India Debt: ৬৭ বছরে ঋণ ছিল ৫৫ কোটি, মাত্র ন’বছরে ১০০ লক্ষ কোটি দেনা মোদি সরকারের! শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি কংগ্রেসের
Indian Economy: ভারতের ঘাড়ে থাকা মোট ঋণের পরিমাণ ১৫৫.৮ লক্ষ কোটি টাকা বলে এ বছর মার্চ মাসে নিজেই জানান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
নয়াদিল্লি: অর্থনৈতিক সঙ্কট, বেকারত্ব বৃদ্ধি নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছেই। তার মধ্যেই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকারকে তীব্র আক্রমণ করল কংগ্রেস। ভারতের ঘাড়ে চাপতে থাকা ক্রমবর্ধমান ঋণ নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস (Congress)। তাদের দাবি, স্বাধীনতার পর দেশের আর কোনও প্রধানমন্ত্রী যা করতে পারেননি, মোদি একা তা করে দেখিয়েছেন (Indian Economy)। দেশের ঘাড়ে মাত্র ন'বছরে ১০০ লক্ষ কোটির বেশি ঋণ চাপিয়ে দিয়েছেন তিনি (India Debt)।
ভারতের ঘাড়ে থাকা মোট ঋণের পরিমাণ ১৫৫.৮ লক্ষ কোটি টাকা বলে এ বছর মার্চ মাসে নিজেই জানান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ২০২৩ সালের ৩১ মার্চের নিরিখে ওই হিসেব প্রকাশ করেন তিনি। সেই সময় GDP-র অনুপাতে দেশের দেনার ৫৭.৩ শতাংশ ছিল বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু কংগ্রেসের দাবি, CAG রিপোর্টে দেখা গিয়েছে ওই অনুপাত বেড়ে ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
India's Debt to GDP ration for last 9 years.
— Nikhil Gangil (@Intrinsic_cycle) June 10, 2023
Apart from Corona year, Debt to GDP has remained flat / gone down. #debt pic.twitter.com/gB3USHLzkW
এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের চূড়ান্ত অর্থনৈতিক অব্যবস্থাকে দায়ী করেছে তারা। তাদের দাবি, গত মোদির আমলে, গত ন'বছরে ভারতের ঋণের পরিমাণ ১৫৫ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে, যা UPA আমলের চেয়ে তিন গুণ বেশি।
কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাথ সাংবাদিক বৈঠক করে এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, ২০১৪ সালের মে মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন মোদি। তার পর থেকে ভারতের ঘাড়ে আরও ১০০ লক্ষ কোটি টাকার দেনা চেপেছে। মোদি সরকারের চূড়ান্ত অপদার্থতাই বর্তমানের অর্থসঙ্কটের জন্য দায়ী।
সুপ্রিয়ার বক্তব্য, "গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বিরোধীদের অদক্ষ, অপদার্থ, দুর্নীতিগ্রস্ত বলে আক্রমণ করতেন মোদি। আজ তাঁর এবং তাঁর সরকারের জন্য বিশেষণগুলি সবচেয়ে বেশি কার্যকর। ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে নির্মূল করে দিয়েছেন। বেকারত্বকে নিয়ে গিয়েছেন চরমে। মুদ্রাস্ফীতি এত ভয়ঙ্কর জায়গায় আগে কখনও যায়নি। দেশের ঘাড়ে ১০০ লক্ষ কোটির ঋণ চাপিয়েছেন মোদি, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।"
VIDEO | "In the last nine years, India's debt has increased to more than Rs 100 lakh crore, but the common man has not benefited from it," says Congress leader Supriya Shrinate. pic.twitter.com/Sm4rqKnxzJ
— Press Trust of India (@PTI_News) June 10, 2023
কংগ্রেসের দাবি, ২০১৪ সালে ভারতের ঘাড়ে সবমিলিয়ে মোট ৫৫ লক্ষ কোটি টাকা দেনা ছিল। কিন্তু গত ন'বছরে তা বেড়ে ১৫৫ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। ৬৭ বছরে দেশের ১৪ জন প্রধানমন্ত্রী মিলে ৫৫ লক্ষ কোটি টাকায় আটকে রেখেছিলেন দেনা। মোদি একাই তা ১৫৫ কোটিতে নিয়ে গিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে কংগ্রেস আরও জানায়, খবরের কাগজে শিরোনামে জায়গা করে নেওয়া, আর দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা কখনও এক জিনিস নয়। এক্ষেত্রে টেলিপ্রম্পটার এবং হোয়াটসঅ্যাপ ফরোয়ার্ড কাজে লাগে না। ভারতীয় অর্থনীতির বিচ্যুতিগুলি ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। অবিলম্বে এ নিয়ে কেন্দ্রকে শ্বেতপত্র জারি করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস।
কংগ্রেস আরও জানিয়েছে, বর্তমানে ভারতের মোট সম্পদের ৮০ শতাংশ মাত্র ১০ শতাংশ বিত্তশালীদের দখলে রয়েছে। অথচ পণ্য ও পরিষেবা বাবদ তাঁদের প্রদত্ত করের হার মাত্র ৩ শতাংশ। সেই তুলনায়, মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত ৫০ শতাংশ ভারতীয়ের হাতে রয়েছে দেশের মাত্র ৩ শতাংশ সম্পদ। পণ্য ও পরিষেবা বাবদ ৬৪ শতাংশ করই আসে তাঁদের কাছ থেকে। উন্নয়নশীল দেশগুলির ক্ষেত্রে ঋণ এবং GDP-র অনুপাত সাধারণত ৬৪.৫ শতাংশ থাকে। ভারতের ক্ষেত্রে তা ৮৪ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে বলে দাবি কংগ্রেসের।
ভারতের মোট ঋণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে গিয়ে CAG রিপোর্টেরও উল্লেখ করেন সুপ্রিয়া। পরিসংখ্যান প্রকাশ করে তিনি জানান, ২০১৯-'২০ সালে GDP-র নিরিখে ভারতের ঋণ ছিল ৫২.৫ শতাংশ। কিন্তু বর্তমানে তা ৮৪ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। তাতে অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।