Covid19 Update: নিজের টোটোয় সংক্রমিতদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব, মুশকিল আসানের ভূমিকায় মুনমুন
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানবতার জয়গান এখন শিলিগুড়ির অলি-গলিতে।
শিলিগুড়ি: করোনা আক্রান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে কারও দাবি ১০ হাজার, কেউ আবার আতঙ্কে আসতে চাইছেন না। শিলিগুড়ির সংক্রমিতদের জন্য মুশকিল আসানের ভূমিকায় মুনমুন সরকার। সংক্রমিতকে নিজের টোটোয় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে ফিরিয়ে আনা। সবটাই তিনি করেন বিনামূল্যে
মারণ ভাইরাসের রোষে ছারখার দেশ। শ্মশানে চিতার আগুন। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ করোনা চিকিৎসার ওষুধের জন্য মোটা টাকা চাইছেন। কোথাও আবার অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিরুদ্ধে উঠেছে মোটা টাকা চাওয়ার অভিযোগ।
তবে, কালোবাজারির অন্ধকার যেমন আছে, তেমনই আছে কিছু মুখ, যাঁরা এই সঙ্কটের মুহূর্তে আশার রুপোলী রেখা হয়ে ফুটে উঠেছেন। শিলিগুড়ির শক্তিগড়ের বাসিন্দা মুনমুন সরকার।
করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়, যখন বহু অ্যাম্বুল্যান্স চালক, রোগী নিতে চাইতেন না, তখন মুনমুন পৌঁছে যেতেন টোটো নিয়ে। টোটোয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া শুরু থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা। এর জন্য একটা পয়সাও নেন না শিলিগুড়ির প্রথম মহিলা টোটোচালক। সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায়ে তাঁর লড়াই আরও কঠিন হয়েছে।
টোটোচালক মুনমুন সরকার বলেন, একটা পিপিই পরে তেইশ দিন চালাই, তারপর অনেকে এগিয়ে আসেন। ফোন পেলেই পিপিই কিট পরে, টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বছর পঁয়তাল্লিশের এই বীরাঙ্গনা। করোনা আক্রান্তের বাড়িও স্যানিটাইজ করেন। স্বয়ংসিদ্ধা মুনমুনের লড়াইয়ের কথা এখন সর্বত্র। মুনমুনের কথায়, আমি যদি সেবা করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে মারা যাই, তাতে খুশিও হব, উপরাষ্ট্রপতির ট্যুইট আমাকে আরও উৎসাহিত করে।
গত বছর থেকে এখনও পর্যন্ত শিলিগুড়ির কয়েকশো করোনা আক্রান্তকে বিনা পয়সায় হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন মুনমুন। এক করোনাজয়ী নিরুপম সাহা, অসাধারণ চরিত্র উনি, যখন কাউকে পাওয়া যায়নি তখন দিদির টোটো করেই আমি যাই হাসপাতালে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানবতার জয়গান এখন শিলিগুড়ির অলি-গলিতে।
এদিকে রাজ্যের করোনাচিত্র ক্রমশ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এই নিয়ে পরপর সাতদিন শতাধিক রাজ্যবাসীকে করোনার কাছে হারালাম আমরা। পাশাপাশি দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ঘোরাফেরা করছে ২০ হাজারের কাছাকাছি।