Uttarakhand tragedy: আশার কিরণ, তপোবন সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার ৩৫ জন
তুষারধসের কবলে রুদ্ধ হয়ে পড়েছিল ১৮০ মিটারের তপোবন সুড়ঙ্গ। তবে ইতিমধ্যে সেখানকার ১৩০ মিটার পথ পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
চামোলি: প্রলয়ের প্রবল প্রতিঘাতের মধ্যেও যেন আশার কিরণ। তপোবন সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৩৫ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
তুষারধস, হড়পা বানে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে চলছে উদ্ধারকাজ। এ পর্যন্ত ২৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তপোবনের একটি সুড়ঙ্গের ভিতরে দুটি গাড়ি ও একটি মাটি কাটার যন্ত্র দেখা গিয়েছে। সেগুলির ভিতরে কেউ কেউ আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা। ওই সুড়ঙ্গের ভিতর আটকে পড়েছেন বেসরকারি সংস্থার এক পদাধিকারিক। এছাড়াও, ২ ইঞ্জিনিয়র ও কয়েকজন শ্রমিকও সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যন্ত্রের মাধ্যমে মাটি কেটে তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, দ্রুত গতিতে চলছে আশপাশের রাস্তা পরিষ্কারের কাজ। আহতদের দেখতে আজ সকালে জোশীমঠের আইটিবিপি-র হাসপাতালে গিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত।
উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার জোশীমঠে রবিবার মহাপ্রলয় ঘটেছে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও হিমবাহে ভাঙনের ফলে তৈরি হওয়া তুষারধসে লণ্ডভণ্ড গোটা এলাকা। একের পর এক বাঁধ ভেঙেছে। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩৬ জন। পাশাপাশি নিঁখোজ ১৭০-র বেশি মানুষ। তুষারধসের কবলে রুদ্ধ হয়ে পড়েছিল ১৮০ মিটারের তপোবন সুড়ঙ্গ। তবে ইতিমধ্যে সেখানকার ১৩০ মিটার পথ পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ঘণ্টার প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার বেগে তুষারধসের রেশ বয়ে গিয়েছে তপোবন সুড়ঙ্গ দিয়ে। আপাতত গোটাটা জুড়ে শুধু কাদার পুরু আস্তরণের প্রলেপ। সেখানে থেকেই আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করে আনার লক্ষ্যে কাজ চালানো হচ্ছে। সেনা, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, সদস্যরা যৌথভাবে যে কাজ চালাচ্ছেন।
এই ধরনের বিপর্যয়ের পর উদ্ধারকাজে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় দুর্গম এলাকা। তার ওপর জোশীমঠের কাছে বানের জলের তোড়ে একাধিক সেতু ভেঙে গিয়েছে। তা দ্রুত মেরামত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন। কিন্তু, উত্তরাখণ্ডের ওপর বারবার এই বিপর্যয় নেমে আসছে কেন? সেটাই ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।
এই বিষয়ে আইআইটি খড়গপুরের ভূতত্ত্ববিদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘হিমালয় এলাকায় কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, পরিবেশকে অগ্রাহ্য করে, বিজ্ঞানকে অগ্রাহ্য করে নির্মাণকাজ হচ্ছে, বসতি হচ্ছে। যাকে আমরা ভৌগলিক পরিভাষায় বলি নিও টেকটনিক সিস্টেম। পরিবেশের সঙ্গে হিমালয়ের সামঞ্জস্য মানা হচ্ছে না। এই ধরণের ঘটনার জন্য আমরাই দায়ী।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপিকা ও রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বলছেন, ‘ভাঙা-গড়ার খেলা ওখানে চলে। বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নদীর স্বাভাবিক গতিপথ নষ্ট হচ্ছে। পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিবেশ পরিবর্তন হচ্ছে। হিমাবাহের উপর বরফ পড়ায় হিমবাহ ভেঙে যায়। বহু গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
কিন্তু, উত্তরাখণ্ডের ওপর বারবার এই বিপর্যয় নেমে আসছে কেন, সেটাই ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। ২০১৩ সালে কেদারনাথ বিপর্যয়ের পর, পার্বত্য এলাকায় যত্রতত্র বাঁধ এবং অন্যান্য নির্মাণকে দায়ী করেন অনেকে।