Viral News: ট্রেনের দেরিতে লগ্ন বয়ে যাওয়ার জোগাড়, বর ও বরযাত্রীকে মণ্ডপে পৌঁছে দিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতা দেখাল ভারতীয় রেল
Indian Railways: মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা চন্দ্রশেখর ওয়াঘ আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে গীতাঞ্জলি এক্সরপ্রেসে উঠেছিলেন।
মুম্বই: ট্রেনে চেপে ভিন্ রাজ্যে বিয়ে করতে যাওয়া এমনিতেই ঝক্কির। তার উপর ধীর গতি, বার বার থামার জ্বালাও রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিয়ের লগ্ন পেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। উপায়ান্তর না দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় রেলমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন পাত্র। দেরি না করে সত্ত্বর ট্রেনের গতি বাড়ানোর আবেদন জানালেন তিনি। আর তাতেই কাজ হল। শুধু ট্রেনের গতিই বাড়ল না, অন্য স্টেশনের একটি ট্রেনকেও আটকে রাখা হল, যাতে ব্রেক জার্নি করে সময়ে মণ্ডপে পৌঁছতে পারেন ওই পাত্র। এর ফলে বরযাত্রী নিয়ে নির্দিষ্ট সময়েই বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছলেন তিনি, সারলেন বিয়ে। (Viral News)
মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা চন্দ্রশেখর ওয়াঘ আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে গীতাঞ্জলি এক্সরপ্রেসে উঠেছিলেন। মুম্বই থেকে গুয়াহাটি যাচ্ছিলেন বিয়ে করতে। কিন্তু যাত্রাপথে ৩-০৪ ঘণ্টা দেরি হয়ে যায় এমনিতেই। যে গতিতে এগোচ্ছিল ট্রেন, তাতে নির্ধারিত সংয়ে হাওড়া পৌঁছে সরাইঘাট এক্সপ্রেস ধরতে পারার সম্ভাবনা কমছিল। ফলে সময়ে বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছনোর সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছিল ক্রমশ। (Indian Railways)
এমন পরিস্থিতিতে বরযাত্রীরা যখন প্রমাদ গুনছেন, ট্রেনে বসেই সটান মাইক্রোব্লগিং সাইট X (সাবেক ট্যুইটার)-এর দ্বারস্থ হন চন্দ্রশেখর। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে ট্যাগ করে, আর্জি জানান ট্রেনের গতি বাড়ানোর। চন্দ্রশেখর লেখেন, ৩৪ জনের বরযাত্রীর দলে বয়স্করাও রয়েছেন। বিকল্প রাস্তা বের করার সময় নেই তাঁর কাছে। ট্রেন দ্রুত না এগোলে, বিয়ের লগ্ন পেরিয়ে যাবে। সময়ে পৌঁছতে পারবেন না তিনি। রেলমন্ত্রী জবাব দেবেন বলে আশা ছিল না চন্দ্রশেখরের। কিন্তু যা কল্পনা করতে পারেননি, তা-ই ঘটে।
Chandrashekhar Wagh was travelling from Mumbai to Howrah on Gitanjali, which had a delay of 3–4 hours. Wagh soon realised that the delay would cause them to miss their connecting train, the Saraighat Express
— The Rail Tempest (@Harsh22301ER) November 16, 2024
SER now threatening Weddings ☠️☠️
চন্দ্রশেখর ওই আর্জি পোস্ট করার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন অশ্বিনী। ইস্টার্ন রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার, ডিভিশনার রেলওয়ে ম্যানেজার এবং হাওড়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজারকে বলে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়। গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেসের চালককে গতি বাড়াতে বলা হয়। চন্দ্রশেখরের এসে পৌঁছনোর জন্য হাওড়া স্টেশনে বেঁধে রাখা হয় সরাইঘাট এক্সপ্রেসকে। হাওড়া স্টেশনে নেমে চন্দ্রশেখর এবং বরযাত্রীর দল যাতে মারপত্র নিয়ে দ্রুত সরাইঘাট এক্সপ্রেসে উঠতে পারেন, তার জন্য রেলের কর্মীরা প্ল্যাটফর্মে মোতায়েন ছিলেন।
এর ফলে নির্ধারিত সময়ের আগেই হাওড়া পৌঁছে যায় গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস। ২১ নম্বর স্টেশনে গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস এসে দাঁড়ায় ট্রেন। সেখান থেকে দ্রুত মালপত্র সমেত ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে দেওয়া হয় চন্দ্রশেখর এবং বরযাত্রীদের। রেলের তৎপরতার জন্যই কয়েক মিনিটের মধ্যে সব সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন হয়। এর পর গুয়াহাটির উদ্দেশে রওনা দেন চন্দ্রশেখর। নির্ধারিত সময়েই বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছে যান চন্দ্রশেখর। সেখানে বিয়ে সম্পন্ন হয় তাঁর।
তাই ভারতীয় রেলকে ধন্যবাদ জানান চন্দ্রশেখর। তিনি লেখেন, 'এটা শুধুমাত্র যাত্রী পরিষেবা নয়, অত্যন্ত সদয় হয়েছে রেল। এমন পদক্ষেপ না করলে, আমার পরিবার এবং আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তটি হাত থেকে বেরিয়ে যেত। ভারতীয় রেলের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ'। ইস্টার্ন রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান, যাত্রীদের পরিষেবা দিতে সবসময়ই প্রস্তুত রেল। চন্দ্রশেখরের সঙ্গে যা ঘটল, তাতেই প্রমাণ হয়ে গেল যে, যাত্রীদের জন্য সবকিছু করতে পারি আমরা। চন্দ্রশেখরকে নতুন জীবনের শুভেচ্ছাও জানান তিনি।