ভোপালে খুন বাঁকুড়ার যুবতী, হত্যার পর দেহ বাক্সে পুরে মেঝেতে পুঁতে রেখেছিল প্রেমিক
ভোপাল: ভোপালে প্রেমিকের হাতে খুন বাঁকুড়ার যুবতী। দেহ বাক্সে পুরে মেঝেতে পুঁতে, তার ওপর কংক্রিটের গাঁথনি তৈরি করে দেয় প্রেমিক। পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরার মুখে এমন চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি করেছে ধৃত।
যাকে ভালবেসেছিলেন, তার হাতেই গেল প্রাণ। প্রেমিকাকে খুন করে, মেঝেতে পুঁতে, তার ওপর কংক্রিটের গাঁথনি তৈরি করেছিল প্রেমিক। যে বাড়িতে লিভ ইন করতেন ওই যুবতী, সেখান থেকেই দেহের হদিশ পেল পুলিশ। গ্রেফতার হল প্রেমিক।
নিহত আকাঙ্খা শর্মা এরাজ্যেরই বাঁকুড়ার বাসিন্দা। আর তার প্রেমিক উদয়ন ভোপালের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনের পরিচয় ফেসবুকে। আকাঙ্খার পরিবারের দাবি, গত বছরে আকাঙ্খা হঠাৎই জানান, তিনি আমেরিকায় চাকরি পেয়েছেন।
সেখানে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে যান আকাঙ্খা। তারপর থেকে বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল শুধু ফোনে। কিন্তু, জুন মাস থেকে হঠাৎ ফোন আসা বন্ধ হয়ে যায়। বেশ কিছুদিন কাটার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার।
পরিবারের দাবি, মেয়ে যে নিখোঁজ, সেটা তাঁরা প্রথমে টেরই পাননি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়, ৫ জানুয়ারি, প্রেমিক উদয়নের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে আকাঙ্খার পরিবার।
কিন্তু, এরপর আকাঙ্খার মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখতে গিয়ে চমকে ওঠেন পুলিশকর্তারা। দেখা যায়, জুন মাস থেকে আকাঙ্খার মোবাইল ফোন রয়েছে ভোপালে। এরপরই পুলিশ ভোপালে খোঁজখবর নিতে শুরু করে।
তদন্ত চালিয়ে জানা যায়, ভোপালের গোবিন্দপুরা থানা এলাকার সাকেতনগরে এক অ্যাপার্টমেন্টে উদয়ন দাস নামে এক যুবকের সঙ্গে থাকতেন আকাঙ্খা। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার পুলিশ ভোপালের সাকেতনগরে পৌঁছোয়। সরাসরি অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে উদয়নকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে তারা।
সাকেতনগরের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় আকাঙ্খার দেহ। দেহ বাক্সে পুরে মেঝেতে পুঁতে, তার ওপর কংক্রিটের গাঁথনি তৈরি করে দেয় উদয়ন। জেরায় অপরাধের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত, দাবি পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে দাবি, লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদের মুখেই ভেঙে পড়ে উদয়ন। স্বীকার করে আকাঙ্খাকে সেই খুন করেছে। কিন্তু, পুলিশ সূত্রে দাবি, এরপর উদয়ন যা জানায়, তা শুনে অফিসাররাও শিউড়ে ওঠেন। পুলিশ সূত্রে দাবি, উদয়ন জানায়, তারা লিভ ইন করত।
কিন্তু, ইদানীং তার সঙ্গে প্রায়শই আকাঙ্খার মতের অমিল হচ্ছিল। সেই জন্যই আকাঙ্খাকে সে গলা টিপে খুন করে। তারপর তার দেহ বাক্সে ভরে মেঝেতে পুঁতে দেয়। কেউ যাতে দেহের হদিশ না পায়, সেজন্য মেঝের ওপর তৈরি করে কংক্রিটের গাঁথনি। গাঁথনি ভেঙে দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে দাবি, উদয়ন ও আকাঙ্খা এক বছর আগে এই অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেয়। উদয়নের মা ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে ডিএসপি ছিলেন। বাবা ভেলের প্রাক্তন কর্মী। তাঁরা দিল্লিতে থাকেন।
সাকেতনগরে উদয়ন ও আকাঙ্খাকে সকলে দম্পতি হিসেবেই জানতেন। নিহত আকাঙ্খার বাবা দেবেন্দ্রকুমার শর্মা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের প্রাক্তন অফিসার। তাঁরা অবশ্য এনিয়ে এখন মুখ খুলতে চাননি।
পুলিশ সূত্রে দাবি, উদয়ন স্বীকার করেছে, খুন ও দেহ পুঁতে দেওয়ার কাজে তাকে সাহায্য করেছে এক সঙ্গী। তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।