হাথরাস: 'ওকে শেষবার বাড়িতে আসতে দাও তোমরা', পরিবারের আবেদন অগ্রাহ্য করে মধ্যরাতে নির্যাতিতার দেহ সৎকার পুলিশের
মঙ্গলবার দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে মারা যান নির্যাতিতা, শেষ হয় ১৫ দিনের লড়াই....
লখনউ: যোগী রাজ্যে গণধর্ষণে মৃত নির্যাতিতার সৎকার ঘিরেও কাঠগড়ায় পুলিশ। মৃতদেহ গ্রামে পৌঁছলেও, বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হল না। পরিবারের আবেদন অগ্রাহ্য করে মাঝরাতে জোর করে সৎকারের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে।
নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, মৃতদেহ বাড়িতে আনতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পুলিশের আপত্তিতে তা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে, হাথরসের মহকুমা শাসকের দাবি, পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত না থাকায়, পুলিশই মৃতদেহ সৎকার করে।
জানা গিয়েছে, ভোররাত ৩টে নাগাদ পুলিশি ঘেরাটোপে নিহত ১৯ বছরের তরুণীর দেহের সৎকার সম্পন্ন হয়। সাড়ে তিনটে নাগাদ নিহতের ভাই বলেন, আমাদের ধারণা, (পরিবারকে ছাড়াই) সৎকার হয়ে গিয়েছে। পুলিশ আমাদের কিছুই জানায়নি। আমরা কাতর মিনতি করেছিলাম, বাড়িতে শেষবার ওর দেহ যাতে আনা হয়। কিন্তু, ওরা আমাদের কোনও কথা শোনেনি। জোর করে নিজেরা সৎকার করে দেয়।
উচ্চবর্ণের ৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে এক দলিত সম্প্রদায়ের তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এই নৃশংস ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ডকে! কারণ, এক্ষেত্রেও গণধর্ষণের পর তরুণীর ওপর নির্মম অত্যাচার চালানো হয়!
অভিযোগ, ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় প্রচণ্ড মারধর করা হয় তাঁকে। গোটা শরীর ক্ষতবিক্ষত ছিল। ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টাও করা হয়। শিরদাঁড়া ও ঘাড় মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অসাড় ছিল দুই পা এবং একটি হাত।
মঙ্গলবার, দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে মারা যান নির্যাতিতা। শেষ হয় ১৫ দিনের লড়াই। রাত একটা নাগাদ গ্রামে পৌঁছয় নির্যাতিতার দেহ। কিন্তু, মৃতদেহ অ্যাম্বুল্যান্সে রেখে দেওয়া হয় বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ দেহটি বাড়িতে আনতে দিচ্ছে না। ক্রমাগত বাধা দেয়।
পরিবার আরও দাবি করে, দেহ অবিলম্বে সোজা শ্মশানে নিয়ে গিয়ে অন্ত্যেষ্টি করার জন্য চাপ দেয় পুলিশ। পরিবার জানিয়ে দেয়, রাতের অন্ধকারে তাঁরা সৎকার করতে রাজি নন। দেহ নিয়ে যেতে চান গ্রামের বাড়িতে। সেই সময় দিল্লি থেকে বাড়ি পৌঁছয়নি নিহতের বাবা ও দাদা। পরিবারের তরফে বলা হয়, সৎকারে এত তাড়া কীসের?
নিহত তরুণীর পরিবারের আরও দাবি, সৎকার করতে অস্বীকার করায়, পুলিশ তাঁদের ওপর অভব্য আচরণ করে। হুমকি দেয়। মারধর করে। মহিলাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করে চুড়ি ভেঙে দেয়। ভয়ের চোটে সকলেই বাড়ির মধ্যে নিজেদের আটকে রাখেন।
দু'ঘণ্টা পর, পরিবারের লোকদের ছাড়াই দেহ সৎকার করে পুলিশ। যদিও, প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, পরিবারের ইচ্ছে অনুযায়ী সৎকার করা হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের গণধর্ষণে মৃত তরুণীর অন্ত্যেষ্টি নিয়ে মোদি ও যোগী সরকারকে নিশানা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী ও তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। রাহুলের ট্যুইট, দেশের এক মেয়েকে ধর্ষণ-খুন করা হচ্ছে, তথ্য গোপন করা হচ্ছে। শেষে পরিবারের হাত থেকে সৎকারের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। অপমানজনক ও অন্যায়।
তৃণমূল সাংসদের ট্যুইট, পরিবারকে না জানিয়েই মাঝরাতে হাথরসের নির্যাতিতার মৃতদেহ সৎকার। মোদির নতুন ভারত। যোগীর নতুন আইন। ভারতের নতুন অবনমন। ট্যুইটে কটাক্ষ মহুয়ার।भारत की एक बेटी का रेप-क़त्ल किया जाता है, तथ्य दबाए जाते हैं और अन्त में उसके परिवार से अंतिम संस्कार का हक़ भी छीन लिया जाता है। ये अपमानजनक और अन्यायपूर्ण है।#HathrasHorrorShocksIndia pic.twitter.com/SusyKV6CfE
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) September 30, 2020
Cremating Hathras rape victim in the dead of the night without informing the family
Modi’s New India Yogi’s New Laws India’s New Low — Mahua Moitra (@MahuaMoitra) September 30, 2020