৩০ বছর প্রতিদিন ১৫ কিমি হেঁটে চিঠি পৌঁছে দেওয়া পোস্টম্যানের অবসর, নিষ্ঠাকে কুর্নিশ
একটানা ৩০ বছর, প্রতিদিন এই একই পথ ধরে হাঁটার পর তিনি থামলেন। এরপর আর চিঠি পৌঁছে দেবেন না, অবসর নিলেন পোস্টম্যান ডি শিবন।
নীলগিরি: চারিদিক ঘেরা ঘন সবুজে। মাথার ওপরে উজ্জ্বল নীল আকাশ। তার মধ্যেই মাথা তুলে দাঁড়িয়ে নীলগিড়ি। পাহাড়ের শরীর ছুঁয়ে অনবরত চলছে ঝর্ণার কলরব। কানে ভেসে আসছে কোকিলের কুহু কুহু আর বন্যদের গুঞ্জন। তামিলনাড়ুর নীলগিড়িতে প্রকৃতি কখনও বৃদ্ধ হয় না। সবসময়ই যেন নবযৌবনা। সবুজের স্বর্গপুরীর বুক চিরেই চলে গিয়েছে দিগন্ত বরাবর রেললাইন। সেই পথ ধরেই ৩০ বছর হেঁটেছেন পোস্টম্যান ডি শিবন।
একটানা ৩০ বছর, প্রতিদিন এই একই পথ ধরে হাঁটার পর তিনি থামলেন। এরপর আর চিঠি পৌঁছে দেবেন না, অবসর নিলেন পোস্টম্যান ডি শিবন।
শ্যামবর্ণ পোস্টম্যানের বয়স বেড়েছে, চামড়ায় টান ধরেছে। ঘন কালো চুলও আর নেই। তবে একগাল দাড়ি আর পক্ককেশের প্রৌঢ়ের প্রাণশক্তিতে কোনও দিনই ভাঁটার আসেনি। পোস্টম্যান শিবন ঝোলায় করে চিঠি বয়ে নিয়ে গিয়েছেন রোজ। কখনও দাঁতালের হানা থেকে বেঁচেছেন, কখনও আবার পড়েছেন ভাল্লুকের খপ্পরেও। কিন্তু দায়িত্ব অবিচল শিবনের কোনও দিনও অনুপস্থিতি দেখেনি নীলগিরির পর্বত।
সম্প্রতি আইএএস সুপ্রিয়া শাহুর একটি পোস্টে সংবাদ শিরোনামে এসেছেন ডি শিবন। ওই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়েছে। আইএএস সুপ্রিয়া শাহু ডি শিবনের একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, “পোস্টম্যান ডি শিবন রোজ ১৫ কিলোমিটার হেঁটে কুনুরে চিঠি পৌঁছে দেন। হাতির হানা, ভালুকের খপ্পর থেকে বেঁচে ঝর্ণা পেরিয়ে পিছল পথ ধেরে হেঁটে একটানা ৩০ বছর এই কাজ করছেন তিনি। গত সপ্তাহ তিনি অবসর নিলেন।”
Postman D. Sivan walked 15 kms everyday through thick forests to deliver mail in inaccessible areas in Coonoor.Chased by wild elephants,bears, gaurs,crossing slippery streams&waterfalls he did his duty with utmost dedication for 30 years till he retired last week-Dinamalar,Hindu pic.twitter.com/YY1fIoB2jj
— Supriya Sahu IAS (@supriyasahuias) July 8, 2020
ড শিবনের এই পেশাদারিত্বকে কুর্নিশ করেছেন আইএফএস প্রবীন কাসওয়ানও। ট্যুইটে তিনি লিখেছেন, “এই নিষ্ঠাকে কুর্নিশ। পড়তে পড়তেই অনায়াসেই অনুভব করা যায় একজন ফরেস্ট গার্ডের দায়িত্ব কতটা কঠিন। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হেঁটে যেতে গিয়ে হাতি, ভালুকের হানায় অনেকের মৃত্যুও হয়। পদাতিকের মতো এই পোস্টম্যান সব প্রশংসার অধিকারী।”