আরএসএসের মঞ্চে ভাষণের জের? ১৩-ই ইফতার পার্টিতে প্রণবকে ডাকল না কংগ্রেস, আমন্ত্রণ নেই কেজরীবালেরও
নয়াদিল্লি: ইদের আগে আগামী ১৩ তারিখ দিল্লির পাঁচতারা তাজ হোটেলে ইফতারের আয়োজন করছে কংগ্রেস দল। সূত্রের খবর, বিরোধী দলগুলির তাবড় তাবড় নেতাদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তবে, এসবের মধ্যেই একটি বড় খবর প্রকাশ্যে এসেছে। তা হল, কংগ্রেসের এই ইফতারে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়নি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালকে।
কংগ্রেসের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলের ইফতারে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ করা ঠিক নয়। তার ওপর, ইফতারে যেহেতু বিরোধী তথা কংগ্রেসের সহযোগী দলগুলির প্রতিনিধিরা থাকবেন, তাই গোটা পরিবেশের রং রাজনৈতিক হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির থাকাটা কাম্য নয়।
কংগ্রেস যাই ব্যাখ্যা দিক না কেন, রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রণবকে আমন্ত্রণপত্র না পাঠানোর এই সিদ্ধান্ত অনেকাংশে সম্প্রতি তাঁর আরএসএস অনুষ্ঠানে যাওয়ায় অসন্তুষ্ট কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে সংঘের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নাগপুরে গিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। যা নিয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তুমুল শোরগোল পড়ে যায়।
কংগ্রেসের জনা তিরিশ নেতা প্রণবকে চিঠি লিখে তাঁকে ওই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার আবেদন করেন। এমনকী, বাবার এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভপ্রকাশ করেন প্রণব-কন্যা তথা কং নেত্রী শর্মিষ্ঠা। যদিও, পরে, প্রণবের বক্তৃতার প্রশংসা করে কংগ্রেস। তারা জানায়, বিজেপি ও আরএসএস-কে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়েছেন প্রণব।
প্রণবকে আমন্ত্রণ না পাঠানোর যুক্তি দেখালেও, কেজরীবালের ক্ষেত্রে তেমনটা করতে পারেনি কংগ্রেস। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের কংগ্রেস বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলিকে একত্রিত করার যে চেষ্টা চালাচ্ছে, সেই জোটে ঠাঁই হয়নি আম আদমি পার্টির। সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই অরবিন্দ কেজরীবালের দলকে এড়িয়ে চলছে কংগ্রেস। হাইকমান্ডের মতে, কেজরীবালের সঙ্গে হাত মেলালে, খোদ দিল্লিতে দলের ক্ষতি হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২ বছর পর ইফতারের আয়োজন করতে চলেছে কংগ্রেস। দলীয় সূত্রের খবর, দলের ‘মুসলিম-প্রীতি’ ভাবমূর্তি থেকে বেরিয়ে আসতে এবং ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে, সেই সময় দিল্লির আলাদা আলাদা জায়গায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভিন্ন সামগ্রী বিলি করেছিল দল।
কিন্তু, আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ফের ইফতার শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে, কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেল আলাদা করে ইফতারের আয়োজন করেছে।