হনিপ্রীত ইনসানকে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠাল পাঁচকুলা আদালত
পঞ্চকুলা: গুরমীত রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার প্রেক্ষিতে হওয়া হিংসায় যোগসাজসের অভিযোগে ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধানের ছায়াসঙ্গী হনিপ্রীত ইনসানকে ৬ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠাল পঞ্চকুলার একটি আদালত।
নিজেকে রাম রহিমের দত্তক কন্যা বলে দাবি করা প্রিয়ঙ্কা তানেজা ওরফে হনিপ্রীত ইনসানকে গতকাল পঞ্জাবের জিকাপুর-পাতিয়ালা রোড থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। থানায় তাঁকে রাত তিনটে পর্যন্ত জেরা করা হয়।
এদিন হনিপ্রীতকে আদালতে পেশ করা হয়। সেখানে হনিপ্রীতকে ১৪ দিনের হেফাজতের আবেদন জানায় পুলিশ। প্রায় এক-ঘণ্টার শুনানি শেষে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট রোহিত ব্যাস হনিপ্রীতকে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজত দেন।
এদিন কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে হনিপ্রীতকে আদালতে তোলা হয়েছিল। কম্যান্ডো-পাহারায় তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। হনিপ্রীতের সঙ্গে গতকালই গ্রেফতার করা হয় সুখদীপ কৌর নামে আরেক মহিলাকে। এদিন তাঁকেও ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত ২৫ অগাস্ট জোড়া ধর্ষণ কাণ্ডে রাম রহিমের ২০ বছর কারাদণ্ড ঘোষণার দিন থেকেই ফেরার ছিলেন হানিপ্রীত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, আদালত থেকে জেলে যাওয়ার পথে বাবাকে নিয়ে পালানোর ছক কষেছিলেন।
পাশাপাশি, হনিপ্রীতের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার পর সিরসা ও পাঁচকুলায় যে হিংসা ছড়ায় তার নেপথ্যে উস্কানি দিয়েছিলেন এই হনিপ্রীত। ওই হামলায় ৪১ জন মারা গিয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন পাঁচশোর বেশি মানুষ।
কিন্তু, রাম রহিমের জেলযাত্রার পরই গায়েব হয়ে যান হনিপ্রীত। তাঁর খোঁজে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং একইসঙ্গে নেপাল-সীমান্তেও তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু, খোঁজ মেলেনি তাঁর।
তাঁর নাম ৪৩ জন ওয়ান্টেড তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জারি করা হয় লুকআউট নোটিস। পরবর্তীকালে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয় তাঁর নামে। অবশেষে ৩৮ দিন পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিন আদালতে শুনানির সময়ে জোড়হাতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন হনিপ্রীত। আদালত কক্ষে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের অনেকের দাবি, হনিপ্রীতের চোখে জল ছিল। তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, আদালত যখন রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করে, তখন ডেরা প্রধানের সঙ্গেই ছিলেন হনিপ্রীত। তাহলে, কী করে তিনি হিংসায় মদত দিতে পারেন?
এর আগে, গতকাল রাতে হনিপ্রীতকে চণ্ডীমন্দির পুলিশ স্টেশনে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁকে জেরা করে হরিয়ানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় খুব একটা বেশি কিছু জানাননি হনিপ্রীত।