কাঁকুড়গাছিতে নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে সিবিআই, দুই অফিসারকে চিহ্নিত করে ঢুকতে বাধা
আজ কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার ওই দুই আধিকারিক তাঁদের বাড়িতে গেলে, আপত্তি জানান তিনি।
কলকাতা: সিবিআইয়ের সামনেই কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার দুই অফিসারকে চিহ্নিত করে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দিলেন নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের দাদা। এদিন কাঁকুড়গাছিতে নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে যায় সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল। গতকাল সিবিআইয়ের কাছে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার দুই আধিকারিককে চিহ্নিত করে, সাদা কাগজে সই করার জন্য তাঁদের ওপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ তোলেন নিহত বিজেপি কর্মীর দাদা। প্রমাণস্বরূপ একটি ভিডিও-ও CBI-এর হাতে তুলে দিয়েছে নিহতের পরিবার।
আজ কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার ওই দুই আধিকারিক তাঁদের বাড়িতে গেলে, আপত্তি জানান নিহত বিজেপি কর্মীর দাদা। শেষ পর্যন্ত ফিরে যান কলকাতা পুলিশের ওই দুই আধিকারিক। বাংলায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগে এ পর্যন্ত ৯টি মামলা রুজু করেছে সিবিআই।
গতকাল কাঁকুড়গাছির নিহত বিজেপি কর্মীর দাদা বিশ্বজিত্ সরকার জানান, এই দু’জন বাড়িতে আসে। সাদা কাগজে সই করানোর জন্য চাপ দেয়। এর চেয়ে বড় কালপ্রিট ওসি নারকেলডাঙা। তাঁকে দেখতে পেলাম না। হয়ত পরবর্তীকালে দেখতে পাব।
২ মে, ভোটের ফল ঘোষণার পর, মৃত্যু হয় কাঁকুরগাছির বাসিন্দা, বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের সক্রিয় সদস্য অভিজিৎ সরকারের। পরিবারের অভিযোগ, ভোটের ফল বেরনোর দিন শ্বাসরোধ করে, মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয় তাঁকে। ঘটনার তদন্তে বুধবার নিজাম প্যালেসে ডাকা হয় মৃতের দাদা বিশ্বজিত্ সরকারকে। তিনি সিবিআই দফতরে ঢোকার আধঘণ্টা পর, কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার ৩ আধিকারিক সিবিআই দফতরে পৌঁছন।
CBI সূত্রে দাবি, তখনই তাঁদের মধ্যে ২ জনকে চিহ্নিত করেন মৃতের দাদা। এনিয়ে CBI-এর কাছে একটি ভিডিও-ও পেশ করেছেন তিনি। যেখানে বিশ্বজিত্ সরকার দাবি করেছেন, এদিন হোমিসাইড শাখার যে আধিকারিকরা সিবিআই দফতরে যান, তাঁদের মধ্যে, দু’জন তাঁদের বাড়িতে গেছিলেন।
উল্লেখ্য গত ১৯ অগাস্ট ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় সিবিআইকে তদন্তভার দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। এদিন সকালে মামলার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্ট। রায় দিয়ে আদালত জানায়, খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যু, ধর্ষণের মতো গুরুতর ঘটনার মামলার তদন্ত করবে সিবিআই। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তের জন্য সৌমেন মিত্র, সুমন বালা-সহ ৩ জনকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্যের সিট। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে কাজ করবে সিট। অন্যদিকে, মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে দুষ্কৃতীদের তালিকায় একাধিক তৃণমূল নেতার যুক্ত থাকার আবেদনও খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের তদন্ত নিয়ে গতকাল নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টরদের বৈঠক হয়। CBI’এর স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের প্রধান অখিলেশ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন CBI’এর জয়েন্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার চার IPS অফিসার।
সূত্রের খবর সেই বৈঠকে ঠিক হয়, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের তদন্তে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় বাড়তি গুরুত্ব দেবে CBI। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে সরাসরি অভিযোগ জানানো যাবে। CBI সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে, ঠিক করবে, কোন ধারায়, কাদের বিরুদ্ধে FIR হবে। সিবিআই দাবি করেছে, এফআইআর-এর সংখ্যা বাড়তে পারে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, একাধিক জায়গায় অভিযোগ জানাতে পারেনি।