চিনে করোনাভাইরাসে মৃত্যু বেড়ে ৩০৪, আতঙ্কের দোসর বার্ড-ফ্লু, প্রায় ১৮ হাজার মুরগি-নিধন
করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেই এবার বার্ড ফ্লু-র আতঙ্ক চিনে। ক্রমশ মারণ আকার ধারন করেছে নোভেল করোনাভাইরাস।চিনের হুনান প্রদেশে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়েছে। প্রায় ১৮ হাজার মুরগি ‘কালিং’ বা নিধন করেছে প্রশাসন।
বেজিং: করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেই এবার বার্ড ফ্লু-র আতঙ্ক চিনে। খবরে প্রকাশ, চিনের হুনান প্রদেশে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গিয়েছে, ওই প্রদেশের শুয়াংকিং জেলার একটি মুরগি-খামারে এই রোগ ছড়িয়েছে। প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের উৎসস্থল হুবেই প্রদেশের দক্ষিণ-সীমান্তে অবস্থিত হুনান প্রদেশ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রায় ১৮ হাজার মুরগি ‘কালিং’ বা নিধন প্রক্রিয়া চালিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এপ্রসঙ্গে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে চিনের কৃষি ও গ্রামীণ বিষয়ক মন্ত্রক। সেখানে বলা হয়েছে, ওই খামারে ৭,৮৫০ মুরগি ছিল। তার মধ্যে মড়ক লেগে মারা যায় প্রায় ৪,৫০০ মুরগি। এরপরই ওই এলাকার প্রায় ১৭,৮২৮ মুরগি নিধন প্রক্রিয়া চালায় প্রশাসন। যদিও, এখনও পর্যন্ত কোনও মানব-সংক্রমণের (হিউম্যান এইচ৫এন১ ভাইরাস) খবর মেলেনি বলেও জানানো হয়েছে মন্ত্রকের তরফে। করোনাভাইরাসের মোকাবিলা নিয়ে যে সময় চিন জেরবার, ঠিক সেই সময় বার্ড-ফ্লু সংক্রমণের খবর প্রশাসনের মাথাব্যথা আরও বাড়িয়ে দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এমনিতেই, চিনে ক্রমশ মারণ আকার ধারন করেছে নোভেল করোনাভাইরাস। মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই তিনশ ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হুবেই প্রদেশে। রবিবার এখানে নতুন ৪৫টি মৃত্যুর খবর মিলেছে। এমনটাই জানিয়েছে চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা বিভাগ। ভাইরাসের প্রথম খবর মেলে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরে। সেই থেকে বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। এমনকী, চিনের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস। এখনও পর্যন্ত খবর, শুধুমাত্র চিনেই ১৪ হাজার আক্রান্তের শরীরে ভাইরাসের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রুখতে বিভিন্ন শহরে যাতায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চিন প্রশাসন। প্রায় ১২টি শহরে বসবাসকারী ৫.৬ কোটি মানুষের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সামনেই চিনা নতুন বছর। কয়েক কোটি মানুষ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করবেন। চিন প্রশাসনের আশঙ্কা, সেই সময় ভাইরাসের সংক্রমণ ও ছড়িয়ে পড়ার হার আরও বাড়বে। এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংগঠন। কিন্তু, তা সত্ত্বেও ভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত ছড়িয়ে পড়ছে। অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিন বাদে এশিয়ার সাতটি দেশ থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাসের হানাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সঙ্কট হিসেবে উল্লেখ করেছে। এই পরিস্থিতিতে, ভারত সহ বিভিন্ন দেশ চিনে বসবাসকারী নিজ নাগরিকদের বের করে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।