নাটকীয়! বিজেপিতে যোগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দল ছাড়লেন মেহতাব
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিজেপি-মেহতাব বিচ্ছেদ।
কলকাতা: একদিনেই সম্পর্কের বিচ্ছেদ বিজেপি আর মেহতাব হোসেনের! ভারত তো বটেই, সারা বিশ্বের রাজনৈতিক মানচিত্রে এই ঘটনা বিরল, যেখানে যোগদানের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নব্য সদস্য শিবির ছাড়লেন। বিধানসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আগুনে মেজাজে মোদি-শাহকে বিঁধছেন তখন কার্যত তৃণমূলের ‘ঘরের ছেলে’-কে তুলে নিয়ে চমক দিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের প্রাক্তন অধিনায়ক, ময়দানের পরিচিত ‘জেনারেল মিডফিল্ডার’ মেহতাবের বিজেপি-তে যোগ নিয়ে বাঙালির উৎসাহও কম ছিল না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেছিলেন, দীপেন্দু বিশ্বাস, রহিম নবির মতো এবার নির্বাচনী লড়াইয়ে দেখা যাবে তাঁকে। সেই ফানুস চুপসে যেতে সময় লাগল মাত্র ২৪ ঘণ্টা।
২১ তারিখ বিজেপিতে যোগ। ২২ তারিখ ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্টে মেহতাব জানিয়ে দিলেন, “আজ থেকে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমি যুক্ত নই। আমার এই সিদ্ধান্তের জন্য সকল শুভানুধ্যায়ীদের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”
তিনি আরও লিখেছেন, “যে মানুষগুলো আমাকে মেহতাব করে তুলেছে তাঁদের জন্যই আমার রাজনীতিতে প্রবেশ করার ইচ্ছা ছিল। মনে হয়েছিল রাজনীতি করলে হয়ত আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছতে পারব। তাই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলাম। তারপর এক অদ্ভুৎ উপলব্ধি হল, যাঁদের জন্য রাজনীতিতে আসা তাঁরাই আমাকে অনুরোধ করল সরে আসতে। তাঁরা আমাকে ফুটবলার হিসেবেই দেখতে চায়। তাই অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিলাম, নিজেকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে নেব।”
তৃণমূলের টিকিটে লড়ে সাংসদ হয়েছেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অর্জুন পুরস্কার জয়ী ফুটবলার। একবার নয়, তিন তিনবার। নির্বাচনী লড়াইয়ে দেখা গিয়েছে মেহতাবের সতীর্থ দীপেন্দু বিশ্বাস এবং বন্ধু রহিম নবিকেও। বসিরহাট থেকে জিতে বিধানসভার সদস্য হয়েছেন দীপেন্দু। হারিয়েছেন বিজেপির হেভিওয়েট শমীক ভট্টাচার্যকে। পাণ্ডুয়া থেকে দাঁড়িয়েছিলেন নবি। তবে হেরে যান। মেহতাবের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই আশা করা যাচ্ছিল তিনিও সম্ভাব্য পদ্ম প্রার্থী। তবে সম্পর্ক একদিনও টিকল না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিজেপি-মেহতাব বিচ্ছেদে আপাতত তাঁর নির্বাচনে লড়ার জল্পনায় জল পড়ল। তবে এটাও ঠিক, অতীতে ময়দানে দলবদলের যে দৃষ্টান্ত মেহতাব রেখেছেন, তাতে আগামী দিনে আরও একবার জার্সি বদল হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।