Corona Origin Speculations: উহানের ল্যাব থেকেই ছড়িয়েছে করোনার ভাইরাস, দাবি পুণের বিজ্ঞানী দম্পতির
রাহুল বাহুলিকর এবং মোনালি রাহালকর নামে ওই দম্পতির দাবি, উহানের ল্যাবে গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তন ঘটান...
পুণে: উহানের ল্যাব থেকেই ছড়িয়েছে করোনার ভাইরাস। ফের এমন দাবি করলেন পুণের বিজ্ঞানী দম্পতি।
রাহুল বাহুলিকর এবং মোনালি রাহালকর নামে ওই দম্পতির দাবি, উহানের ল্যাবে ভাইরাস নিয়ে গবেষণা চলছিল। বিজ্ঞানীরা ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তন ঘটান। এবং পরে সেখান থেকেই ছড়িয়েছে মারণ ভাইরাস।
কোথা থেকে এই ভাইরাস ছড়াল? এই প্রশ্নের উত্তরে কেউ দাবি করেছেন, ল্যাব থেকে, কেউ বলেছেন - উহানের বাজার থেকে। এবার ল্যাব-তত্ত্বকেই আরও জোরদার করল ভারতীয় বিজ্ঞানী দম্পতির দাবি।
কোথা থেকে ভাইরাস ছড়াল, এ বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পর নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এই প্রেক্ষিতেই, পুণের দম্পতি জানান, প্রথমে তাঁদের এই তত্ত্ব সকলে খারিজ করে দিয়েছিল। কিন্তু, বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই নিয়ে ফের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এর থেকেই স্পষ্ট, জল্পনার মধ্যে কিছু সত্যতা রয়েছে।
তাঁরা বলেন, আমরা ২০২০ সালের এপ্রিলে গবেষণা শুরু করি। আমরা খুঁজে পাই যে, সার্স-সিওভি-২ ভাইরাস পরিবারের এক সদস্য আরএটিজি১৩ ভাইরাসকে দক্ষিণ চিনের উনান প্রদেশের মোজিয়াংয়ে অবস্থিত একটি খনির মুখ থেকে সংগ্রহ করে উহান ইনস্টিটিউট অফ ভিরোলজি।
দম্পতি আরও বলেন, আমাদের গবেষণায় উঠে আসে যে ওই খনিগহ্বরে বাদুড়র উপদ্রব ছিল। তাদের বর্জ্যকে পরিষ্কার করার জন্য ৬ খনিকর্মীকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের সকলের নিউমোনিয়া-জাতীয় অসুস্থতা ধরা পড়ে।
ভাইরাস নিয়ে কিছু গবেষণা চালাচ্ছিল উহান ইনস্টিটিউট অফ ভিরোলজি সহ শহরের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভাইরাসের জিনোমে বেশ কিছু পরিবর্তন করেন তাঁরা। তাতেই, নোভেল করোনাভাইরাসের জন্ম হয় বলে দাবি এই গবেষক-দম্পতির।
রাহুল বাহুলিকরের দাবি, তাঁরা তাঁদের গবেষণাপত্র প্রকাশ করার কিছুদিন পর, ট্যুইটারের মাধ্যমে এক ব্যক্তি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। যার ইউজার আইডি -- সিকার। যিনি নিজেকে ড্র্যাস্টিক নামে এক গোষ্ঠীর সদস্য বলে জানান। ওই গোষ্ঠীও গবেষণাগার-তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালাচ্ছিল।
সিকারের বিশেষত্ব ছিল গোপন গবেষণা নথি জোগাড় করা। তিনিও একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে খনিকর্মীদের অসুস্থ হওয়ার কথা উল্লেখ ছিল।
রাহুল বাহুলিকরের দাবি, সিকার তাঁদের জানিয়েছিলেন, ওই খনিকর্মীদের উপসর্গের সঙ্গে করোনার উপসর্গের অনেকটাই মিল ছিল। মোনালি যোগ করেন, যদি তা বাদুড়ের থেকে আসত, তাহলে উনানে অনেকেই আক্রান্ত হতেন। কিন্তু, তেমন কোনও উদাহরণ নেই।
দ্বিতীয়ত, ভাইরাসটি কোনও বাদুড় থেকে কোনও মানুষের শরীরে এসেছে। পরে সেখান থেকে উহানের বাজারে এসেছে-- এমন তত্ত্বের কোনও প্রমাণ নেই।
তিনি জানান, প্রথম থেকেই ভাইরাসটি মানুষকে আক্রমণ করার জন্য যেন তৈরি হয়েই ছিল। এর থেকেই স্পষ্ট, ভাইরাসটি সম্ভবত গবেষণাগারে তৈরি।
গবেষক দম্পতির অভিযোগ, গবেষণাগার তত্ত্বকে সঠিকভাবে তদন্ত করেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাঁরা এই তত্ত্বের সঠিক তদন্তের দাবিও তুলেছেন। জানান, এই মর্মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে চিঠিও দিয়েছেন।
এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ৯০ দিনের মধ্যে গবেষণাগার তত্ত্ব সংক্রান্ত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ভারত এই বিষয়টিকে সমর্থন করেছে।
প্রসঙ্গত, গত মাসে ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মার্কিন বিদেশ দফতরের হাতে এমন কিছু নথি এসেছে, যা থেকে স্পষ্ট যে কোভিড অতিমারীর পাঁচ বছর আগে থেকে করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিলেন চিনা সামরিক বিজ্ঞানীরা। এমনটাই দাবি করা হয়েছে ।
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, চিনা প্রশাসন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা করেছিল। আর তা থেকে মারণ জৈব অস্ত্র তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছিল বেজিং।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রশাসনের কাছে যে নথি এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে ২০১৫ সালে চিনের সামরিক বিজ্ঞানী ও জনস্বাস্থ্য আধিকারিকদের লেখা একটি রিপোর্ট, যেখানে তাঁরা কোভিড-১৯ ভাইরাসের উৎস নিয়ে তদন্ত করেছেন।
সংবাদপত্রের দাবি, চিনা বিজ্ঞানীদের রিপোর্টে সার্স করোনাভাইরাসকে নতুন প্রজন্মের জেনেটিক অস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবাদপত্রের দাবি, মার্কিন প্রশাসনের হাতে আসা চিনা রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট, চিনা বিজ্ঞানীরা এমন একটা জৈব অস্ত্র তৈরি করতে চাইছিলেন, যা শত্রুর মেডিক্যাল ব্যবস্থাকে তছনছ করে দেবে।
চিনা বিজ্ঞানীরা নিজেদের রিপোর্টে প্রাক্তন মার্কিন বায়ুসেনা কর্নেল জে আইন্সকফের উল্লেখও করেন, যিনি একসময় বলেছিলেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হলে তা জৈবঅস্ত্র দিয়ে হবে।
চিনা বিজ্ঞানীরা তাঁদের রিপোর্টে উল্লেখ করেন, ২০০৩ সালে চিনে ছড়িয়ে পড়া সার্স ভাইরাস আদতে ছিল একটি মানুষের তৈরি জৈব অস্ত্র যা সন্ত্রাসবাদীরা ব্যবহার করেছিল।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন ভাইরাসের খোঁজ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন চিনা বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলেছিলেন, যে কোনও প্রচলিত ভাইরাসের মধ্যে নতুন ভাইরাসকে কৃত্রিমভাবে ঢুকিয়ে দেওয়া সম্ভব। এরপর তাকে অস্ত্রে পরিণত করে ছেড়ে দিতে হবে। যা ঘটবে তা অকল্পনীয়।