বৈঠক মোদীর সঙ্গে, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে সরব মমতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা: বিজেপির লালবাজার অভিযান ঘিরে যখন রণক্ষেত্র কলকাতা, দিল্লিতে তখন নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে ফের একবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে সরব মুখ্যমন্ত্রী। মমতার দাবি, রাজ্যের প্রাপ্য টাকা মেটাচ্ছে না কেন্দ্র। বলেন, আমাকে ৪০ হাজার কোটি টাকা দিতে হচ্ছে। এভাবে কী করে কাজ করা সম্ভব। একইসঙ্গে, রাজ্যকে দেওয়া ঋণের কাঠামো বদলেরও দাবি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, রাজনীতি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। আলোচনা হয়েছে রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে। তিনি বলেন, এটা কোনও রাজনৈতিক বৈঠক ছিল না। আলোচনা শুধুমাত্র উন্নয়ন-কেন্দ্রীক ছিল। আমি প্রধানমন্ত্রীর সামনে বিভিন্ন ইস্যু উত্থাপন করেছি। এদিন মমতা জানান, রাজ্যে গঙ্গার ভাঙন থেকে শুরু করে বাংলাদেশে জলবণ্টন-- সবকিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছে। তিনি জানান, বৈঠকে ফরাক্কা ব্যারেজ উঠে এসেছে। মমতা জানান, বাংলাদেশে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের আমের ওপর ভারী রফতানি শুল্ক চাপানোর দাবি তুলেছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আবার, এ-ও অভিযোগ করেন, আত্রেয়ী নদীর ওপর বাংলাদেশ বাঁধ তৈকি করার ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরে জলসঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই মর্মে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাহায্যও চেয়েছেন। কিন্তু, সিপিএম-কংগ্রেস মমতা-মোদী বৈঠকের নেপথ্যে অন্য গন্ধ পাচ্ছে। বিরোধীদের অভিযোগ, নারদ নিয়ে কথা বলতেই মমতার দিল্লি-যাত্রা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক হলে একা যেতেন না। মন্ত্রীদের নিয়ে যেতেন। একা গিয়েছেন নারদ নিয়ে কথা বলতে। আবার সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, বিজেপি নবান্ন অভিযান করছে শিশুচোরদের বাঁচাতে। মমতা দিল্লিতে গিয়েছেন নারদা থেকে বাঁচতে। বিজেপির দাবি, মোদী-মমতা বৈঠকের মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। তৃণমূল আগেই সমঝোতার সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। বুধবারই পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, আমরা চিরকাল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছি। কোনও দিন মাথা নত করিনি। সেই লড়াই চালিয়ে যাব। বাম-কংগ্রেসের কোনও কর্মসূচি নেই। আমরা যখন বিজেপির বিরোধিতা করি, তখনও বলে কেন করছি। আবার এরাই শহিদ মিনারে বিজেপিকে হাত ধরে ডেকে এনেছিল। মমতা-মোদী বৈঠক যখনই হোক না কেন, রাজনৈতিক তরজা হতে বাধ্য। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না! আর বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিনই, মোদী-মমতা বৈঠক হওয়ায়, আগুনে যেন ঘি পড়ল।