চেন্নাই: ৭ মাস ধরে ১১ বছরের বধির বালিকাকে গণধর্ষণ, ১৭ অভিযুক্ত গ্রেফতার, আদালতে মার ক্ষুব্ধ আইনজীবীদের
চেন্নাই: ৭ মাস ধরে ১৮ জন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির লালসার শিকার হতে হল ১১ বছরের এক বধির বালিকাকে। হাড় হিম করে দেওয়া এই ঘটনা চেন্নাইয়ের। ওই ছাত্রী যেখানে থাকে, সেই বহুতলেই ঘটনাটি এতদিন ধরে ঘটেছে। অবশেষে ১৭ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিন আদালতে পেশ করা হলে ধৃতদের ৩১ তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এরপরই, আদালত থেকে বের করার সময় অভিযুক্তদের বেদম মারধর করে আইনজীবীদের একাংশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটি সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। আয়ানাবরাম অঞ্চলের একটি আবাসনে মেয়েটি তার পরিবারের সঙ্গে থাকে। অভিযোগ, সাত মাাস ধরে ওই আবাসনেই তার ওপর নারকীয় অত্যাচার চালানো হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে ওই বহুতলের নিরাপত্তা রক্ষী, প্লাম্বার, ইলেকট্রিশিয়ান, লিফট অপারেটর, জল সরবরাহকারীরা। ৭ মাস ধরে এই ঘটনা ঘটার পর অবশেষে নিজের দিদির কাছে সব কথা বলে সে। দিদি তাদের বাবা মাকে জানায়। এরপর গত ১৫ তারিখ অভিযোগ দায়ের হয় পুলিশে।
পুলিশ বলেছে, ওই বালিকার মা অভিযোগ করেছেন, ১৫ জনের মত লোক বহুতলের ভেতরে নানা জায়গায় নানা সময় তাঁর মেয়েকে যৌন হেনস্থা করেছে। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, বালিকাকে জোর করে কখনও ইঞ্জেকশন দিয়ে নিস্তেজ করে, কখনও মাদক মেশানো কোল্ড ড্রিঙ্কস খাইয়ে আবার কখনও কোকেনের মতে গুঁড়োজাতীয় মাদক শুঁকিয়ে মাসের পর মাস তাকে লালসার শিকার করা হয়। শুধু তাই নয়, ওই পাশবিক ঘটনার ভিডিও করে অভিযুক্তরা।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই গোটা শহর তথা রাজ্যজুড়ে প্রবল শোরগোল পড়ে যায়। অভিযুক্তদের গ্রেফতারি ও কঠোর শাস্তির দাবিতে দিকে দিকে বিক্ষোভ শুরু হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে। জেরায় চারজন স্বীকার করে, তারা ওই ঘৃণ্য কাজ করেছে। বাকিরা জানায়, তারা শ্লীলতাহানি করেছে। এদিন প্রবল বিক্ষোভের মুখে তাদের মহিলা আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক সকলকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়ে দেন।
https://twitter.com/ANI/status/1019179053142683649এদিকে, যখন অভিযুক্তদের আদালত থেকে বের করা হচ্ছিল, তখন তাদের বেদম মারধর করে আইনজীবীদের একাংশ। অভিযুক্তদের হাতের কাছে পেয়ে কিল, চড়-থাপ্পড়, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন জনা ৫০ আইনজীবী। তাদের টেনে-হিঁচড়ে নিচে নিয়ে এসে ফের মারা হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশকর্মীরা আইনজীবীদের রোষ থেকে অভিযুক্তদের বাঁচাতে পারেনি। নিমেষে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ৯ জন ফের আদালত কক্ষের মধ্যে ঢুকে পড়ে। বাকি ৮ জনকে কোনওমতে সংলগ্ন পারিবারিক আদালতে ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ। সেই সময় উত্তেজিত আইনজীবীদের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করেন বিচারক ও পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা। বেশ কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে অভিযুক্তদের বের করে নিয়ে যায় পুলিশ। তার আগে, অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল না করার সিদ্ধান্ত নেয় মাদ্রাজ হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট সংগঠন।