Ahmedabad Plane Crash: আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় সমান্তরাল তদন্ত আমেরিকার, অযাচিত হস্তক্ষেপ নয়, জানুন নেপথ্যকারণ
Air India Plane Crash: গত ১২ জুন গুজরাতের আমদাবাদে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার AI171 বিমানটি।

আমদাবাদ: ভারতের মাটিতে এত বড় বিমান বিপর্যয় আগে ঘটেনি। আমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভেঙে পড়ায় উদ্বিগ্ন অন্য দেশগুলিও। ব্রিটেন ইতিমধ্যেই তদন্তে যুক্ত হতে চেয়ে ভারতের কাছে আবেদন জানিয়েছে। তাদের একটি তদন্তকারী দলও এসে পৌঁছেছে ভারতে। পাশাপাশি, আমেরিকাও এই বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে নেমেছে। কিন্তু ভারতের মাটিতে বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে আমেরিকা করবে কেন, সেই নিয়ে কৌতূহলী অনেকেই। তবে এই ঘটনা অস্বাভাবিক নয় একেবারেই। (Ahmedabad Plane Crash)
গত ১২ জুন গুজরাতের আমদাবাদে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার AI171 বিমানটি। বিমানে সওয়ার ২৪২ জনের মধ্যে মাত্র একজন বেঁচে ফিরেছেন। মারা গিয়েছেন বহু সাধারণ মানুষও। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। দেশীয় সংস্থা যেমন তদন্ত করছে, তেমনই ভারতে এসে পৌঁছেছে আমেরিকার National Transportation Safety Board-এর সদস্যরা। আমেরিকার বেসামরিক বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা Federal Aviation Administration, ব্রিটেনের বেসামরিক উড়ান সংস্থা Civil Aviation Authority-র প্রতিনিধিরাও এসে পৌঁছেছেন। (Air India Plane Crash)
আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় সমান্তরাল তদন্ত চালাচ্ছে আমেরিকা। তবে এই প্রথম এমন কোনও ঘটনা ঘটছে না। ৭৮ বছর আগের শিকাগো কনভেনশন চুক্তির অধীনেই আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে নেমেছে আমেরিকা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার মুখে, ১৯৪৪ সালে Convention of International Civil Aviation চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা শিকাগো কনভেনশন চুক্তি নামে পরিচিত। বিমান পরিষেবার উপর ভবিষ্যতের দুনিয়া নির্ভরশীল হয়ে পড়বে জেনেই ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যাতে আকাশপথে পরিবহণ ব্য়বস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যাত্রী নিরাপত্তার সুনিশ্চিতকরণ ঘটে, প্রত্যেক দেশ যাতে যাত্রী নিরাপত্তার প্রতি দায়বদ্ধ থাকে।
বর্তমানে ওই শিকাগো কনভেনশন চুক্তির প্রযুক্তিগত মাপকাঠি পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা International Civil Aviation Organisation. ভারত-সহ ১৯৩টি দেশ ওই চুক্তি স্বাক্ষর কর। আমেরিকা এবং ব্রিটেনেও ওই চুক্তিতে সই করে সেই সময়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, বিমান দুর্ঘটনা বা বিমান পরিষেবার ক্ষেত্রে কোনও গুরুতর ঘটনা ঘটলে, আন্তর্জাতিক মহলও বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারবে। Annex 13-এর পঞ্চম অধ্যায়ে এর স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়েছে, কাউকে দোষারোপ করা বা কারও উপর দায় চাপানো লক্ষ্য নয়, বরং যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরণে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ বের করা জরুর, ভবিষ্য়তে যাতে অঘটন এড়ানো যায়, তার জন্যই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের তদন্ত জরুরি।
দুর্ঘটনা ঘটলে কে বা কারা তদন্ত করতে পারবে, তাও স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে চুক্তিতে। বলা হয়েছে, যে দেশে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তারা যেমন তদন্ত করতে পারবে, দুর্ঘটনার সঙ্গে সংযোগ থাকা অন্য দেশেরও তদন্তের অধিকার রয়েছে। আমদাবাদে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটিতে ব্রিটেনের ৫৩ জন যাত্রী ছিলেন। তাই তারাও তদন্তে যুক্ত হয়েছে। অন্য দিকে, চুক্তি অনুযায়ী, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি যে দেশের নামে নথিভুক্ত, বিমানটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থা যে দেশের, যে দেশে বিমানের নকশা তৈরি, যে দেশে বিমানটি তৈরি করা হয়েছে, তারাও তদন্ত করতে পারবে।
সেই নিরিখে আমদাবাদে দুর্ঘটনাগ্রস্ত AI171 বিমানটি ভারতের মাটিতে ভেঙে পড়ে। ফলে ভারতের তদন্তের অধিকার রয়েছে। ভারতে ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে Aircraft Accident Investigation Bureau. এটি ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহণ সংস্থার অধীনস্থ, যারা বিমান দুর্ঘটনা বা গুরুতর সমস্যার তদন্ত করে। বিমানটি পরিচালনা করছিল এয়ার ইন্ডিয়া, সেটির রেজিস্ট্রেশনও ছিল বারতে। কিন্তু বিমানটির নকশা যেমন আমেরিকায় তৈরি, গোটা বিমানটিও আমেরিকায় তৈরি হয়। তাদের Boeing সংস্থা বিমানটি তৈরি করে। বিমানের ইঞ্জিন তৈরি করে আমেরিকারই General Electric. ফলে আমেরিকার সমান্তরাল তদন্ত চালানোর অধিকার রয়েছে। পাশাপাশি, Boeing-ও নিজের পৃথক তদন্তকারী দল পাঠাতে পারে। দুর্ঘটনা কী কারণে ঘটল, কোথায় সমস্যা ছিল, জানা গেলে, ভবিষ্যতে বিপদ এড়ানো যেতে পারে।























