রাজ্যে এসে মমতায় নীরব রাজনাথ, সুর চড়ালেন উমা
পূর্ব মেদিনীপুর: রাজ্যে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কার্যত নীরব থাকলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। কিন্তু সুর চড়ালেন আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতী। উত্তরপ্রদেশ জয়ের পর বিজেপির টার্গেট এখন বাংলা। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে, দক্ষিণ কাঁথির উপনির্বাচনে অনেকটাই শক্তি বেড়েছে বিজেপির। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। একই দিনে রাজ্যে হাজির মোদী মন্ত্রিসভার দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। বঙ্গে এসে বিজেপির জন্য স্লোগানও ঠিক করে দিলেন রাজনাথ সিংহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, আগলি বার, বিজেপি সরকার। বাংলায় বিজেপি ক্রমশ উঠে আসছে। এই স্লোগানের পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, বাস্তবের সঙ্গে যোগ নেই। অনেকটা পথ হাঁটতে হবে। পাগলেও এ কথা শুনলে হাসবে। রাজনাথ সিংহ কলকাতায় এসে স্লোগান তুললেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এ বারও তিনি কার্যত নীরব থাকলেন। সূত্রের খবর, বিজেপির কর্মি সম্মেলনে তিনি বলেন, নোট বাতিলের প্রতিবাদে এ রাজ্যে যা হয়েছে এবং যে ভাবে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে, সেটা ঠিক হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর উত্তর দেননি। কারণ, যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা কাজে করে দেখান। মুখে উত্তর দেন না। নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিলের ঘোষণা করার পর থেকেই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, এদিন নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পক্ষে সওয়াল করলেও, একবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও সমালোচনা শোনা যায়নি রাজনাথ সিংহের গলায়। যদিও, তাঁর সতীর্থ, উমা ভারতীকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গীতেই দেখা গিয়েছে। এদিন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, মমতা যে জায়গায় পৌঁছেছে, তার পিছনে বিজেপির বিরাট অবদান রয়েছে। আবার বিজেপিই একদিন ওকে শেষ করবে। ২০১৯ সালে আমরাই বাংলায় অন্যতম বড় শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করব। ২০২১ সালে আমরাই ক্ষমতায় আসব। এ দিন হাওড়ায় কর্মিসভা করেন উমা ভারতী। তারপরই তাঁর নিশানায় মমতা-সরকার। বলেন, রাজ্য থেকে যে সব প্রজেক্ট পাঠানো হচ্ছে তা এতটাই ত্রুটিপূর্ণ যে টাকা দিতে পারছি না। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল পাচ্ছে না রাজ্যবাসী। মমতা ঘৃণার রাজনীতি করছেন। উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন না। দিশা দেখানোর কেউ নেই। ভাল নেতা নেই। তাই উন্নয়নের কাজটাই হচ্ছে না। উমা ভারতীকেও পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, এরা এসে দুচারটে কথা বলে চলে যাচ্ছে। মমতা ঘৃণার রাজনীতি করেন? কী বলতে চাইছেন? চার-পাঁচটে যে ভোট পায় তাও কমে যাবে। প্রকল্পের টাকা আটকাচ্ছে কেন্দ্র। সেটা দিয়ে দিক। পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, পঞ্চায়েত ভোট যত সামনে আসবে, ততই তৃণমূল-বিজেপির তরজা তুঙ্গে উঠবে।