লকডাউনে কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরেছিলেন, এখন ৭০ জনের কর্মসংস্থান করেছেন ওড়িশার রঞ্জন সাহু
ভুবনেশ্বর থেকে ১১০ কিমি দূরে পট্টামুন্ডাই ব্লকের গুন্থি গ্রামে রঞ্জন সাহু নিজের কাপড় তৈরির কারখানা চালু করেন। এই ইউনিটে ৪৫ টি সেলাই মেশিন বসানো হয়। প্রায় ৩,০০০ বর্গ ফুট এলাকাজুড়ে এই কারখানায় গত জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু হয় এবং অন্য রাজ্য থেকে ফেরা প্রায় ৭০ জনের এখানে কাজের বন্দোবস্ত হয়েছে।
ভুবনেশ্বর: দেশে করোনাভাইরাস মহামারী অনেকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সেইসঙ্গে এই ভাইরাস মোকাবিলায় জারি লকডাউনের কারণে কাজ হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। গত বছর দেশে করোনাভাইরাস জনিত লকডাউনের কারণে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। বাড়ি ফেরার পথে তাঁদের অবর্ননীয় দুঃখ কষ্টের ছবিও সামনে এসেছিল। কাজ হারিয়ে ঘরে ফেরাদের মধ্যে ছিলেন ৪০ বছরের রঞ্জন সাহুও। লকডাউন জারির প্রায় এক মাস পর গত বছরের এপ্রিলে কলকাতা থেকে বাড়িতে ফিরেছিলেন। যে গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করতেন, তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে গ্রামে ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁকে। ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়ার গুন্থি গ্রামে ফেরার পর তিনি নিজেই কাপড় তৈরির কারখানার শুরু করেন। আর পরে গ্রাম ও আশেপাশে গ্রামের প্রায় ৭০ জনকে নিজের কারখানায় কাজ দিয়েছেন রঞ্জন সাহু। যাঁরা রঞ্জন সাহুর কারখানায় কাজ করেন, তাঁদের অনেকেই অতিমারীর কারণে কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরেছিলেন।
রঞ্জন সাহু এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, বাড়িতে ফিরে বসেছিলাম। কোনও কাজ ছিল না। পরিবার ও আমার দিনগুজরানের জন্য কিছু সঞ্চয় ছিল। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম, এখানকার অনেক লোকের কাছেই সংসার চালানোর মতো বেশি সঞ্চয় নেই। তারা কাজ খুঁজছিল। আমার গ্রামের অনেকেই কেরল ও গুজরাতের সুরাত থেকে ফিরে এসেছিল, তারা কাপড়ের কারখানাকেই কাজ করত। সাত পাঁচ ভেবে, আমি নিজের মতো করে কিছু শুরু করার সিদ্ধান্ত নিই এবং এই ইউনিট চালু করি।
ভুবনেশ্বর থেকে ১১০ কিমি দূরে পট্টামুন্ডাই ব্লকের গুন্থি গ্রামে রঞ্জন সাহু নিজের কাপড় তৈরির কারখানা চালু করেন। এই ইউনিটে ৪৫ টি সেলাই মেশিন বসানো হয়। প্রায় ৩,০০০ বর্গ ফুট এলাকাজুড়ে এই কারখানায় গত জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু হয় এবং অন্য রাজ্য থেকে ফেরা প্রায় ৭০ জনের এখানে কাজের বন্দোবস্ত হয়েছে। এই কারখানায় এখন ফর্মাল শার্ট, টি শার্ট ও ট্রাউজার তৈরি হচ্ছে।
রঞ্জন সাহুর পড়াশোনা দশম শ্রেণী পর্যন্ত। পড়াশোনা ছেড়ে ১৮ বছর বয়সে শহরে কাজের খোঁজে চলে এসেছিলেন। প্রায় ২২ বছর দেশের বিভিন্ন শহরে জামাকাপড়ের কারখানায় কাজ করেছেন তিনি।