Madrasa Education: মাদ্রাসা বন্ধ করতে রাজ্যগুলিকে চিঠি, জোর বিতর্ক, ভোটমুখী মহারাষ্ট্র নিয়ে প্রশ্ন বিরোধীদের
Child Rights Commission: লোকসভার প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস জানিয়েছে, চিঠিটি খুঁটিয়ে পড়ে তবেই এ ব্যাপারে মন্তব্য করবে তারা।
নয়াদিল্লি: দেশের সমস্ত মাদ্রাসাগুলিকে বন্ধ করতে নির্দেশ দিল জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের সেই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হল। বলা হয়েছে, মাদ্রাসার বোর্ডগুলি অবিলম্বে ভেঙে দিতে হবে। রাজ্য মাদ্রাসা এবং মাদ্রাসা বোর্ডগুলিকে যে অনুদান দেয়, তা-ও বন্ধ করে দিতে হবে। সাধারণ স্কুলে ভর্তি করতে হবে মাদ্রাসায় পাঠরত শিশুদের। (Madrasa Education) কয়েক দিন আগেই ভোটমুখী মহারাষ্ট্রে মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন তিন গুণ বাড়িয়ে দেয় রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি-NCP (অজিত পওয়ার) সরকার। তাই মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
লোকসভার প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস জানিয়েছে, চিঠিটি খুঁটিয়ে পড়ে তবেই এ ব্যাপারে মন্তব্য করবে তারা। তবে কর্নাটকে কংগ্রেস সরকারের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, মাদ্রাসার অনুদান এবং ঝাঁপ বন্ধ করার কথা না বলে, প্রতিকার করা উচিত সরকারের। তাঁর কথায়, "মজার কথা হল, মহারাষ্ট্র সরকার কয়েক দিন আগেই মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন তিনগুণ বৃদ্ধি করেছে। তার পর এই সিদ্ধান্ত।" বিজেপি-র জোটসঙ্গী লোক জনশক্তি পার্টির মুখপাত্র একে বাজপেয়ী বলেন, "বেআইনি মাদ্রাসা অবশ্যই বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কিন্তু অন্ধ ভাবে কিছুই করা উচিত নয়। এ নিয়ে সমীক্ষা প্রয়োজন। কিছু পাওয়া গেলেও, তার কার্যকারণ জানানোর সুযোগ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসাকে।" (Child Rights Commission)
গত ১১ অক্টোবর জাতীয় শিশু কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুঙ্গো রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে মাদ্রাসা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠান। সম্প্রতি জাতীয় শিশু কমিশনের তৈরি একটি রিপোর্টও চিঠির সঙ্গে পাঠানো হয়, যাতে বলা হয়েছিল, মাদ্রাসা আসলে শিশুদের শিক্ষার অধিকারকে লঙ্ঘন'। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পাঠানো চিঠিতে লেখা হয়, '২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইনে সাম্য, সামাজিক ন্যায় গণতান্ত্রিক মূল্।বোধের কথা বলা রয়েছে, যা শিক্ষায় সকলের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমেই অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু শিশুর মৌলিক অধিকার এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারের মধ্যে একটি পরস্পরবিরোধী চিত্র তৈরি হয়েছে'।
চিঠিতে আরও লেখা হয়, 'অমুসলিম পরিবারের যে সমস্ত শিশু মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছেন, তাদের ছাড়িয়ে এনে স্কুলে ভর্তি করতে হবে। পাশাপাশি, মুসলিম পরিবারের যে সমস্ত ছেলেমেয়ে মাদ্রায় যায়, সে স্বীকৃত হোকা বা হোক, তাদেরও সাধারণ স্কুলে ভর্তি করতে হবে, যাতে আইন অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে তারা'।
সমাজবাদী পার্টির সাংসদ তথা মুখপাত্র আনন্দ বাহাদুরিয়ার মতে, "এই চিঠি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সমাজে ঘৃণা এবং বিভাজন তৈরিই লক্ষ্য। বেশ কিছু মাদ্রাসা ভাল কাজ করছে, সেখান থেকে জ্ঞানীগুণীরা বেরিয়ে আসছেন। কিন্তু জনমনে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা চলছে। দরিদ্র পরিবারের শিশুরাই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। এই চিঠি হাস্যকর, প্রত্যাহার করা উচিত'।
২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইনে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিত যে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে কানুঙ্গোর বক্তব্য, 'ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যাওয়া শিশুরা সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বাদ পড়ে গিয়েছে। আইনে সংখ্যালঘুদের শিক্ষার সমান অধিকারের কথা বলা থাকলেও, তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে ওই সমস্ত শিশুরা'। যদিও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের ছেলে প্রিয়ঙ্ক খড়্গের কথায়, "বার্ষিক মূল্যায়নে সরকারি স্কুলগুলিতেও ত্রুটি ধরা পড়েছে। তার মানে কি সরকার স্কুল চালানো বন্ধ করে দেবে? যে রিপোর্টের কথা বলা হচ্ছে, সেটি আইন নয়।"
ঘটনাচক্রে, ভোটমুখী মহারাষ্ট্রে সম্প্রতি মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন তিন গুণ বৃদ্ধির ঘোষণা করে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি-NCP (অজিত পওয়ার) সরকার। D.Ed, B.Ed, শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে অনেকটাই। D.Ed শিক্ষকত-শিক্ষিকাদের বেতন ৬০০০ থেকে বাড়িয়ে ১৬০০০ টাকা করা হয়েছে। B.A, B.Ed, B.Sc শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন ৮০০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮০০০ টাকা। মহারাষ্ট্র নিয়ে তাই প্রশ্নের মুখে পড়ছে কেন্দ্র।