কুলগামে খুন বিজেপির ৩, 'বলিদান ব্যর্থ যাবে না', বললেন নাড্ডা, 'মূল্য চোকাতে হবে পাকিস্তানকে', তোপ স্থানীয় শীর্ষ নেতার
হামলার দায় স্বীকার করে লস্কর ঘনিষ্ঠ জঙ্গি সংগঠন....
নয়াদিল্লি: জঙ্গি হামলায় দলের তিন যুব কর্মীর নিহত হওয়ার ঘটনায় শোকপ্রকাশ করলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। তিনি জানান, এই তিন কর্মীর মৃত্যু বিফল যাবে না। শোকপ্রকাশ করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের বিজেপি সভাপতি রবীন্দ্র রায়নাও। জানান, এই ঘৃন্য কাজের জন্য পাকিস্তানিদের মূল্য চোকাতে হবে। সকলকে নিকেশ করা হবে।
গতকাল জম্মু কাশ্মীরের কুলগামে জঙ্গি হামলায় নিহত হন এক বিজেপি নেতা সহ তিন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন বিজেপির দুই কর্মী ও যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক। মৃতেরা হলেন বিজেপি যুব মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদক ফিদা হুসেন ইট্টো এবং দুই জেলা কার্যনির্বাহী সদস্য উমের রশিদ বেগ ও উমের হাজম।
পুলিশ সূত্রে খবর, কাজিগুন্দের ওয়াইকে পোরা এলাকা দিয়ে গতকাল গাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনজন। সেইসময় জঙ্গিরা গুলি ছুড়তে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই বিজেপি যুব মোর্চার নেতাসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। ঘটনার দায় স্বীকার করে লস্কর ঘনিষ্ঠ জঙ্গি সংগঠন। এর আগে, বিজেপি নেতা শেখ ওয়াসিম বারি, তাঁর ভাই ও কংগ্রেস সরপঞ্চ অজয় পণ্ডিতকে গত জুলাই মাসে হত্যা করা হয়।
নাড্ডা ট্যুইট করে বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগামে এক কাপুরুষোচিত হামলায় জঙ্গিরা বিজেপি যুব মোর্চা সাধারণ সম্পাদক ফিদা হুসেন সহ তিনজনকে হত্যা করেছে। এধরনের দেশপ্রেমীর মৃত্যু রাষ্ট্রের কাছে বিরাট ক্ষতির। ওদের পরিবারের সঙ্গে গোটা সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হল। এই বলিদান ব্যর্থ যাবে না। পরিবারকে সমবেদনা।
হামলার তীব্র নিন্দা করেছে দলের জম্মু ও কাশ্মীর শাখাও। তারা জানিয়েছে, ওই হামলার নেপথ্যে যারা রয়েছে, তাদের ছাড়া হবে না। এদিন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী কবিন্দর গুপ্ত দাবি করেন, ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও পিপিলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) নেতারা যে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন, এই হামলা তারই ফল। তিনি বলেন, বর্বরোচিত জঙ্গি হামলায় আমরা দলের তিন একনিষ্ঠ কর্মীকে হারালাম। আমার মনে হয়, এনসি ও পিডিপি নেতাদের উস্কানিই এই হামলার জন্য দায়ী। তবে, আমরা এসব বরদাস্ত করব না। হত্যাকারীদের তাদের ভাষাতেই উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
গুপ্তা যোগ করেন, ওই তিন একনিষ্ঠ কর্মীর মৃত্যু বিজেপি ও দেশের কাছে বড় ক্ষতি। কাশ্মীর উপত্যকায় তেরঙা ধরার জন্য যারা সওয়াল করছে, তাদের কণ্ঠরোধ করার একটা অপচেষ্টা চলছে। কিন্তু, তাতেও কোনও লাভ নেই। জাতীয়তাবাদের এই ঢেউ রোখা যাবে না। গোটা হামলার ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
গুপ্তার মতো একই কথা বলেছেন জম্মু ও কাশ্মীর বিজেপির রাজ্য সভাপতি রবীন্দ্র রায়নাও। তিনিও একই অভিযোগ করেন। বলেন, গুপকর গ্যাংয়ের উস্কানি এই ঘটনার জন্য দায়ী। ওরা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। প্রতিনিয়ত ওদের বক্তব্য চিন ও পাকিস্তানের নাম উঠে আসছে। কাশ্মীরিদের উসকাচ্ছে। আগুন নিয়ে খেলা উচিত নয়। তাতে দেশবিরোধী জোট আরও শক্তিশালী হয় এবং মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। সমগ্র পরিবেশ তারা দূষিত করে।
রায়না জানান, গত ২৬ অক্টোবর কাশ্মীরে যোগদান দিবস উদযাপিত হয়েছে, তাতে বিপন্ন বোধ করেছে জঙ্গি ও তাদের সমব্যথীরা। এই তিন জনও তাতে অংশ নিয়েছিল। হামলাকারীদের মূল্য চোকাতে হবে। কাপুরুষ পাকিস্তানকে এই পাপের মূল্য চোকাতে হবে। সকলকে নিকেশ করা হবে।