রাজ্যে শিক্ষা রাজনীতির দখলে, আক্রমণ ধনকড়ের, পাল্টা জবাব শিক্ষা দফতরের
শিক্ষা দফতরের জবাব, ‘বিশ্ববিদ্যালয়-আচার্য যোগাযোগ অনুমোদন সাপেক্ষ।'
কলকাতা: শিক্ষা নিয়ে ফের রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার, সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্য প্রশাসনকে একহাত নেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বলেন, ‘রাজ্যে শিক্ষায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। যাঁরা কলেজে ভর্তি হয়েছেন, তাদের আর্থিক শোষণ করা হয়েছে। গত ২ বছর ধরে এই পরিস্থিতি চলছে।’
রাজ্যপালের দাবি, ‘উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের কথা বললেও শোনেনি রাজ্য। তাঁর মতে দেশের কোনও রাজ্যে এমন পরিস্থিতি নয়। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখি। কী করে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য প্রশাসন, প্রশ্ন তুলি চিঠিতে। রাজ্যপালের অভিযোগ, ‘৬ মাস পরেও মুখ্যমন্ত্রী উত্তর দেওয়ার সময় পাননি।
রাজ্যপাল জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মাথায় রেখে ভার্চুয়াল বৈঠকের আবেদনও করেছিলেন। বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল বৈঠকের প্রস্তাব দিই। সরকার বলে, এমন পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল বৈঠকের নিয়ম নেই।’
রাজ্যপালের মতে, ‘শিক্ষায় অবহেলা আঘাত করে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। তিনি বলেন, এই রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থা রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত। রাজনীতির ফাঁস ক্রমেই শিক্ষাব্যবস্থার উপর চেপে বসছে।
ধনকড়ের দাবি, রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থার মান নামছে, প্রাক্তন উপাচার্যরাও এ নিয়ে একমত। তিনি বলেন, ২৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষামন্ত্রী নিশ্চয়ই এ নিয়ে অবহিত। কোনও দেশ ঠিকঠাক শিক্ষা পেলে তবেই এগোতে পারে। রাজ্যের মানুষের কাছে সরকারের দায়বদ্ধতার কথা বলাই আমার কাজ।’
রাজ্য প্রশাসনের সমালোচনা করে কটাক্ষের সুরে রাজ্যপাল বলেন, ‘আমাদের মাথার উপর ছাদ ভেঙে পড়ছে। কেন আমার ভার্চুয়াল বৈঠকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত? রাজ্য নিজেও তা জানে না।’
ধনকড় মনে করেন, ‘পড়ুয়াদের এক বছর নষ্ট হলে, ক্ষতিপূরণ হবে কীভাবে? এই সমস্ত ইস্যুকে অবহেলা করা হচ্ছে। গোটাতেই পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। আমার সঙ্গে আলোচনা করছেন না কেন?’ রাজ্যকে প্রশ্ন রাজ্যপালের।
এদিকে, রাজ্যপালের এই ভূমিকার পাল্টা সমালোচনা করেছে রাজ্য প্রশাসন। শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ‘আচার্য-উপাচার্য ভার্চুয়াল বৈঠকের অনুমোদন সরকার দেয়নি। রাজ্যপাল যে ট্যুইট করেছেন তাতে শিক্ষা দফতর বিস্মিত!’
রাজ্যপালের অভিযোগের উত্তরে শিক্ষা দফতরের জবাব, ‘বিশ্ববিদ্যালয়-আচার্য যোগাযোগ অনুমোদন সাপেক্ষ। শিক্ষা দফতরের মারফৎ করতে হবে যোগাযোগ। আচার্যের কোনও সচিবালয় থাকতে পারে না। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৮(৫) নম্বর ধারায় উল্লেখ।
রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে রাজ্যপালের অভিযোগ থাকলে শিক্ষা দফতরকে জানাতে হবে। বলা হয়েছে, ‘শিক্ষা দফতরকে জানালে তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী।’