবি দেখা যায়। সেখানে অনেকের ভিড়ে ব্যতিক্রম কর্ণাটকের '২০ টাকার ডাক্তার'। আদতে কালিবুরাগি জেলায় বাস। ২০১২ সাল পর্যন্ত গরিবদের থেকে এক টাকাও নিতেন না কে মলহার রাও মাল্লে। লক্ষ্য ছিল একটাই, বাবার দেখানো পথে অনড় থাকা। ৭৭ বছর বয়সে এসেও তাই লক্ষ্যে অবিচল ডাক্তারবাবু।
কিন্তু কেন ২০ টাকায় ডাক্তারি ? সংবাদ সংস্থা এএনআইকে মাল্লে বলেন, ''বাবার কথা মেনেই সমাজকর্মীর মতো জীবন কাটাই আমি। বিনামূল্যে গরিবদের চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলতেন বাবা। এটাই ছিল তাঁর স্বপ্ন। ছেলে হয়ে বাবার সেই স্বপ্নপূরণ করে চলেছি আমি।'' এ প্রসঙ্গে ঠাকুমার কথা তোলেন ডাক্তারবাবু। তিনি বলেন, ''অসুস্থ হয়ে মারা যায় আমার ঠাকুমা। সেই সময় ডাক্তার ডাকার মতো টাকা ছিল না বাবার কাছে। সেই থেকে ধনুক ভাঙা পণ করেন বাবা। আমাকে ডাক্তারি পড়ান। পরে ডাক্তারি পাশ করলে রোগীদের থেকে অত্যধিক ফি নিতে না করেন।''
মাল্লের জীবনপঞ্জি বলছে, ১৯৭৪ সালে এমবিবিএস পাশ করেন তিনি। তার ঠিক পরের বছর থেকেই শুরু করে দেন ডাক্তারি। সেই থেকে গরিবদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করতেন তিনি। তবে ২০১২ সালে প্রাইভেট ডাক্তারদের আইন আসার পরই ন্যূনতম ফি করে দেন ১০ টাকা। সম্প্রতি সেই ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা। যার সপক্ষে যুক্তিও দিয়েছেন মাল্লে।
ডাক্তারবাবু জানিয়েছেন, ৭৭ বছর বয়সেও এখনও ভাড়া থাকেন তিনি। সম্প্রতি বাড়িওয়ালা ভাড়া বাড়িয়েছেন। সাহায্যকারীদেরও বেতন দিতে হয় তাঁকে। তাই বাধ্য হয়েই এই ১০ টাকা ফি বৃদ্ধি। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে অসুস্থ হলে কে মলহার রাও মাল্লের কাছেই আসেন ভবানী সিং। ২০ টাকায় ডাক্তারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ''কেবল ভগবানই বলতে পারেন কীভাবে তাঁর চলে ? কোভিডের ভয়ে অনেক ডাক্তারবাবু এখন চেম্বার বন্ধ রেখেছেন। সেই সময় রোজ পাওয়া যাবে মাল্লেকে।''
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ডাক্তারবাবুর বেশিরভাগ রোগীই আসেন কাছের বস্তি এলাকা থেকে। দিনে ৭৫-১০০ জন রোগী দেখেন মাল্লে। এ প্রসঙ্গে ডাক্তারবাবু বলেন, ''কাছের বস্তিতে কোনও রোগীর আমার ওষুধে কাজ হলে খুব আনন্দ হয়। বাবার কথা মনে পড়ে যায়।" পাল্টা মাল্লের প্রতি বিশ্বাসের অন্ত নেই এলাকাবাসীর। এক ডাকেই তাঁর ঠিকানা বলে দিতে পারেন সকলে। তবে মাল্লে ডাকে না চিনলেও '২০ টাকার ডাক্তার' হাঁকলেই গন্তব্য দেখিয়ে দেবেন যে কেউ।