Donald Trump: বন্দিমুক্তিতে রাজি হামাস, গাজ়ায় শান্তি ফেরানোর তোড়জোড়, ট্রাম্পকেই কৃতিত্ব দিলেন সকলে, এবার নোবেল বাঁধা?
Gaza Peace Plan: ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা।

নয়াদিল্লি: গাজ়ায় শান্তি ফেরাতে ২০ দফার প্রস্তাব পেশ করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবারের মধ্যে সেই প্রস্তাবে রাজি না হলে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্পের প্রস্তাবের কিছু অংশে সম্মতি জানাল প্যালেস্তিনীয় সংগঠন হামাস। আর তাতেই ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন। (Gaza Peace Plan)
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পর শুক্রবারই হামাসের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, গাজ়ায় যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি ফেরানোর পক্ষে যে ২০ দফার প্রস্তাব দিয়েছেন ট্রাম্প, তার কিছু অংশ মেনে নেবে তারা। ইজরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দেবে, গাজ়ার শাসনভার ছেড়ে দেবে প্রশাসনের হাতে। তবে ট্রাম্পের কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানিয়ে দিয়েছে তারা। আরব তথা মুসলিম দেশগুলি তো বটেই, গাজ়া নিয়ে হস্তক্ষেপে ট্রাম্পকেও ধন্যবাদ জানায় হামাস। (Donald Trump)
হামাস ওই প্রস্তাবের আংশিক অংশ গ্রহণ করার পরই, ইজরায়েলকে গাজ়ায় বোমা বর্ষণ বন্ধ করার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। পরিষ্কার ভাষায় লেখেন, 'এই মুহূর্তে গাজ়ায় বোমা বর্ষণ বন্ধ করতে হবে ইজরায়েলকে, যাতে বন্দিদের দ্রুত এবং নিরাপদে বের করে আনা যায়। আর যা যা আলোচ্য বিষয়, সেই নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়। এটা শুধুমাত্র গাজ়ার বিষয় নয়, এর সঙ্গে পশ্চিম এশিয়ার শান্তির প্রশ্ন জড়িয়ে'।
আর তাতেই ট্রাম্পকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার জানিয়েছেন, হামাসের তরফে আমেরিকার শান্তিপ্রস্তাব গ্রহণের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ভবিষ্যৎমুখী পদক্ষেপ। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওই প্রস্তাবই শান্তিস্থাপনের এত কাছাকাছি নিয়ে এল সকলকে। অবিলম্বে যাতে সেই মর্মে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তার জন্য়ও সওয়াল করেন তিনি।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাকরঁও ট্রাম্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি লেখেন, ‘পণবন্দিদের মুক্তি ও গাজ়ায় শান্তি ফেরানোর রাস্তা এখন নাগালের মধ্যে। হামাসকে কথা রাখতে হবে। শান্তি ফেরানোর খুব কাছাকাছি আমরা। রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা, ইজরায়েল, প্যালেস্তাইন এবং অন্য সহযোগীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ফ্রান্স নিজের দায়িত্ব পালন করবে। শান্তি ফিরিয়ে আনার এই প্রচেষ্টার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর টিমকে ধন্যবাদ’।
জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্ৎজের মতে, হামাস ট্রাম্পের শান্তিপ্রস্তাবে রাজি হওয়ায়, গাজ়ায় শান্তি ফেরা সময়ের অপেক্ষা এখন। গাজ়ায় শান্তি ফেরানোর আদর্শ উপায়ই বাতলে দিয়েছে ওই শান্তি প্রস্তাবষ এব্যাপারে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন আছে। গাজ়ায় শান্তি ফেরানোয় মধ্যস্থতা করছিল মিশর। তারাও হামাসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাব গ্রহণ করে, যুদ্ধে সমাপ্তি টেনে, প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশাবাদী আমরা’। কাতারের বিদেশমন্ত্রী মাজেদ আল-আনসারি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবে হামাস যে রাজি হয়েছে, তাদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি আমরা।” গাজ়ায় শান্তি ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে কাতারও। বন্দি বিনিময় নিয়ে সেখানে দফায় দফায় বৈঠক করেন হামাস নেতৃত্ব। সেই বৈঠকে বোমাবর্ষণ নিয়ে ইজরায়েলকে ক্ষমাও চাওয়ান ট্রাম্প। ফলে তারাও ট্রাম্পের প্রশংসা করেছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটারেসও হামাসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব হামাসের বন্দি ফেরানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে। সব পক্ষকে বলব, এই সুযোগ। গাজ়ায় যুদ্ধ শেষ হোক’। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, 'গাজ়ায় শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়ার অগ্রগতির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বকে স্বাগত জানাই। বন্দিমুক্তির যে ইঙ্গিত মিলেছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত ন্যায়সঙ্গত ভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে আগামী দিনেও সমর্থন করবে'।
গাজ়ায় শান্তি ফেরানোর যে ২০ দফার প্রস্তাব পেশ করেন ট্রাম্প, তাতে একাধিক শর্ত দেওয়া হয়, যার মধ্যে হামাসকে অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে বলেও উল্লেখ ছিল। ইজরায়েল গাজ়ার কোনও এলাকা দখল করে রাখতে পারবে না বলেও জানানো হয়। হামাস অস্ত্রত্যাগ নিয়ে এখনও কিছু জানায়নি। ইজরায়েলও আলাদা করে কোনও বিবৃতি দেয়নি এখনও পর্যন্ত। তবে রাষ্ট্রনেতারা যেভাবে ট্রাম্পকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন, তাতে গাজ়ায় শান্তি ফেরানোর গোটা কৃতিত্বই তিনি পাচ্ছেন বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। এতে ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার দৌড়েও অনেকটা এগিয়ে গেলেন হলে মনে করা হচ্ছে।






















