সিমলায় দশম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণ, হত্যা: পুলিশ লক-আপে অভিযুক্তের মৃত্যু, তুলকালাম, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ
সিমলা: কোটখাই গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় পুলিশ লক-আপে এক অভিযুক্তর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধল সিমলায়। সব খতিয়ে দেখে গোটা ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে পুলিশ লক-আপে দুই অভিযুক্ত—নেপালি নাগরিক সূরয ও ভারতীয় রাজেন্দ্রর মধ্যে হাতাহাতি হয়। অভিযোগ, তখন সূরযের মাথা দেওয়ালে ঠুকে দেয় রাজেন্দ্র। তাতেই তার মৃত্যু হয়।
আইজি (দক্ষিণ রেঞ্জ) জে এইচ জাইদি জানান, জেরায় সূরয ধর্ষণ ও হত্যার গোটা ঘটনা স্বীকার করে। সে এ-ও জানায়, মূল চক্রী ছিল রাজেন্দ্রই। পুলিশের দাবি, এই কথা জানতে পেরেই সম্ভবত ক্ষিপ্ত হয়ে সূরযকে হত্যা করে রাজেন্দ্র।
এদিকে, পুলিশ লক-আপে অভিযুক্তের মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধে কোটখাই থানার সামনে। ক্ষিপ্ত জনতা পুলিশ স্টেশন লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করে। পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হামলায় এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সমেত আহত হন চার পুলিশকর্মী।
বিক্ষোভকারীরা হাটকোটি-থেওগ হাইওয়ে ও হিন্দুস্তান-তিব্বত হাইওয়েতে অবরোধ করে। ফলে, কয়েক’শ মানুষ আটকে পড়েন। এর জেরে আহত সহকর্মীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
হেফাজতে বন্দিমৃত্যুর ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনীকে কোটখাইতে পাঠানো হয়।
গোটা ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে হিমাচল প্রদেশ হাইকোর্ট। গণধর্ষণ-খুন ও পরে পুলিশ হেফাজতে অভিযুক্তের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে বুধবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।
এদিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি সন্দীপ শর্মার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সিবিআই-কে নির্দেশ দিয়েছে অবিলম্বে এসপি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত শুরু করতে।
আদালত এদিন রাজ্য পুলিশের ডিজি সোমেশ গয়ালকে নির্দেশ দিয়েছে, এই মামলার নথি, হলফনামা, সাক্ষ্যপ্রমাণ সমেত গোটা ফাইল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দিতে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ জুলাই দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে যায় কোটখাইতে। অভিযোগ, কিশোরী যে গাড়ি করে যাচ্ছিল, তার চালক ছিল রাজেন্দ্র।
কিশোরীর দেহ দুদিন পর নিকটবর্তী হালিলার জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় রাজেন্দ্র ও সূরয সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাজ্য পুলিশের ডিজিপির কাছে রিপোর্ট তলব করেন রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রত।
কিন্তু, এই ঘটনার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বিস্তর প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যার জেরে চাপে পড়ে মামলার সিবিআই তদন্ত চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লেখেন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংহ।