লকডাউনের জেরে বেশিক্ষণ মোবাইল থেকে ল্যাপটপ ব্যবহার, বাড়ছে অনিদ্রা, বলছে গবেষণা
করোনাকালে এই প্রবণতার কথাই এবার তুলে ধরল গবেষণা
নয়াদিল্লি: সারাদিন ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা, আর তার জেরেই এবার অনিদ্রায় ভুগছেন একাংশ। করোনাকালে এই প্রবণতার কথাই এবার তুলে ধরল গবেষণা। গবেষণায় উঠে আসা তথ্য বলছে,ঘুম কমে যাওয়া থেকে অনিদ্রা বেড়েছে।
ইতালির আকিলা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা থেকে এই তথ্য পেয়েছে। তারা বলছে, করোনাকালে ঘুমের গভীরতা কমেছে, অনিদ্রা বেড়েছে, মোটের ঘুমের সময় হ্রাস পাচ্ছে। শুধু তাই নয় বেড়েছে দেরি করে ঘুমোতে যাওয়ার প্রবণতাও। এর কারণ হিসেবে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, যাঁদের এই সমস্যা হচ্ছে তাঁদের মধ্যে ৯২.৯ শতাংশের বিশেষত সন্ধের পর ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন বা ট্যাবের ব্যবহার বেড়েছে। অন্যদিকে যাঁদের এই ধরনের অভ্যাস নেই তাঁদের ঘুমের কোনও সমস্যা হচ্ছে না। ৭ শতাংশের ঘুম নিয়ে কোনও সমস্যা নেই বলেই উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাপত্রে।
বায়োটেকনোলজি তথা অ্যাপ্লাইড ক্লিনিক্যাল সায়েন্সের গবেষক ফেজেরিকো সালফি বলেন, মহামারী পূর্ব সময় থেকে ঘুমের আগে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম তথা মোবাইল ব্যবহার করার অভ্যাস আসে একাংশের। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই প্রবণতা রয়েছে। আর বর্তমান সময় শারীরিক দূরত্ব আগুনে ঘি ঢেলেছে। স্ক্রিনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বহু মানুষের। আর তার জেরেই ঘুম না হওয়াপ প্রবণতা বেড়েছে লকডাউন পর্বে। বিশেষত সন্ধের পর থেকে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইজের ব্যবহার সরাসরি প্রভাব ফেলছে ঘুমের উপর। স্লিপ সাইকোলজি এবং কনজিনিটিভ নিউরোসায়েন্সের অধ্যাপক মাইকেল ফেরারা বলেন, এই সমস্যা মহামারী পর্ব তো বটেই ভবিষ্যতেও এই সমস্যা থাকবে। কারণ, প্রতিদিনের জীবনে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গবেষকরা বলছেন, লকডাউন পর্বে ইতালিতে দৈনিক ইন্টারনেট ব্যবহার তার আগের বছরে ওই সময়ের তুলনায় দ্বিগুন বেড়েছে। ইতালির প্রথম দফায় লকডাইনের তৃতীয় থেকে সপ্তম সপ্তাহের মধ্যে ২ হাজার ১২৩ ইতালিবাসীকে নিয়ে একটি ইন্টারনেট ভিত্তিক গবেষণা করেছিলেন গবেষকরা। যেখানে দেখা হয় ঘুমের গুণমান এবং মূল্যায়ন করা হয় অনিদ্রার লক্ষণগুলি এবং ঘুমোতে যাওয়ার দু ঘণ্টা আগে বৈদ্যুতিন ডিভাইজ ব্যবহার সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়।
গবেষকরা বলছেন, প্রথম দফা লকডাউনে যাঁদের অনিদ্রার সামান্য উপসর্গ ছিল, বর্তমানে তা আরও বেড়ে গিয়েছে। আবার যাঁদের স্ক্রিন দেখা অর্থাৎ মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহারে সময় পরিবর্তন হয়নি, তাঁদের ক্ষেত্রে ঘুমের অভ্যাসও বদল হয়নি। মূলত গভীরভাবে ঘুমাতে পারেন তাঁরা।