Manipur Situation: নতুন করে অশান্ত মণিপুর, এনকাউন্টারে হত ১০, কার্ফু জারি করল সরকার
Maniour News: সোমবার অসম সীমান্ত লাগোয়া জিরিবাম জেলায় সন্দেহভাজন কুকি উগ্রপন্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে নিরাপত্তা বাহিনীর।
ইম্ফল: নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল মণিপুরে। সন্দেহভাজন ১০ কুকি উগ্রপন্থীর মৃত্যু হল সেখানে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালীন, জিরিবাম জেলায় এনকাউন্টারে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালীন, CRPF-এর এক জওয়ানও আহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে জিরিবামে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করেছে রাজ্যের সরকার। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে। (Manipur Situation)
সোমবার অসম সীমান্ত লাগোয়া জিরিবাম জেলায় সন্দেহভাজন কুকি উগ্রপন্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে নিরাপত্তা বাহিনীর। গুলি বিনিময় চলাকালীন CRPF-এর এক জওয়ান আহত হন। তাঁকে অসমের সিলচর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ১০ সন্দেহভাজন কুকি উগ্রপন্থীরও। তাঁদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। (Maniour News)
স্থানীয় সূত্রে খবর, গরকাল জিরিবামে দুই দিক থেকে নিরাপত্তাবাহিনীর উপর হামলা চালায় সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিরা। বোরোবেকরা থানার কাছে সেখানে একটি ত্রাণশিবির গড়ে তোলা হয়েছে। হিংসার বলি হওয়া, ঘরছাড়া মানুষজন ওই শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। আসলে ওই ত্রাণশিবিরে হামলা চালানোই লক্ষ্য ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দুপুরে অটো রিকশা করে ওই জিরিবামের বোরোবেকরায় এসে পৌঁছয় উগ্রপন্থীরা।
Today, 11th November, 2024 at about 3 pm, the CRPF Post located at Jakuradhor and Borobekra Police Station (located nearby), Jiribam District were attacked by armed militants. The security forces retaliated strongly. Due to the attack, one CRPF constable namely Sanjeev Kumar… pic.twitter.com/8ORw3EB4Pg
— Manipur Police (@manipur_police) November 11, 2024
বিগত কয়েক মাসে বার বার হামলা হয়েছে ওই বোরোবেকরা থানায়। গতকাল থানায় হামালর পর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে উগ্রপন্থীরা। থানা থেকে ৪০০ মিটার দূরত্বে জাকুরাদর কারংয়ে ছোট বসতি রয়েছে। সেখানেই এর পর হামলা চালাতে শুরু করে উগ্রপন্থারী। বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরানো হয়। সেই সময় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময় শুরু হয় তাদের। জিরিবামে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়েছে CRPF.
সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থল থেকে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। AK সিরিজের অ্যাসল্ট রাইফেল ছাড়াও, রকেট-প্রপেল্ড গ্রেনেড উদ্ধার হয়েছে প্রচুর। মণিপুরের নাগরিক কুকি সমাজের সদস্যরা এই ঘটনায় অবরোধ ঘোষণা করেছেন। এনকাউন্টারে নিহত সন্দেহভাজন উগ্রপন্থীদের তাঁরা 'village Volunteers' বলে উল্লেখ করেছেন। প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হলে, কুকি নাগরিক সমাজের দাবি, তাদের স্বেচ্ছাসেবকরা সিঙ্গল-ব্যারেল্ড বন্দুক ব্যবহার করে, যার লাইসেন্স ছিল। যদিও নিরাপত্তা বাহিনী যে ছবি প্রকাশ করেছে, তা অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে।
The Manipur government imposed an indefinite curfew across the entire Jiribam district, effective immediately.
— Press Trust of India (@PTI_News) November 11, 2024
This measure has been implemented to prevent potential disturbances and ensure the maintenance of law and order. pic.twitter.com/KhqMwz6CD7
গত সপ্তাহ থেকেই উত্তপ্ত জিরিবাম। নতুন করে হিংসা, অশান্তির খবর উঠে আসছে সেখান থেকে। বৃহস্পতিবার হমার উপজাতি সম্প্রদায়ের এক মহিলা খুন হন। সন্দেহভাজন মেইতেই উগ্রপন্থীরা তাঁকে খুন করে বলে অভিযোগ উঠে আসে। জিরিবামে বেশ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগও করা হয়। ওই মহিলার স্বামী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, স্ত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।
এর একদিন পর মেইতেই সম্প্রদায়ের এক মহিলার মৃত্যু হয় গুলিবিদ্ধ হয়ে। সন্দেহভাজন কুকি উগ্রপন্থীরা তাঁকে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠে আসে। ধানজমিতে কাজ করার সময় গুলিবিদ্ধ হন ওই মহিলা। সোমবার সকালে আবার ইম্ফলের পূর্বে পাহাড়ি এলাকায় সন্দেহভাজন কুকি উগ্রপন্থীরা এলোপাথাড়ি গুলি চালায় বলে অভিযোগ সামেন আসে। এক কৃষক আহতও হন। কৃষিকার্যের সঙ্গে যুক্ত যাঁরা, তাঁরা জানিয়েছেন, ফসল ঘরে তোলার সময় হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে জমিতে যেতেই ভয় পাচ্ছেন সকলে।
জিরিবামের পাশাপাশি, অন্যান্য জায়গা থেকে অশান্তির খবর উঠে আসছে। শনিবার থামনাপোকপি এবং সানাসাবিতে সন্দেহভাজন কুকি উগ্রপন্থীদের সঙ্গে সংঘার্ষ বাধে নিরাপত্তা বাহিনীর। রাত ৯.৩০টা থেকে সংঘর্ষ শুরু হলে পর দিন বিকেল ৪টে পর্যন্ত গুলি বিনিময় চলে। মণিপুরে হিংসাত্মক ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২০০-র বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে।