‘ভুয়ো’ মাদ্রাসার জন্য বছরে ১০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে, দাবি আদিত্যনাথ প্রশাসনের
লখনউ: রাজ্যে গজিয়ে ওঠা ‘ভুয়ো’ মাদ্রাসার ফলে ফি-বছর ১০০ কোটি টাকার বেশি লোকসান হচ্ছে। এমনটাই দাবি করল উত্তরপ্রদেশ সরকার।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই উত্তরপ্রদেশে মাদ্রাসাগুলির অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতে উদ্যোগ নিয়েছে যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসন। লক্ষ্য, মাদ্রাসাগুলির কাজে স্বচ্ছতা আনা। কিন্তু, অভিযোগ, একাধিকবার সময়সীমা বৃদ্ধি করা সত্ত্বেও মাদ্রাসা-পরিচালিত ১৪০টি মিনি আইটিআই-এর মধ্যে অন্তত ২০টি তাদের নাম নথিভুক্ত করায়নি।
রাজ্যের সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্রী লক্ষ্মীনারায়ণ চৌধুরি বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা উত্তরপ্রদেশের রাজ্য মাদ্রাসা বোর্ডের অনুমোদিত প্রায় ১৯,২১৩ মাদ্রাসা চলছে। এর মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার মাদ্রাসা বোর্ডের ওয়েবসাইটে নিজেদের সম্পর্কে তথ্য আপলোড করেছে। বাকি প্রায় ২ হাজার মাদ্রাসাও সরকারের এই উদ্যোগে সাড়া দেয়নি।
মন্ত্রী জানান, প্রতিবছর সরকারের তরফে ওই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০০ কোটি টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। তিনি যোগ করেন, এর থেকেই অনুমেয় যে, ওই মাদ্রাসাগুলি ভুয়ো এবং শুধুমাত্র কাগজ-কলমে রয়েছে। গোটা বিষয়টির তদন্ত করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, এই নথিভুক্তিকরণ প্রক্রিয়ার লক্ষ্য হল, মাদ্রাসায় সঠিক শিক্ষা প্রদান করা, শিক্ষক ও ছাত্রদের শোষণ রোখা এবং এটা নিশ্চিত করা যে স্কলারশিপের সুবিধা পড়ুয়াদের কাছে সরাসরি পৌঁছয়।
চৌধুরি বলেন, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে একাধিক অমিল ধরা পড়েছে। যেমন, একই শিক্ষকের নাম একাধিক মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, কীককে একজন শিক্ষক একইসময় একাধিক মাদ্রাসায় পড়াতে পারেন?
তাঁর মতে, কেবলমাত্র আসল মাদ্রাসাগুলিকে রাজ্যে চলতে দেওয়া হবে। মন্ত্রী জানান, এর জন্য মাদ্রাসা শিক্ষকদের নিয়োগ ও বহিষ্কারের ওপর নজরদারি রাখতে পৃথক আইন প্রণয়ন করার কথা ভাবছে আদিত্যনাথ প্রশাসন।
আদিত্যনাথ প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, রাজ্য সরকারের আধুনিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ৮,১৭১টি মাদ্রাসা। প্রকল্প অনুযায়ী গণিত, বিজ্ঞান, হিন্দি ও ইংরেজি বিষয় পড়ানোর জন্য শিক্ষকদের সাম্মানিকও দেওয়ার সংস্থান রয়েছে।
প্রকল্প অনুযায়ী, বিএড স্নাতকদের জন্য ৮ হাজার টাকা এবং বিএড স্নাতকোত্তরদের জন্য ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ওই আধিকারিকের অভিযোগ, সেই তালিকায় ঢুকে পড়েছে এই ‘ভুয়ো’ মাদ্রাসাগুলি। অর্থাৎ, কেউ কেউ অনৈতিকভাবে অর্থ উপার্জন করার জন্য এই পন্থা নিয়েছে।