শিশুপাচারকাণ্ডে কৈলাশকে জেরা সিআইডি-র, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’, দাবি বিজেপির
কলকাতা: শিশুপাচারকাণ্ডে কৈলাস বিজবর্গীয়কে জিজ্ঞাসাবাদ সিআইডি-র। রবিবার মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে গিয়ে তাঁকে দু’ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সিআইডি সূত্রে দাবি। পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই বিজেপি নেতা এর নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখছেন। যদিও, তৃণমূল এমন অভিযোগ মানতে নারাজ। রবিবার সিআইডি-র একটি দল পৌঁছে যায় মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে। সেখানেই তাঁরা শিশুপাচার কাণ্ড নিয়ে ২ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এরাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে। সিআইডি সূত্রে দাবি, জলপাইগুড়িতে যে হোমের আড়ালে শিশুপাচার চক্রের অভিযোগ ওঠে, তার কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তীকে জেরায় উঠে আসে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নাম। হোমের লাইসেন্স পেতে চন্দনাকে সাহায্য করেন বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরী। আর জুহির সঙ্গে পরিচয় ছিল কৈলাস বিজয়বর্গীয়র। সিআইডি সূত্রে দাবি, তদন্তে জানা যায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র এক আপ্তসহায়কই নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রকে জুহি ও চন্দনার অ্যাপয়েন্টমেন্ট করিয়ে দেন। যদিও সিআইডি সূত্রে খবর, ইনদওরে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে কৈলাস বিজয়বর্গীয় দাবি করেছেন, জুহিকে তিনি চেনেন না। হোমের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার মতো কোনও কাজের জন্য তিনি কাউকে ফোন করেননি বা কিছু বলেননি। এর আগেও কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠায় সিআইডি। কিন্তু, তিনি সিআইডি-র সামনে হাজির হননি। উল্টে নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে যান ইনদওর হাইকোর্টে। আদালত তাঁর হাজিরার ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। পরে ইনদওর হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে ইনদওর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তারাই জেরার ব্যবস্থা করে দেবে। সিআইডি সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে আদালতের নির্দেশ নিয়েই কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা৷ পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই বিজেপি নেতা অবশ্য অভিযোগ করেছেন, এটা তৃণমূলের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। পাশাপাশি দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, বিজেপি নেতাদের জড়িয়ে কেস সাজানো হয়েছে। মানুষকে দেখাতে চাইছে, বিজেপি নেতারাও দুর্নীতিগ্রস্থ। তৃণমূল এই অভিযোগ মানতে নারাজ। অনেকে বলছেন, সারদা-নারদাকাণ্ডের সময় সিবিআই বা ইডি যখন তৃণমূল শীর্ষনেতাদের ডাকত, তখন তারাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলত। সারদাকাণ্ডে তৃণমূল নেতা মদন মিত্র, রজত মজুমদার, সৃঞ্জয় বসুদের গ্রেফতার করা হয়। শুভেন্দু অধিকারী, শতাব্দী রায়, অর্পিতা ঘোষের মতো তৃণমূল সাংসদদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তৃণমূলের তৎকালীন শীর্ষ নেতা তথা বর্তমানে বিজেপি নেতা মুকুল রায়কেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। সেই সময় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে পথে নেমেছিল তৃণমূল। নারদকাণ্ডেও তৃণমূলের ১২ জন নেতা, মন্ত্রী, সাংসদের বিরুদ্ধে সিবিআই যখন এফআইআর করে, তখনও একই অভিযোগে সরব হয় শাসক দল। এখন শিশুপাচারকাণ্ডে সিআইডি বিজেপির কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করায় গেরুয়া শিবিরের মুখেও সেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ।