Delhi Elections 2025: দিল্লিতে মুসলিম ভোটেও থাবা BJP-র, সুবিধা করে দিল ওয়েইসির AIMIM, বাংলা নিয়ে জল্পনা
West Bengal Assembly Elections 2026: দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে প্রায় ২৭ বছর পর দিল্লিবাসীর 'দিল' জিতলেন নরেন্দ্র মোদি।

বিজেন্দ্র সিংহ, নয়াদিল্লি: প্রায় ২৭ বছর পর রাজধানীতে উড়ল গেরুয়া ধ্বজা। শুধুমাত্র আম আদমি পার্টির পরাজয় কিংবা অরবিন্দ কেজরিওয়াল থেকে মণীশ সিসৌদিয়া, সত্য়েন্দ্র জৈন থেকে সৌরভ ভরদ্বাজরা হারলেন এমন নয়। আরও একটি ইঙ্গিতপূর্ণ বিষয়ও লক্ষ করা গেল এবারের দিল্লির ফলাফলে। মুস্তাফাবাদের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রে পরাজিত হল কেজরিওয়ালের দল। (Delhi Elections 2025)
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে প্রায় ২৭ বছর পর দিল্লিবাসীর 'দিল' জিতলেন নরেন্দ্র মোদি। রাজধানীতে উড়ল গেরুয়া ধ্বজা। ১০ বছরের মাথায় একেবারে ৬৭ থেকে ২৩-তে নেমে এল আম আদমি পার্টি। এরই মধ্য়ে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে কেজরিওয়ালের একটি পুরনো মন্তব্য, যেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আমি নরেন্দ্র মোদিকে বলতে চাই, এই জন্মে তো দিল্লিতে আপনি আম আদমি পার্টিকে হারাতে পারবেন না। (West Bengal Assembly Elections 2026)
কিন্তু কেজরিওয়ালের দল এবার দিল্লিতে হেরে গিয়েছে। নিজের আসন ধরে রাখতে পারেননি খোদ কেজরিওয়ালও। লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, একাধিক সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রে কেজরিওয়ালের দল পরাজিত হয়েছে। জিতেছে বিজেপি। এর সব থেকে বড় উদাহরণ হল দিল্লির মুস্তাফাবাদ।দিল্লির মাত্র দু'টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল আসাদউদ্দিন ওয়েসির AIMIM. একটি মুস্তাফাবাদ, অন্যটি ওখলা। সেখানে AIMIM জিততে পারেনি যদিও, কিন্তু ভোট কেটে হারিয়ে দিয়েছে আম আদমি পার্টিকে। সেখানে বিজেপি জয়ী হয়েছে।
মুস্তাফাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে ৩৫-৪০ সংখ্য়ালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। গতবার ওই আসনে জিতেছিল আম আদমি পার্টি। এবার ভোটের ফলে দেখা গেল এই আসনে আম আদমি পার্টির আদিল আহমেদ খানকে ১৭ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী মোহন সিংহ বিস্ত। আসাদউদ্দিন ওয়েইসির পার্টি পেয়েছে ৩৩ হাজারের বেশি ভোট।
অর্থাৎ নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রাভঙ্গের মতোই সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করলেন ওয়েইসি। হারলেন কেজরিওয়াল। জিতল বিজেপি। এই মুস্তাফাবাদ কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। এদিন, বিজেপির জয়ের পর বিজয়োৎসবে সামিল হন তিনি। বলেন, "মুস্তাফাবাদে ৪০ শতাংশের বেশি সংখ্যালঘু ভোটার। বিপুল সংখ্যাক বাঙালি ভোটারও রয়েছেন। আমি নিজে সেই কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। দল আমাকে পাঠিয়েছিল। যদি সংখ্যালঘুদের একটি অংশ বিজেপি-কে ভোট না দিয়ে থাকত, তাহলে আজ আমাদের প্রার্থী যে ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন, তা সম্ভব হতো না।"
সংখ্যালঘু ভোট কেজরিওয়ালের ঝুলি থেকে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি বলেন, "মুসলিমদের জন্য কিছু করেননি কেজরিওয়াল। তৃণমূলও করেনি। এটা প্রমাণিত হয়ে গেল। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল বিজেপি-র বি টিম। ভোট ভাগাভাগি করে বিজেপি-র সুবিধা করে দেওয়াই কাজ ওদের।"
শুধুমাত্র মুস্তাফাবাদই নয়, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জঙ্গপুরায় বিজেপি-র কাছে হেরে গিয়েছেন প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কস্তুরবা নগর, শকুর বস্তি, কারাওয়াল নগর, শাহদরাতেও বিজেপির কাছে হারতে হয়েছে কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টিকে। একদিকে হিন্দু ভোট ঐক্যবদ্ধ হওয়া, অন্যদিকে মুসলিম ভোটেরও কিছুটা সরে যাওয়া, এই দুইয়ের জেরেই কি দিল্লিতে ভরাডুবি ঘটল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের?
আর এ প্রসঙ্গেই ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ পশ্চিমবঙ্গেও তৃণমূলের জয়ও অনেকাংশেই সংখ্য়ালঘু ভোটের উপর নির্ভরশীল। রাজ্য়ের প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্য়ালঘু ভোটের সিংহভাগই এখন তৃণমূলের দখলে। দিল্লির সংখ্য়ালঘু ভোটারদের একটা অংশ এবার কেজরিওয়ালের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। এই প্রবণতা কি বাংলার রাজনীতিতেও ইঙ্গিতপূর্ণ হতে পারে? উঠছে প্রশ্ন।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
