সংস্থার আয়-বিতর্ক: ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের জয় শাহের
নয়াদিল্লি: তাঁর মালিকানাধীন সংস্থার বার্ষিক আয় সংক্রান্ত ‘ভিত্তিহীন’ খবর প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে তার বিরুদ্ধে সোমবার অনলাইন পোর্টাল ‘দ্য অয়ার’-এর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানি মামলা দায়ের করলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের ছেলে জয় শাহ।
জানা গিয়েছে, সোমবার আমদাবাদে ওয়েবসাইটের সম্পাদক সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন জয়। জয়ের হয়ে আদালতে সওয়াল করবেন গুজরাতের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তূষার মেটা। এর জন্য তিনি কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের অনুমতি নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মামলা দায়ের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন অতিরিক্ত প্রধান মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট এস কে গাদভী।
বিতর্কের সূত্রপাত রবিবার। অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য অয়ার’-এ প্রকাশিত একটি খবরকে ঘিরে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্রে মোদী সরকার তৈরি হওয়ার পর এক বছরে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের ছেলের ব্যবসা বেড়েছে ১৬ হাজার গুণ!
‘দ্য অয়ার’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে জয় শাহের মালিকানাদীন টেম্পল এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেডের বার্ষিক আয় ছিল মাত্র ৫০ হাজার টাকা। অথচ এক বছরের মধ্যেই সেই কোম্পানিরই ব্যবসা বেড়ে দাঁড়ায় ৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ একবছরে একলাফে ১৬ হাজার গুণ ব্যবসা বৃদ্ধি।
ওয়েবসাইটটি রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজ বা আরওসি-র দেওয়া তথ্যকে উদ্ধৃত করে দাবি করে-- ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে অমিত শাহর ছেলে জয় শাহর সংস্থার ৬ হাজার ২৩০ টাকা লোকসান হয়। ২০১৩-১৪ সালে লোকসান ছিল ১ হাজার ৭২৪ টাকা। ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে জয় শাহর সংস্থার মোট টার্নওভার ছিল ৫০ হাজার টাকা। তার মধ্যে লাভ হয় ১৮ হাজার ৭২৮ টাকা।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, পরের আর্থিক বছর অর্থাৎ ২০১৫-১৬ তেই সংস্থার ব্যবসা বেড়ে দাঁড়ায় ৮০ কোটি টাকায়। অর্থাৎ ১৬ হাজার গুণ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সেই সঙ্গে এই বছরেই জয় শাহর সংস্থার ইনভেন্ট্রি অর্থ সংস্থার সম্পত্তির পরিমাণও শূন্য থেকে একলাফে পৌঁছোয় ৯ কোটি টাকায়।
দ্য ওয়্যার নামে ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করে গতকালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে তীব্র আক্রমণ করে কংগ্রেস। তারা বলে, মোদী ক্ষমতা এসেছেন ২০১৪-র মে মাসে। অমিত শাহ বিজেপির সভাপতি হয়েছেন ২০১৪-য় ৯ জুলাই। আর অমিত শাহের ছেলের কোম্পানি একলাফে আশি কোটি টাকার ব্যবসা করল ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে। অর্থাৎ জলের মতো পরিষ্কার কার হাত ধরে কে লাভবান হয়েছে!
বিজেপি পাল্টা দাবি করছে, অমিত শাহের ছেলে যা ব্যবসা করেছেন আইন মেনে, নিয়ম মেনে! কোনও সুযোগ সুবিধা তাঁকে পাইয়ে দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেন, সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে যে দাবি করা হয়েছে, তা একেবারে ‘ভিত্তিহীন, অবমাননাকর, অপমানজনক’। তাঁর দাবি, জয় শাহ ও তাঁর বাবা অমিত শাহের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্যই ওই খবর প্রকাশ করা হয়েছে।