এবার রঙ দিয়ে চেনা যাবে ট্রাম, কলকাতার বিভিন্ন ট্রামরুটকে আলাদা আলাদা রঙে চিহ্নিত করছে ডব্লিউবিটিসি
লন্ডন বা টরেন্টা, বিশ্বের অন্য যে শহরগুলিতে ট্রাম পরিষেবা রয়েছে, সর্বত্র যাত্রীদের সুবিধের জন্য এভাবেই রুট চিহ্নিতকরণের রীতি আছে। সেই পথেই হাঁটছে এবার কলকাতা।
অরিত্রিক ভট্টাচার্য,কলকাতা: এবার রঙ দিয়ে চেনা যাবে ট্রাম। কলকাতার আলাদা আলাদা ট্রামরুটকে আলাদা আলাদা রঙে চিহ্নিত করছে ডব্লিউবিটিসি। সেই মতো তৈরি হচ্ছে বিশেষ ম্যাপ। কলকাতার যাবতীয় ট্রামরুটকে নির্দিষ্ট করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই নতুন 'কালার কোডে' চিহ্নিত হবে রুটগুলি।
লন্ডন বা টরেন্টা, বিশ্বের অন্য যে শহরগুলিতে ট্রাম পরিষেবা রয়েছে, সর্বত্র যাত্রীদের সুবিধের জন্য এভাবেই রুট চিহ্নিতকরণের রীতি আছে। সেই পথেই হাঁটছে কলকাতা। শীঘ্রই ওয়েবসাইটেও দেখা যাবে এই কালার কোড যুক্ত রুট। ডব্লিউবিটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজভিন্দর সিংহ চহ্বান জানিয়েছেন, "ওয়েবসাইটের পাশাপাশি প্রতিটা ট্রামের ভেতরে এই রুটম্যাপ দেওয়া থাকবে, যাতে মানুষের সুবিধে হয়। আলাদা আলাদা রুটের ট্রামে সেই রুটের নির্দিষ্ট রঙের ছোঁয়াও থাকবে।" ইতিমধ্যেই কিছু কিছু রুটের ট্রামে রঙ করা শুরু হয়ে গিয়েছে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ রুট এবার থেকে গোলাপি বা ‘পিঙ্ক লাইন’ বলে পরিচিত হবে। এই রুটে পড়ছে টলি ক্লাব, ভবানী সিনেমা, লেক মার্কেট, দেশপ্রিয় পার্ক, হিন্দুস্থান পার্ক, গড়িয়াহাটের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। হলুদ রঙ দিয়ে চিহ্নিত হবে গড়িয়াহাট-এসপ্লানেড রুট। পোশাকি নাম ‘ইয়েলো লাইন’। পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়, রিপন স্ট্রিট, নোনাপুকুর, চাঁদনি চক হয়ে ওই রুটে চলবে ট্রাম। আবার এসপ্লানেড থেকে বইপাড়ার ট্রাম রুটের পরিচয় এবার থেকে লাল রঙে, অর্থাৎ ‘রেড লাইন’। আরও উত্তরে সরে এলে বিধাননগর রুটেও চলে ট্রাম। সেই রুটের রঙ এবার বেগুনি। ভায়োলেট লাইন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে ওই লাইনকে। শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ট্রাম রুট শ্যামবাজার থেকে হাওড়া ব্রিজ। সেই রুটের নামকরণ হচ্ছে গ্রিন লাইন। উত্তর কলকাতাকে ছুঁয়ে যাওয়া এই লাইনে এবার সবুজের ছোঁয়া। হাওড়া সেতু থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত রুটের নামকরণ হচ্ছে ‘গ্রিন লাইন’। শহরের সবচেয়ে মনোরম রুট হিসেবেই পরিচয় এসপ্ল্যানেড থেকে ময়দান হয়ে খিদিরপুর রুটের। যদিও আমফানের পর থেকে এখনও এই রুট চালু করা যায় নি। তবে রঙের স্পর্শ লাগছে বহু সিনেমায় ব্যবহৃত এই ট্রামরুটেও। নীল রঙেই তার নতুন পরিচিত। পোশাকি নাম ব্লু লাইন। কারিগরি সমস্যা কাটিয়ে সেই রুটও দ্রুত চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী ডব্লিউবিটিসি কর্তৃপক্ষ।
ডব্লিউবিটিসি ম্যাপের পরিকল্পনা করলেও তার নকশা তৈরি করেছেন দুর্গাপুরের ট্রামপ্রেমী ছাত্র সাত্ত্বিক সরকার। ১৮৭৩ সালে কলকাতায় চালু হল ট্রাম। অন্যান্য শহরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেই ট্রাম পরিষেবায় এবার রঙিন আধুনিকতার ছোঁয়া। ঐতিহ্যের পাশাপাশি এই আধুনিকতার স্পর্শ ট্রামকে কলকাতাবাসী ও পর্যটকদের কাছে কতটা জনপ্রিয় করতে পারে, আপাতত সেটাই দেখার।