এক্সপ্লোর

'শিল্প হোক কৃষিমুখী, তবেই ঘুচবে বেকারি, কৃষিও হোক বাজারমুখী'

কৃষিকে বাণিজ্যমুখী করে তুললে, দেশে বেকারত্ব কমবে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। দুর্ভিক্ষের মত মর্মান্তিক পরিস্থিতি এড়ানো যাবে। দ্বিতীয় মোদি সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তিতে লিখছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সুমন মুখোপাধ্যায়।

কৃষি সঙ্কট। স্বাধীনোত্তর ভারতে এই শব্দবন্ধটি বহুশ্রুত, বহু পরিচিত ও দেশের কঠিনতম সমস্যাগুলির একটি। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, কৃষিক্ষেত্রে ৩.৫ শতাংশ বেশি উৎপাদন হয়েছে এই বছর, শস্য উৎপাদিত হয়েছে ২৯৫ মিলিয়ন টন । অন্যদিকে আমরা দেখছি বহু কৃষকের দুর্দশা চিত্র। অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যা করেছেন শত-শত কৃষিজীবী। কেন এই বিপরীত চিত্র? কেন ভাল উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও আচ্ছে-দিন আসছে না তাঁদের? এর কারণ দীর্ঘকালীন অর্থনৈতিক অসুখ। কৃষকদের ৮৫ শতাংশই ক্ষুদ্র-প্রান্তিক, ভূমিহীন, চুক্তিবদ্ধ কৃষি-শ্রমিক। এঁরা ঋণগ্রস্ত, দুর্দশাগ্রস্ত। করোনা হানা ও উমপুন - জোড়া ধাক্কায় বড়সড় ক্ষতির সম্মুখীন দেশের কৃষিব্যবস্থা। ভারতের অর্থনীতির বুনিয়াদ কৃষি। স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরও বিশ্ববাণিজ্যে ভারতের অংশ ২ শতাংশেরও কম। সেক্ষেত্রে বলা যায়, এবছর যদি করোনা হানা ভারতের গ্রামগুলিতে না হত, তাহলে আগামী অর্থনৈতিক বছরে ভারত দ্রুততম বৃদ্ধির দেশ হতে পারত। ভারতে প্রান্তিক শ্রেণির কৃষকদের ২০ শতাংশ হারে কৃষি ঋণে সুদ দিতে হয়। নাবার্ড রিপোর্ট বলছে, ৬০ শতাংশ কৃষকই প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ পান না। গ্রামীণ এলাকায় চিকিৎসা ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। দারিদ্র্য, রোগভোগ, অনাহার, তাদের নিত্যসঙ্গী। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ 'আত্মনির্ভরশীল ভারত'-প্যাকেজের যে বিশ্লেষণ দিয়েছেন, তাতে দেখা গেছে প্রতি কৃষকের দৈনিক মজুরি ২০ টাকা করে বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে MNREGA কর্মসংস্থান বছরে মাত্র ১০০ দিনের জন্য। এই পরিস্থিতিতে এই বরাদ্দ আদৌ যথেষ্ট নয়। এতে সমাধান তো কিছুই হল না, বরং ছদ্মবেশী বেকারত্ব বাড়ল। ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজের মধ্যে কৃষিক্ষেত্রে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা, যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগন্য। সরকার যা পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জনসংখ্যার মোট ৬০ শতাংশ, যাঁরা কৃষির সঙ্গে যুক্ত, তাদের প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই নয়। এর থেকে অন্তত ১০ গুণ বেশি বরাদ্দ প্রয়োজন ছিল, অর্থাৎ ১০ লক্ষ কোটি টাকা। তাছাড়াও এই মুহূর্তে প্রয়োজন ছিল কৃষকদের হাতে অন্তত ৪ লক্ষ কোটি টাকা নগদ পৌঁছে দেওয়া। যাতে এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে তাঁরা খাদ্যশস্য কিনে বাঁচতে পারেন। করোনা পরিস্থিতিতে ৪ মাস উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। যদি ২০ লক্ষ কোটি টাকা, জিডিপির ১০ শতাংশ হয়, তাহলে বছরের এক তৃতীয়াংশ সময়, কাজ বন্ধ থাকার জন্য বরাদ্দ তিনগুণ হওয়া উচিত ছিল। ন্যূনতম ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা উচিত ছিল। এছাড়া অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় ফিসক্যাল স্টিমুলেশন কিছুই দেওয়া হয়নি। প্রতিটি কৃষকের হাতে হাতে নগদ পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। রাজ্য সরকারের মারফতও এই নগদ না দিয়ে রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম, মাদ্রাসা সংগঠন বা অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া যেত। মনে রাখতে হবে গত ৪০ বছরে, কৃষিপণ্যের দাম ১৯ গুণ বেড়েছে, যেখানে শহুরে মানুষের বেতন ও মজুরি বেড়েছে ১৫০ গুণ। এখানেই গ্রামীণ ও শহুরে অর্থনীতির মধ্যে ফারাক তৈরি হয়ে যায়। গরিব চাষীরা আরও গরিব হয়ে পড়েছে। ধনীরা ধনীতর হয়েছে। তাতে অভাব ও অবসাদ তীব্র হয়েছে চাষীদের মধ্যে। প্রায় ৩ লাখ ৪৫ হাজার চাষীর আত্মহননের ঘটনা ঘটেছে গত ২০ বছরে। এই সমস্যার সমাধান তিনটি রাস্তায় হতে পারে, প্রথমত উৎপাদন বৃদ্ধি, দ্বিতীয় দাম নিয়ন্ত্রণ, তৃতীয়ত 'পাবলিক পলিসি' নির্ধারণ। এই তিনটি হাতিয়ারের মাধ্যমেই বদলানো যেতে পারে প্রান্তিক চাষীদের সমস্যা। সমাধানের কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হবে, কৃষিক্ষেত্রে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের কথা। এর পয়লা ধাপই হল কনট্র্যাক্ট ফার্মিং। ইন্দোনেশিয়ায় কনট্র্যাক্ট ফার্মিং করে চালের উৎপাদন ভারতের থেকে আড়াই গুণ বেশি। ভারতে কৃষির কর্পোরেটাইজেশনই এই সময়ের প্রধান দাবি। তাতে ৮৫ শতাংশ প্রান্তিক চাষী শস্যের সঠিক দাম পাবে। বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ছোট চাষীদের থেকে সঠিক দামে ফসল কিনে নেবে। মধ্যসত্ত্বভোগীরা প্রান্তিক শ্রেণির প্রাপ্য অংশ কেড়ে নিতে পারবে না। শস্যের মান ভাল হবে। এই প্রসঙ্গে আইটিসি-র উদাহরণ আনা যেতে পারে। যারা, ভোজ্যতেল, বাসমতী চাল, থেকে বিভিন্ন কৃষি ও দুগ্ধজাত দ্রব্যে বিনিয়োগ করেছে। শুধু তাই নয়, ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্ম ই-চৌপাল তৈরি করে তারা, যেখানে সয়াবিন, গম, কফি, চিংড়ি ইত্যাদি বিক্রির ব্যাপারে ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্রামীণ কৃষকদের সাথে সরাসরি সংযোগ করা যাবে। প্রান্তিক চাষীদের বাঁচাতে গেলে সমবায় পদ্ধতি প্রয়োজন। এই প্রসঙ্গে ডেয়ারি-ক্ষেত্রে গুজরাতের হোয়াইট রেভেলিউশনের কথা বলতেই হবে। এটাই ভারতের কৃষিক্ষেত্রেরও বাঁচার উপায়। ওয়ালমার্ট, বিগ বাজার স্পেনসারের মত আরও সংস্থার এই মুহূর্তে এগ্রিচারাল কর্পোরেটাইজেশনে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। যাতে চাষীরা ঠিকঠাক দাম পায়। উন্নত মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে ফসল বিক্রি করতে পারে। কৃষিজাত পণ্য বিক্রির জন্য ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি হোক। এই সুবিধে দিতে কৃষিক্ষেত্রেও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার হোক। অনেকে মনে করেন, কৃষিতে নজর বেশি দিলে শিল্পক্ষেত্র অবহেলিত হবে। কিন্তু বিষয়টা ঠিক এর উলটো। বরং ইন্টিগ্রেটেড রুরাল ডেভেপলমেন্ট মডেল গ্রহণ করলে কোনও শিল্প তো পিছিয়ে পড়বেই না, বরং শিল্প ক্ষেত্র চাহিদা ৮ গুণ বাড়বে। আর্থিক মন্দা থেকে বাঁচবে বহু শিল্প। এই মডেল গৃহীত হলে প্রয়োজন হবে আরও সিমেন্ট,বিদ্যুতের। দরকার পড়বে যানবাহন, প্যাকেজিং, ওয়্যার হাউস, কোল্ড স্টোরেজ-এর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল দরকার। রুরাল ক্রেডিট, মাইক্রো ফিনান্স ও প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের পরিকাঠামো প্রয়োজন। এক কথায় বলতে গেলে ক্যাপিটাল ইনটেনসিভ ও ক্যাপিটাল এক্সটেনসিভ ডেভেলপমেন্ট দরকার। কোভিড-পরিস্থিতিতে নির্মলা সীতারমণের ঘোষণায় ক্যাপিটাল ইনটেনসিভ ডেভেলপমেন্ট সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা নেই। কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে ও যেভাবে হয়েছে, তা আদৌ যথেষ্ট নয়। নজর দেওয়া হয়নি উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে। কৃষকদের স্বার্থে অত্যাবশকীয় পণ্য আইনে সংশোধনের যে ঘোষণা করেছেন সীতারমণ, তা অনেক আগেই করা উচিত ছিল, তাতে প্রান্তিক কৃষকরা হালে পানি পেতেন। মধ্যসত্ত্বভোগীদের মুনাফা হ্রাস হত। নির্মলা সীতারমণের ঘোষণায়, কৃষিজ পণ্য বিক্রিতে নয়া আইন আনা হয়েছে। পচনশীল পণ্য পরিবহণে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি ঘোষণা হয়েছে। হিমঘরে শস্য মজুতেও ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। গত ২ মাসে কৃষকদের ১৮,৭০০ কোটি টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। ভেষজ চাষে বরাদ্দ ৪ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। আরও বেশি নজর দেওয়ার প্রয়োজন ছিল ভারতের ডেয়ারি শিল্পে। স্ক্যান্ডেনেভিয়া থেকে আমরা দুগ্ধজাত জিনিস, চকোলেট, চিজ, কর্ন ইত্যাদি কিনি। আমরাও কিন্তু দুগ্ধজাত দ্রব্যের উৎপাদনে বিশেষ নজর দিয়ে এভাবেই নিজেদের উন্নত জায়গায় নিয়ে যেতে পারি। যেখানে আমাদের পশুপালন ক্ষেত্রের অবস্থা স্ক্যান্ডেনেভিয়া থেকে অনেক উন্নত। অস্ট্র্রেলিয়াও এক্ষেত্রে বড় উদাহরণ। যারা কৃষিভিত্তিক হয়েও বিকশিত দেশ হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে উজ্জ্বল। গঙ্গার দুই তীরে স্বল্প পরিসরে আমাদের দেশে ফুল চাষ, রেশমকীট চাষ ও ভেষজ চাষ করা হয়। কিন্তু হিমালয় ও অন্যান্য পাহাড়ের বিশাল ঢাল পড়ে আছে। তা কাজে লাগানো গেলে ফুল ও ভেষজ শিল্পে অনেক উঁচুতে পৌঁছাতে পারত ভারত। সেদিকে এই মুহূর্তে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন আছে। এর থেকে অনেক ভেষজ ওষুধ, পণ্য তৈরির সুযোগ হবে। এক্ষেত্রে লাভের মুখ দেখতে খুলে দিতে হবে বেসরকারি বিনিয়োগের দরজা। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তাঁর ঘোষণায়, যে জায়গার যা স্পেশ্যালাইজেশন, সেই অনুসারে কৃষিজ পণ্য উৎপাদনের কথা বলেছেন। তাঁর এই ভাবনা আদতে দক্ষিণ কোরিয়ার কৃষি-মডেলের অনুপ্রেরণায়। সেখানে এই পদ্ধতিতে চাষ করে দ্রুত উন্নতির মুখ দেখেছে কৃষি। তবে এই মুহূর্তে কৃষির স্পেশ্যালাইজেশন হওয়া উচিত একেবারে জেলাভিত্তিক স্তরে। মৌমাছি-পালনও ভারতের কাছে এই মুহূর্তে কর্মসংস্থানের বড় ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে। বহু মানুষ মৌমাছি-পালক হিসেবে কাজ করবে। মধু থেকে এমন কিছু দ্রব্য উৎপাদন হয় যা দন্ত চিকিৎসা, পোড়ার চিকিৎসায় দারুণ কাজ দেয়। আমরা যে বি-ওয়্যাক্স আমদানি করি, তাও মৌমাছি পালন করে দেশেই তৈরি হতে পারে। এতে একইসঙ্গে কর্মসংস্থান তৈরি হবে, রফতানিযোগ্য দ্রব্য তৈরি করবে। এই বিষয়ে এক জার্মান সংস্থা কয়েক বছর আগে বাংলায় কাজ শুরু করেছিল। আরও একটি বিষয়, নির্মলা সীতারমণের ঘোষণায় কোথাও উল্লেখ নেই, তা হল রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্টে বিনিয়োগ। মিশরের মতো গরিব দেশ আমাদের থেকে তিন গুণ বেশি বিনিয়োগ করেছে আর অ্যান্ড ডি-তে। আর সেখানে ভারতে মোট কৃষি-বিনিয়োগের ৩ শতাংশ মাত্র বিনিয়োগ হয় এই ক্ষেত্রে। বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শিল্পকে কৃষিমুখী করাই অর্থনীতিতে রেনেসাঁ আনতে পারে। সেই সঙ্গে বেকারত্ব সমস্যায় দীর্ঘমেয়াদি সুরাহা করতে পারে। ভারতে এখন শিল্পের যা পরিস্থিতি, তা কখনই বেকার সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে যদি প্রতি বছর ৭০ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী তৈরি হয়, তাহলে সরকারি ও বেসরকারি শিল্প ক্ষেত্র মিলিয়ে ১০ লক্ষ শূন্যপদ তৈরি হয়। এক্ষেত্রে কর্মসংস্থান একশ শতাংশ বাড়লেও প্রতিবছর দেশে ৫০ লক্ষ করে মানুষ কর্মহীন হয়ে থাকবে। এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হবে কৃষিকে বাজারমুখী করতে পারলে। কৃষি শুধু বেঁচে থাকার উপায় নয়, কৃষি হয়ে উঠুক বাণিজ্য। ভারত এমন এক দেশ, যেখানে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ কৃষিক্ষেত্রে নিযুক্ত। কিন্তু ভারতের জিডিপিতে এই ক্ষেত্র থেকে আসে মোটে ১৬ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানই বলছে কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতেই হবে। কৃষিকে কেন্দ্র করেই গড়তে হবে শিল্প। স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরও যেখানে ৫০ শতাংশ মানুষের জীবন কৃষি-নির্ভর, তখন এই দিকে নজর দিতেই হবে। কৃষিতে সনাতন পদ্ধতির ব্যবহার ছেড়ে আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারের কথা মাথায় রেখে উৎপাদন, দাম, প্যাকেজিং, মান সবটা স্থির করতে হবে। তাতে এই ক্ষেত্র থেকেই বিদেশি মুদ্রা আসবে। এগ্রিকালচারাল অন্ত্রপ্রনরশিপে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। নির্মলা সীতারমণের ঘোষণায় সেসব কোথায়? সেই সঙ্গে কৃষিবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশুনায় জোর দিতে হবে। কৃষিকে ব্যবসামুখী করতে গেলে, ৮৫ শতাংশ প্রান্তিক কৃষকদের উন্নতি করতে গেলে, হসপিট্যাল ও হসপিট্যাল কেয়ারেরও গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক। ফুড প্রসেসিং-এ গ্লোবাল চেন তৈরি করার জন্য MSMEর বিশাল বাজার আছে। এতে কৃষিক্ষেত্রের ৬০ শতাংশ ও MSME শিল্প ক্ষেত্রের ৬০ শতাংশ মানুষ হাত মিলিয়ে কাজ করতে পারবে। এতগুলো মানুষের কাজ মিলবে সর্বোপরি। অভাব দূর হবে। করোনা পরিস্থিতিতে যেসব পরিযায়ী শ্রমিক শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরে এল, তাদের কত শতাংশ আবার শহরে কাজে ফিরে যাবে? তারা যদি গ্রাম ছাড়তে না চায়, অন্যদিকে যদি গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান তৈরিও না হয়, তাহলে তারা কোথায় যাবে? এক্ষেত্রে আমার মনে হয়, শহুরে আদব কায়দার সঙ্গে পরিচিত পরিযায়ী শ্রমিকদের যদি কৃষিমুখী শিল্পে নিয়োগ করা যায়, তাহলে কাজে আসবে। নির্মলা সীতারমণের ঘোষণায় কৃষকদের থেকে ফসল কেনার দাম সম্পর্কে নীতি নির্ধারণ করা থাকলেও, গ্রাহকদের ঝুঁকির-এর বিষয়টি দেখা হয়নি। বছরের বিভিন্ন সময় দেখা যায়, আলু, টমেটো , পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যায়, গ্রাহকের নাগালের বাইরে চলবে যায়। এই বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। সর্বোপরি বলা যায়, কৃষিকে বাণিজ্যমুখী করে তুললে, দেশে বেকারত্ব কমবে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। দুর্ভিক্ষের মত মর্মান্তিক পরিস্থিতি এড়ানো যাবে। অন্যদিকে আরও একটি কথা বলা আবশ্যক। শুধুমাত্র অর্থনীতির স্বার্থে নয় বা গরিব মানুষকে দয়া করার মনোবৃত্তি নিয়ে নয়, কৃষিকে গুরুত্ব না দিলে, যে অর্থনৈতিক নবজাগরণের স্বপ্ন আমরা দেখছি, তা তো বাস্তবে হবেই না, উল্টে তৈরি হবে কৃষক বিক্ষোভ। যা ভবিষ্যতে প্রশাসনকেই বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। অনুলিখন: নিবেদিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement
Advertisement

সেরা শিরোনাম

Team India Flight: ঘরে ফেরার সময়েও নজির! বিশেষ রেকর্ড গড়ল রোহিত-বিরাটদের বিমানও
ঘরে ফেরার সময়েও নজির! বিশেষ রেকর্ড গড়ল রোহিত-বিরাটদের বিমানও
Hemant Soren: ফের ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত, শপথ নিয়েই ভোটবার্তা, চম্পাই-অস্ত্রে শান বিজেপি-র
ফের ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত, শপথ নিয়েই ভোটবার্তা, চম্পাই-অস্ত্রে শান বিজেপি-র
Narendra Modi in Space: মহাকাশ অভিযানে যাবেন মোদি! আশাবাদী ISRO প্রধান, কংগ্রেস বলল...
মহাকাশ অভিযানে যাবেন মোদি! আশাবাদী ISRO প্রধান, কংগ্রেস বলল...
Mamata Banerjee: এককালীন অবসরভাতা বেড়ে ৫ লক্ষ, প্যারা টিচার, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সুখবর মমতার
এককালীন অবসরভাতা বেড়ে ৫ লক্ষ, প্যারা টিচার, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সুখবর মমতার
Advertisement
ABP Premium

ভিডিও

Kolkata Municipality: মুখ্য়মন্ত্রীর বাড়ির কাছে সরকারি সম্পত্তি দখলমুক্ত করল কলকাতা পুরসভা। ABP Ananda LiveDengue In Bengal: বর্ষা আসতেই রাজ্য়ে ফিরেছে ডেঙ্গির ভয়! ABP Ananda LivePetrol Density: গাড়িতে তেল ভরার সময় কোন কোন বিষয়ে নজর রাখা দরকার? না রাখলে কী ক্ষতি হতে পারে?Bhupatinagar Incident: ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ডে প্রথম চার্জশিটেই বিস্ফোরক দাবি NIA-র! ABP Ananda Live

ফটো গ্যালারি

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
Team India Flight: ঘরে ফেরার সময়েও নজির! বিশেষ রেকর্ড গড়ল রোহিত-বিরাটদের বিমানও
ঘরে ফেরার সময়েও নজির! বিশেষ রেকর্ড গড়ল রোহিত-বিরাটদের বিমানও
Hemant Soren: ফের ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত, শপথ নিয়েই ভোটবার্তা, চম্পাই-অস্ত্রে শান বিজেপি-র
ফের ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত, শপথ নিয়েই ভোটবার্তা, চম্পাই-অস্ত্রে শান বিজেপি-র
Narendra Modi in Space: মহাকাশ অভিযানে যাবেন মোদি! আশাবাদী ISRO প্রধান, কংগ্রেস বলল...
মহাকাশ অভিযানে যাবেন মোদি! আশাবাদী ISRO প্রধান, কংগ্রেস বলল...
Mamata Banerjee: এককালীন অবসরভাতা বেড়ে ৫ লক্ষ, প্যারা টিচার, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সুখবর মমতার
এককালীন অবসরভাতা বেড়ে ৫ লক্ষ, প্যারা টিচার, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সুখবর মমতার
West Bengal Assembly: আমাদের দুর্বল ভাবা ভুল', রাজ্যপালকে নিশানা বিমানের, শপথ জটিলতার মধ্যে কাল বিশেষ অধিবেশন
আমাদের দুর্বল ভাবা ভুল', রাজ্যপালকে নিশানা বিমানের, শপথ জটিলতার মধ্যে কাল বিশেষ অধিবেশন
Bihar Bridge Collapse: ধসে নেমে গেল মাঝের অংশ, নদীতে বসে গেল থাম, বিহারে ফের ভাঙল সেতু, ১৭ দিনে ১২টি
ধসে নেমে গেল মাঝের অংশ, নদীতে বসে গেল থাম, বিহারে ফের ভাঙল সেতু, ১৭ দিনে ১২টি
Brain Eating Amoeba: মস্তিষ্ক খেকো অ্যামিবার সংক্রমণ, পুকুরে স্নান করে চরম পরিণতি কিশোরের
মস্তিষ্ক খেকো অ্যামিবার সংক্রমণ, পুকুরে স্নান করে চরম পরিণতি কিশোরের
Team India Victory Parade Live: বৃষ্টি ও ট্রাফিকের জন্যই পিছিয়ে যাচ্ছে প্যারেডের সময়, এখনও বিমানবন্দরেই রোহিতরা
বৃষ্টি ও ট্রাফিকের জন্যই পিছিয়ে যাচ্ছে প্যারেডের সময়, এখনও বিমানবন্দরেই রোহিতরা
Embed widget